বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় - নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয়

আসসালামু আলাইকুম! এই পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় ও শিশুর বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় কি সে সম্পর্কে। নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় কি সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। আপনি যদি নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সম্পর্কে না জানেন তাহলে পোস্টটি আপনার জন্য। 

পোস্টটি পড়লে নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় কি তার ধারণা পাবেন। এছাড়াও আরো যেসব বিষয়ে জানগে পারবেন তা হলো  বুকের কফ বের করার সিরাপ ও বুকে কফ জমলে কি ঔষধ খাবো এবং বুকে ঠান্ডা লাগার কারণ সম্পর্কে। পাশাপাশি বুকে ঠান্ডা লাগার লক্ষণ সম্পর্কেও ধারণা পাবেন। তো যারা নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সহ অন্যান্য বিষয়ে ধারণা নিতে চান তাহলে অবশ্যই পোস্টটি আপনার জন্য উপকারী হবে। তো চলুন নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কিত আজকের পোস্টটি শুরু করি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ 

বুকে ঠান্ডা লাগার লক্ষণ

সাধারণত শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক লোক পর্যন্ত অনেকের মধ্যে বুকের মধ্যে ঠান্ডা লাগে। এর ফলে বুকে কফ জমে যায়। যার থেকে শুরু হয় নানা ধরনের সমস্যা। অনেকেই বুকের মধ্যে ঠান্ডা লাগলে বুঝতে পারে না বা বুকে ঠান্ডা লাগার লক্ষণ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই। সাধারণত বুকে ঠান্ডা লাগার লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি হলো বুকের কফ জমে যায়। যার থেকে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। এর ফলে মানুষের নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এছাড়াও আরো যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে তা হলো বুকে ভারি হওয়ার মতো অনুভূতি, কফ সৃষ্টিকারী কাশি, গলা ব্যথা, ইত্যাদি। 
এসব কারণে শান্তি মতো ঘুমানো যায় না। তাছাড়া কাশি আসলে তার সাথে কফ বের হয়। অনেক সময় কাশি আসলে ব্যথা অনুভব হয়। তাই এ সমস্যা গুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার দেখানো উচিত। নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন বুকে ঠান্ডা লাগার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে। এছাড়াও বুকে ঠান্ডা লাগার কারণ ও নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সম্পর্কে জানতে পরবর্তী প্যারা গুলো অনুসরণ করুন।  

বুকে ঠান্ডা লাগার কারণ

বুকে ঠান্ডা লাগলে নানান সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে শীতলালে এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক লোক পর্যন্ত সবার মধ্যে এ সমস্যা দেখা দেয়। এখন আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে যে বুকে ঠান্ডা লাগার কারণ কি? বুকে ঠান্ডা লাগার কারণ অনেক রয়েছে। নানা ভাবে বুকে ঠান্ডা লাগতে পারে। সর্দি-জ্বর সংক্রমিত থাকা অবস্থায় নাসারন্ধ্রের ভেতরে মিউকাস লাইনিং অতিক্রম করে প্রবেশ করে সংক্রমণকারী জীবাণু। এর ফলে নাাসরন্ধ্রের ভেতর কফ জমে, যার কারণে বুকে ঠান্ডা লাগে। 

এছাড়া শীতের প্রকোপ শরীরের ওপর বেশিক্ষণ পড়লে সর্দি থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে বুকের ওপর যেতে পারে। যার ফলে বুকে ঠান্ডা লাগে। এমনকি অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করার ফলেও বুকে ঠান্ডা লাগে। যার থেকে বুকে কফ জমে যায়। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট সহ কাশি ও অন্যান্য সমস্যা। বিশেষ করে নবজাতকের এ সমস্যা বেশি হয়। তাই নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সম্পর্কে জানতে পরের অংশটি পড়ুন। 

বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় - নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয়

শুধু বড়রা নয়, তাদের সঙ্গে সঙ্গে ছোটরাও শীতকালে সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হয়। ফলে তারা ছটফট করতে শুরু করে। নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে এই বিষয়টি কে অনেক বাবা মা ছোট হিসেবে দেখে। যেহেতু তারা নবজাতক তাই এদের কোনো কিছুকেই নরমাল হিসেবে নেওয়া উচিত। তাছাড়া নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় না জানার কারণে অনেক মা বাবা সুষ্ঠু পরিচর্যা করতে পারে না এ সমস্যার। নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় গুলো যদি না জেনে থাকেন তাহলে আপনি আপনার বাচ্চার সমস্যা কে দূর করতে পারবেন না। চলুন জেনে নিই নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
  • ভাপ নেওয়াঃ নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে এই পদ্ধতিটি দ্রুত কাজ করে। এটি নাসারন্ধ্রে আদ্রতা বজায় রাখে ও শ্লেষ্মার শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। যার ফলে বায়ু চলাচলের পথকে অবরুদ্ধ করতে পারে। এতে বুকের মধ্যে জমে থাকা কফ অনেকটা কমে। যার কারণে নবজাতক স্বস্তি অনুভব করে।
  • জোয়ান ও রসুনঃ একটা পাত্রে জোয়ান ও রসুনকে গরম করুন। এগুলো হালকা গরম হয়ে এলে একটা কাপড়ে বা পুটলিতে বেধে সেটা বাচ্চার বুকে লাগান। এতে বুকের মধ্যে জমে থাকা কফ নরম হয় ও সর্দি কাশি কমে। ফলে তার মধ্যে স্বস্তি আসে।
  • স্তন দুধঃ আপনার বাচ্চা যদি ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে হয় তাহলে তাকে স্তনের দুধ খাওয়ান। কেননা এটি আপনার নবজাতক কে হাইড্রেট রাখে। স্তন দুধ মধ্যস্থ অ্যান্টিবডিগুলি সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ফলে এ সমস্যা হতে মুক্তি পাওয়া যায়। 
  • শীতের কাপড়ঃ যদি নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগে তাহলে তাকে সবসময় শীতের কাপড় পড়িয়ে রাখুন। কেননা যদি ঠান্ডা ভাব বুকে বা তার শরীরে লাগে তাহলে এ সমস্যা আরো বেড়ে যাবে। তাই যথাসম্ভব তাকে গরম কাপড় পড়ান।
  • মাথা উঁচু রাখাঃ এর মাধ্যমে নাক দিয়ে শ্লেষ্মা নিষ্কাশনে সহায়তা করে ও বুক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় বা ঘুমের মধ্যে সর্বদা তার মাথাকে উঁচু করে রাখুন।
  • সরিষার তেলঃ কালো জিরা ও রসুনের সাথে সরিষার তেল মিশিয়ে সে তেল বুকে মালিশ করুন। এর ফলে বুকের ঠান্ডা কমে। 
উপরের দেয়া পন্থা গুলো ভালো ভাবে পড়লে নিশ্চয়ই আপনার নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সম্পর্কে ধারণা হয়ে যাবে। নবজাতকের বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় গুলো অবলম্বন করে এ থেকে মুক্তি পেতে পারেন ইন শা আল্লাহ। পাশাপাশি শিশুর বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সম্পর্কে জানতে পরের পাঠটি পড়ে নিন।

