ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি - ড্রাগন ফলের উপকারিতা
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি। আমাদের দেশে এখন অনেক
জায়গায় ড্রাগন ফল চাষ করা হয় এবং এর চাহিদা এখন অনেক বেশি। অনেকেই ড্রাগন ফল
চাষ করতে চান সেজন্য যারা ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান আজকের
আর্টিকেলটি তাদের জন্য। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি।
ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি এবং ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আজকে আলোচনা করা হবে তাই
যারা এ বিষয়ে জানতে চান তারা আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে
থাকুন।
পেজা সূচিপত্রঃ ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি - ড্রাগন ফলের উপকারিতা
ড্রাগন ফল গাছ
বাংলাদেশ এখন প্রচুর পরিমাণে ড্রাগন ফল চাষ করা হয় এবং এর জনপ্রিয়তা এখন
অনেক বেশি। ড্রাগন ফল গাছ দেখতে কাটা কাটা হয়ে থাকে। ড্রাগন গাছের সাথে
খুঁটি থাকে সেই খুঁটির সাথে ড্রাগন গাছ হয়ে থাকে। ড্রাগন ফলের গাছ সর্বপ্রথম
বাংলাদেশে ২০০৭ সালে ভিয়েতনাম থাইল্যান্ড ফ্লোরিডা থেকে নিয়ে আসা হয়।
ড্রাগন গাছ হলো ক্যাকটাস জাতীয় গাছ এই গাছের কোন পাতা হয়না।
ড্রাগন গাছ লম্বা এ ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার হয়ে থাকে। ড্রাগন ফল গাছ একসাথে
অনেকগুলো ফল দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন
ড্রাগন ফল গাছের জাত হলো বারি ড্রাগন ফল-১ বাউ ড্রাগন ফল - ১ ,বাউ
ড্রাগন ফল - ২, বাউ ড্রাগন ফল - ৩ এগুলো এখন অনেক জনপ্রিয় একটি
ফল। এই ফল কাঁচা থাকতে সবুজ থাকে এবং পাকলে ফলের খোসা লাল হয় এবং ভেতরেও এই
ফল পাকলে লাল হয়। ড্রাগন ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ বা ৭০০ গ্রাম হয়ে
থাকে।
ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি।ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি pdf
জমিতে পানি জমে না এমন জমি নির্বাচন করতে হবে এবং জমিতে ভালোভাবে
দুইটা চাষ দিয়ে নিতে হবে। এবং ভালোভাবে চাষ দিয়ে মই দিয়ে জমি সমান করে
নিতে হবে তারপরে জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে।
গর্ত তৈরি ও চারা রোপনঃ
জমি ভালোভাবে ঠিকঠাক করে নেওয়ার পরে চারা রোপণের আগে ১.৫ মিটার/১.৫ মিটার/১
মিটার আকারে গর্ত তৈরি করে তা রোদে খোলা রাখতে হবে। গর্ত তৈরির ২০/২৫ দিন
পর প্রতি গর্তে ২০-৩০ কেজি পচা গোবর, ২৫০ গ্রাম টি এসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি,
১৫০ গ্রাম জিপসাম এবং ৫০ গ্রাম জিংক সালফেট সার গর্তের মাটির সঙ্গে ভালো করে
মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে দিতে হবে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সেচ দিতে হবে। গর্ত
ভরাটের ১০-১৫ দিন পর প্রতি গর্তে ৫০ সেমি দূরত্বে চার টি করে চারা
সোজাভাবে মাঝখানে লাগাতে হবে। চারা রোপণের একমাস পর থেকে এক বছর পর্যন্ত প্রতি
গর্তে তিন মাস পর পর ১০০ গ্রাম করে ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।
চারা যখন বড় হয়ে যাবে তখন সাপোর্টের জন্য সিমেন্টের 4 মিটার লম্বা
খুঁটি পুঁতে দিতে হবে এবং গাছগুলো নরম রশি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। ড্রাগন
ফল গাছ খরা ও জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই আবহাওয়া একটু
শুষ্ক থাকলে ১০-১৫ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। আশা করছি বুঝতে পারছেন ড্রাগন
ফল চাষ পদ্ধতি। এখন নিচের অংশে আমরা জানবো ড্রাগন ফলের উপকারিতা কি কি তাহলে
চলুন জেনে নিন ড্রাগন ফলের উপকারিতা গুলো কি কি।
ড্রাগন ফলের উপকারিতা
উপরের অংশ পড়ে ইতিমধ্যে আপনার জানতে পেরেছেন ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি এখন
আপনাদের জানাবো ড্রাগন ফলের উপকারিতা কি কি ড্রাগন ফলের উপকারিতা আছে যা বলে
শেষ করা যাবে না। বাংলাদেশ এখন প্রচুর পরিমাণে ড্রাগন ফল চাষ করা হয় তাই এখন
সবাই এই ফল খেতে পারে। ড্রাগন ফলের কত উপকারিতা আছে জানলে অবাক হবেন।
- ড্রাগন ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়
-
ড্রাগন ফলে অনেক ম্যাগনেসিয়াম আছে তাই এই ফল খেলে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি
