রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা - রূপচর্চায় তুলসী পাতার ব্যবহার
তুলসী পাতার গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা অনেক বেশি। আপনি কি রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা ও রূপচর্চায় তুলসী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান? রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা জানতে আর্টিকেলটি টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
তুলসী গাছ বহু গুণাগুণ সমৃদ্ধ একটি ঔষধি গাছ। শুধু ঔষধি গাছ ই না। বর্তমানে রূপচর্চায় ব্যবহার হচ্ছে তুলসী পাতার রস। ঔষধি গাছ হিসেবে এবং রূপচর্চায় কতটা উপকারী এই তুলসী গাছ আসুন আমরা তা বিস্তারিত জেনে নিই।
পোস্ট সূচিপত্র : রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা - রূপচর্চায় তুলসী পাতার ব্যবহার
- রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা
- ব্রণ দূর করতে তুলসী পাতা
- তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
- তুলসী পাতার উপকারিতা
- তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
- ত্বকের যত্নে তুলসী পাতার ব্যবহার
- তুলসী পাতা ও মধুর উপকারিতা
রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা
আমরা বিভিন্ন সময়ে ত্বকে নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়ি। রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা সমন্ধে না জানার জন্য আমরা পাতার সঠিক ব্যবহার করতে পারি না। এ আর্টিকেল এর মাধ্যমে জেনে নিন রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা সম্বন্ধে বিস্তারিত সকল তথ্য। তুলসী পাতায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা ত্বকে কে উজ্জল, মসৃণ, সতেজ করতে সাহায্য করে।
১০-১৫ টি তুলসী পাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। তারপর বেটে মুখে লাগান। ১০ - ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। তুলসীপাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
মুলতানি মাটি, মধ, তুলসী পাতার রস একসঙ্গে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই
পেস্টি টি পেজটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস এর
সমস্যা কমিয়ে দিবে।
এছাড়া চন্দনের সাথে তুলসীপাতার রস মিশিয়ে সাথে কিছু গোলাপজল নিন এই মিশ্রণটি
মুখে এবং গলায় লাগান। যদি ব্রণের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অচিরেই সমস্যা দূর করতে
পারবেন। পেয়ে যাবেন একটা দাগহীন, মসৃণ ও সতেজ উজ্জ্বল ত্বক।
ব্রণ দূর করতে তুলসী পাতা
মুখের দাগ, রোদে পোড়া ভাব, মেসতা, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস ইত্যাদি সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন সমস্যা হচ্ছে ব্রণের সমস্যা। দেখা যায় অনেক কষ্ট করে ব্রণ ভালো করলে আবার মুখের অন্যদিক থেকে আরো ব্রণ উঠে। রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা এই আর্টিকেলের এ পর্যায়ে আপনারা জানতে পারবেন ব্রণ দূর করতে তুলসী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ বাদল শব্দের অর্থ কি - বাদল নামের অর্থ কি
কয়েকটি তুলসী পাতা নিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে বেটে সেইসাথে নিমপাতা বাটা
এবং চন্দন একসাথে মিক্স করে তার সাথে সামান্য পরিমাণ গোলাপজল নিয়ে একটি
পেস্ট তৈরি করুন। মুখে এপ্লাই করুন। সপ্তাহে.৩ - ৪ বার ব্যবহার করুন দেখবেন খুব
তাড়াতাড়ি ব্রণের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
ব্রণ চলে গেলেও থেকে যায় ব্রণের দাগ। ব্রণের দাগ বসে গেলে সেটা রিমুভ করা অনেক
সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। শুধু ব্রণেরদাগ ই না থেকে যায় ব্রণের গর্ত
গুলো। ব্রণের দাগ রিমুভ করার জন্য তুলসী পাতার রসের সাথে মুলতানি মাটি,
চন্দন গুড়া, লেবুর রস একসাথে মিক্স করে একটি পেস্ট তৈরি করুন। সপ্তাহে চারদিন
ব্যবহার করুন। এক মাসের মধ্যে আপনি আপনার ত্বকে পার্থক্য বুঝতে পারবে না ।
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
তুলসী পাতার অনেক উপকার থাকার বিপরীতে রয়েছে কিছু ক্ষতিকর দিক। না জানলে সমস্যায় পড়তে পারেন আপনিও। রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা ও রূপচর্চায় তুলসী পাতার ব্যবহার এয়ারটেলে এবারে জানাবো তুলসী পাতার কিছু ক্ষতিকর দিক।
গর্ভাবস্থায় তুলসী পাতা খাওয়ার প্রয়োজন পড়লে অল্প পরিমাণে খেলে কোন সমস্যা
হবে না। কিন্তু অতিরিক্ত খেলে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পরে। তাই তুলসী পাতা
গর্ভাবস্থায় না খাওয়াই ভালো। এছাড়া অতিরিক্ত তুলসী পাতার রস খেলে বন্ধ্যত্বের
সৃষ্টি হতে পারে তাই খেয়াল রেখে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে।