শিশুর বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয়

শীতকালে বয়স্ক লোকের পাশাপাশি শিশুর বুকেও ঠান্ডা লাগে। তাই প্রত্যেক মা বাবাকে শিশুর বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। শিশুর বুকে ঠান্ডা লাগলে করণীয় বা যা করতে পারেন তা হলো- 
  • গরম জলঃ গরম জলে গোসল করাতে পারেন যদি বুকে ঠান্ডা লাগে। এতে বুকের কফ নরম হয়ে বের হয়ে যায়। পাশাপাশি ঠান্ডা জল না খাওয়ায় গরম জল পান করান।
  • তুলসিপাতা ও মধুঃ তুলসি পাতার রস ও মধু মিশিয়ে শিশুকে ২ দিন খাওয়ান। এতে বুকের ঠান্ডা জনিত সমস্যা অনেক কমে আসবে। এতে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যা শিশুকে দ্রুত এ সমস্যা হতে মুক্তি দিতে পারবে।
  • হিউমিডিফায়ারঃ বুকের ভিতর কফ জমলে ডাক্তাররা সেটা তরল রাখার চেষ্টা করেন। এ কারণেই অনেক ডাক্তার হিউমিডিফায়ার ব্যবহারের কথা বলেন। এটি ব্যবহারের ফলে ঘর অনেকটা গরম অবস্থায় থাকে ও শিশুকে আর্দ্রতায় রাখে।
  • এসেনসিয়াল অয়েলঃ এর ভাপ শিশুর শ্বাসনালী থেকে কফ বের করেআনতে সহায়তা করে। পাশাপাশি শিশুর বুককেও পরিষ্কার করে। এটি বুকে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাই শিশুর বুকে ঠান্ডা লাগলে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

বুকের কফ বের করার সিরাপ - বুকে কফ জমলে কি ঔষধ খাবো

সাধারণত শীতকালে সবারই ঠান্ডা জনিত সমস্যা হয়। ফলে বুকে কফ জমে অনেকের। এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে শিশুর। যার কারণে বিভিন্ন শিশু হাসপাতালে শীতে বাচ্চা রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। এর ফলে অনেকের মনে প্রশ্ন আসে যে বুকের কফ বের করার সিরাপ ও বুকে কফ জমলে কি ঔষধ খাবো সে সম্পর্কে জানার। বুকের কফ বের করার সিরাপ হলো হারবাল সিরাপ। এটি বুকের ভেতর জমে থাকা কফ বের করতে ভালো কাজ করে। এটি শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক সবাই খেতে পারে। 

১২ বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য দিনে ২ বার করে ১-২ চা চামচ। আর প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য দিনে ২-৩ বার ও ২-৩ চা চামচ। তবে এটি অতিরিক্ত খেলে বমি ও পাতলা পায়খানা হতে পারে। পাশাপাশি লেবু ও মধুর সিরাপ সংমিশ্রণ করে সিরাপ বানিয়ে খেতে পারেন। এক চামচ মধুর সাথে লেবুর রস ও দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে একটি সিরাপ বানিয়ে সেটি দিনে ২ বার করে কয়েক দিন খেলে বুকের কফ কমে। 
আর যারা চিন্তিত রয়েছেন যে বুকে কফ জমলে কি ঔষধ খাবো তাদের জন্য হলুদ একটি উপকারী উপাদান। হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামক উপাদান যা কফ দূর করতে সাহায্য করে। হালকা গরম পানিতে নুন ও হলুদ গুড়ো মিশিয়ে গলগলা করলে কয়েকদিন, বুকের কফ কমে আসে। পাশাপাশি আদার পানিও খেতে পারেন। আদা ও পানি একসাথে ফুটিয়ে সে পানি ও আদার নির্যাস পান করলে এ থেকে মুক্তি পেতে পারেন ইন শা আল্লাহ। আর অতিরিক্ত কফ জমলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

আশা করি আজকের পোস্ট টি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। পোস্ট টি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। প্রতিদিন এমন ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন৷ এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। 18801

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url