পায়
-
যাদের হার্টের সমস্যা আছে তারা যদি ড্রাগন ফল খাই তাহলে হার্টের সমস্যা
দূর হয়ে যায়।
-
ড্রাগন ফলে রয়েছে আয়রন তাই ড্রাগন ফল খেলে রক্ত চলাচল ভালো থাকে এবং
রক্ত বৃদ্ধি পায়।
-
ড্রাগন ফল চুল পড়া কমাতে অনেক উপকারী
-
ড্রাগন ফলে ভিটামিন সি আছে তাই ড্রাগন ফল খাওয়ার জন্য ক্যান্সারের ঝুঁকি
কমে যায়
-
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ড্রাগন ফলের উপকারিতা অনেক বেশি।
-
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ড্রাগন ফলের উপকারিতা রয়েছে
-
রক্ত বৃদ্ধি করতে ড্রাগন ফল অনেক উপকারী
ড্রাগন ফল আমাদের প্রায় বেশিরভাগ উপকারী করে থাকে তাই সবাই সাধ্যমত ড্রাগন
ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যদিও ড্রাগন ফলের দাম একটু বেশি তাও সবাই খাওয়ার
চেষ্টা করবেন এতে করে অনেক উপকৃত হতে পারবেন। আশা করছি বুঝতে পারছেন ড্রাগন
ফলের উপকারিতা গুলো কি কি।
টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি
ড্রাগন ফল কিভাবে চাষ করা যায় এক জমিতে চাষ করা এবং টবে চাষ করা ওপরের
অংশে আমরা জেনেছি ড্রাগন ফলের চাষ পদ্ধতি এখন আমরা জানবো টবে ড্রাগন ফল চাষ
পদ্ধতি কিভাবে টবে ড্রাগন ফল চাষ করবেন তো চলুন জেনে নেয়া যাক টবে ড্রাগন
ফল চাষ পদ্ধতি।
টবে চাষ করার জন্য ভাল জাতের ড্রাগন গাছ বাছাই করতে হবে এরপর ভালোভাবে
মাটি তৈরি করে নিতে হবে। জৈব সার মাটির সাথে মেশাতে হবে এবং মাটির
সাথে চাইলে বালু মেশাতে পারেন কারন এতে করে পানি জমে থাকবে না। আর যদি
ড্রাগন ফল গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকে তাহলে গাছটি মারা যাবে। মাটির সাথে
ইউরিয়া পটাশ ফসফেট টিএসপি জিংক অল্প পরিমান করে মিশিয়ে নেবেন তারপরে
টবে মাটি দিবেন এবং একটি টবে দুটি গাছ লাগাতে পারেন তবে দুটি গাছ লাগানোর
জন্য টব একটু বড় নিতে হবে। তারপরই সুন্দরভাবে ড্রাগন ফল গাছ লাগিয়ে
দিতে হবে। আশা করছি বুঝতে পারছেন টবে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি।
ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি পশ্চিমবঙ্গ
পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর পরিমাণ ড্রাগন ফল চাষ হয়ে থাকে। কারণ এই ফলের অনেক
চাহিদা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ড্রাগন চাষের জন্য মাটি উঁচু জায়গায় হতে
হবে এবং রোদ লাগে যেন এমন জায়গা হতে হবে। এবং গাছ লাগানোর আগে জমিতে
জৈব সার দেওয়া হয় এবং আমাদের মতোই সবকিছু দিয়ে জমি তৈরি করা হয়
তারপরে চারা লাগানো হয়ে থাকে।
ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা
ড্রাগন ফল থেকে যেমন অনেক টাকা ইনকাম করা যায় তেমনি এই ড্রাগন ফল অনেক
পরিচর্যা করতে হয় যেমন জৈব সার দিতে হয় রাসায়নিক সার দিতে হয় পানি সেচ
দিতে হয় গাছ বেড়ে ওঠার জন্য সুন্দর করে খুঁটি দিতে হয়। ড্রাগন
ফলের গাছ পানি জমে থাকলে যেমন মারা যায় আবার অতিরিক্ত খরা হলে মারা
যাই তাই যখন অতিরিক্ত খরা হয় তখন ড্রাগন ফল গাছের গোড়ায় কচুরিপানা
দিয়ে ঢেকে দিতে হয় এতে করে পানি সেচ দিলে অনেক দিন রস থাকে। আশা করি
বুঝতে পারছেন ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা কিভাবে করবেন।
ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি - ড্রাগন ফলের উপকারিতাঃ শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলের আলোচনা করা হলো ড্রাগন ফল গাছ ড্রাগন
ফল চাষ পদ্ধতি এবং ড্রাগন ফলের উপকারিতা ড্রাগন ফল গাছের পরিচর্যা কিভাবে
করবেন এসকল বিষয় আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে ড্রাগন ফল এবং ড্রাগন
ফল গাছ সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি এবং
ড্রাগন ফলের উপকারিতা আজকের এই আর্টিকেল পড়ার পরে আপনার যদি আরো কোন কিছু
জানার থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
এবং আমাদের ওয়েবসাইটে এরকম আরো অনেক বিষয় নিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করা
হয় তাই যারা এসকল বিষয় জানতে চান তারা আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন
এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ২৩৩৫৭
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url