তুলসী পাতায় রয়েছে অতিরিক্ত পটাশিয়াম। যার জন্য অতিরিক্ত তুলসী পাতার রস খেলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে পরিমিত পরিমাণে তুলসীপাতার রস খাওয়া যেতে পারে।
তুলসী পাতার উপকারিতা
তুলসী পাতা বহুগুণ সমৃদ্ধ একটি পাতা। এর গুনাবলী বলে শেষ করা যাবে না। রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা বা ব্যবহার থাকা সত্ত্বেও এর ঔষধি গুণাবলীতে ভরপুর। আসুন জেনে নেই আমাদের শরীরে তুলসী পাতা কিভাবে উপকার করে।
আমরা সবাই কম বেশি জানি তুলসী পাতার রস ও মধু একসাথে মিশিয়ে খেলে সর্দি
কাশি ভালো হতে সাহায্য করে। সাধারণ রোগের পাশাপাশি অনেক জটিল রোগের সমাধান
দেয় এই তুলসী পাতা। যেমন আমাদের শরীরের প্রয়োজন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তুলসী পাতার রস বিশেষভাবে কার্যকর যদি নিয়মিত আপনি খেতে
পারেন।
আরো পড়ুনঃ জীবন বীমা প্রিমিয়াম কি - জীবন বীমা প্রিমিয়াম কি হিসাব
বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে তুলসী পাতায় রয়েছে অসাধারণ রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা। যা ফুসফুসের সমস্যা, ব্রংকাইটিস ইত্যাদি বড় বড় রোগ সৃষ্টি হতে
বাধা দেয়।
আমাদের অনেকের দেখা যায় মুখের ভিতরের মাড়ির সমস্যা, মুখের
দুর্গন্ধের সমস্যা, মুখের ভিতর ঘা ইত্যাদি। তুলসী পাতার পেস্ট বানিয়ে
ব্যবহার করলে এসব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মাথাব্যথা কমাতে তুলসী পাতার রস খাওয়া যেতে পারে। তুলসী পাতার রস চা এর
সাথে মিশিয়ে দিনে দু'বার পান করলে মাথা যন্ত্রণা থেকে নিমিষেই রক্ষা পাওয়া
যায়।
গলা ব্যথা কমাতে তুলসী পাতার রস এর জুড়ি মেলা ভার। কয়েকটি তুলসী পাতা গরম
পানিতে ফুটিয়ে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পানি খেলে গলা ব্যথার সাথে সাথে সেরে যায়।
দিনদিন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিও প্রটেক্টিভ
উপাদান যেটা ক্যান্সার তৈরি কোষগুলোকে একেবারেই মেরে ফেলে। তুলসী পাতার রসে থাকা
ফাইটোকেমিক্যাল, এপ্রিল রেটিনাল ইত্যাদি ক্যান্সার বিরুদ্ধে কাজ করতে অনেক
সাহায্য করে। ব্রেস্ট ক্যান্সার রোধ করতেও তুলসীপাতা দারুন কাজ করে।
তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা বা রূপচর্চায় তুলসী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানেনা জানিনা তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম এবং তুলসী পাতা খেলে কি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতিদিন তুলসী পাতার চা পান করলে আমাদের শুধু ত্বকের উন্নতিই ঘটে না এগুলো বার্ধক্য প্রক্রিয়ার গতিও কমিয়ে দেয়।
যারা গ্রাম অঞ্চলে বাস করেন তারা শুধু জানেন সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতা বেটে পাতার
রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে সর্দি কাশির উপশম হবে। এছাড়াও তুলসী
পাতার অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। যেমন
কয়েকটি তুলসী পাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে পিষে মুখে লাগালে ব্রণ এবং
বলিরেখা থেকে থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
তুলসী গাছের বীজ পানিতে ভিজিয়ে শরবত করে খেলে জ্বালা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি
পাওয়া যায় । এছাড়াও সর্দি কাশি উপশমের তুলসির পাতা বেশ কার্যকর। তুলসী পাতার
রস এবং আদার রস একসাথে মধু দিয়ে খেলে কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
তুলসী পাতা এবং ফিটকিরি একসাথে ঘা বা ক্ষত বা পোড়া স্থানে লাগালে ঘা পোড়া
ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
আরো পড়ুনঃ নবী (সাঃ) কতবার হজ্জ করেছেন?
এছাড়াও আপনি যদি সকাল বেলা খালি পেটে তুলসী পাতার রস খান তাহলে
খাওয়ার রুচি বাড়বে। ডায়রিয়া সমস্যা উপশমে ১০ থেকে ১২ টি পাতা পিষে রস করে
খেয়ে ফেলুন।
জ্বর হলে পানির মধ্যে তুলসীপাতা, গোলমরিচ, মিশ্রি মিশিয়ে ভালো করে পানি সিদ্ধ করুন। এ ৩ টি উপাদান একসাথে মিশিয়ে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করুন। দিনের মধ্যে ৩ থেকে ৪ বার ঐ বড়ি জলের সঙ্গে মিশিয়ে খান দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি জ্বর সেরে যাবে।
ত্বকের যত্নে তুলসী পাতার ব্যবহার
রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা এই আর্টিকেলটিতে এবারে আমরা জানবো ত্বকের যত্নে তুলসী পাতার ব্যবহার। আমরা জানি প্রাচীনকাল থেকেই ত্বকের যত্নে তুলসী পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে এর গুরুত্ব বেড়ে গেছে বহুগুনে। যেমন ব্রন, বলিরেখা, বয়সের ছাপ কমাতে তুলসী পাতার ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়ে চলেছে।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url