আম খেলে কি উপকার হয় | আম খেলে কি ক্ষতি হয়

আম খেলে কি উপকার হয় বা আম খেলে কি ক্ষতি হয় এই নিয়ে আমাদের অনেকের মাঝে অনেক প্রশ্ন থেকে যায়। তবে আমাদের সকলের জানা প্রয়োজন আম খেলে কি উপকার হয় আর আম খেলে কি ক্ষতি হয়। প্রত্যেকটি ফলের কিছু উপকার ও অপকার থেকে যায়। আমাদের উচিত জেনে বুঝে সেগুলো খাওয়া।


পোস্ট সূচিপত্রঃ


আম খেলে কি উপকার হয় | আম খেলে কি ক্ষতি হয়

আম খেলে কি উপকার হয় আবার আম খেলে কি ক্ষতি হয় এই বিষয়ে আমাদের সকলের উচিত জেনে রাখা। আম খেলে কি উপকার হয় আর আম খেলে কি ক্ষতি হয় এই বিষয় নিয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

আম খেলে কি উপকার হয়

হজমে সহায়কঃ

আম হলো একটি প্রিবায়োটিক ফল। প্রতিদিন নিয়মিয় আম খেলে হজম ক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে।

ঘুমে সহায়কঃ

আমে থাকে ট্রিপটোফ্যান, ম্যাগনেসিয়াম ও মেলাটোনিন যা আমাদের ঘুমের জন্য খুব কাজে দেয়। এর জন্য আম খেলে অনিদ্রা দূর হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ

আম হলো একটি সুপারফুড নামে পরিচিত ফল। এই ফলে আছে প্রায় ২০ এর বেশি ভিটামিন ও মিনারেল এবং এন্টিওক্সিডেন্ট। জানা যায় আম খেলে কোলন ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। 

আরও পড়ুনঃ পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম কয়টি

এছাড়াও প্রস্টেট ক্যান্সার, লিউকেমিয়া এবং অন্যান্য ক্যান্সার প্রতিরোধ করার মত উপাদান রয়েছে।

দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়ঃ

আম হলো ভিটামিন এ, আলফা ক্যারোটিন এবং বিটা ক্যারোটিন এর খুব ভালো একটি উৎস।  নিয়মিত প্রিরিমিত আম খেলে দেহের চাহিদার প্রায় ৮% ভিটামিন পূরণ হয়। এর জন্য মানুষের দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।

ত্বক ও চুলের যত্নঃ

আমের মধ্যে আছে ভিটামিন এ, সি ও ই।  আর এই সকল ভিটামিন ত্বক ও চুল ভালো রাখে।

হৃদরোগ এর ঝঁকি কমাতেঃ

আমের মধ্যে অধিক পরিমানে আছে পটাশিয়াম এবং ফাইবার। যা শরীরের গ্লুকোজ, কোলেস্টেরল, ওজন নিয়ন্ত্রের সাথে সাথে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে হৃদপিণ্ডের সার্বিক সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।

মনোযোগ ও স্মৃতির জন্যঃ

কোন কিছু মনে থাকছেনা এমন হলে আম খেতে পারেন। আম খেলে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে। তাই আমকে মেমোরি বুস্টারও বলা হয়।

রোগ-প্রতিরোধঃ

আম খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধ শক্তি বেড়ে যাবে। কারণ এতে আছে ক্যারোটেনয়েড সেই সাথে আছে ভিটামিন সি যা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

হিট স্ট্রোক ঠেকায়ঃ

প্রচন্ড গড়মের মধ্যে অনেকেরই হিট স্ট্রোক হয়ে থাকে। কাজেই এই সময় আম খেতে পারেন। কারণ এই আম খেলে আমাদের পেট ঠান্ডা থাকে এবং শরীরের অতিরিক্ত গড়ম হওয়া থেকে রক্ষা করে।

ভালোবাসার সৃষ্টিঃ

গবেষকদের মতে আম খেলে হৃদয়ে ভালোবাসার জন্ম হয়। এর জন্য আমকে লাভ ফ্রুট বলা হয়ে থাকে। কাজেই প্রিয়জনকে প্রচুর পরিমাণ আম উপহার দিতেই পারেন।

আরও পড়ুনঃ বাচ্চা পেটে আসলে কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়

আম খেলে কি উপকার হয় তা আমরা জানলাম কিন্তু আপনি জানেন কি আম খেলে কি ক্ষতি হয়? তাহলে এবার জানা যাক আম খেলে কি ক্ষতি হয়।


আম খেলে কি ক্ষতি হয়

যারা ওবেসিটির সমস্যায় আছেন এবং ওজন কমাতে চেষ্টা করছেন তাদের জন্য আম হতে পারে ক্ষতিকারক।

ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য আম হতে পারে বিপদজনক। তাই নিয়ম মেনে আম খেতে হবে।

কৃত্রিমভাবে আম পাকাতে ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের রাসায়নিক। যার প্রভাবে হিতে পারে নানা সমস্যা। শরীরে ক্লান্তি আশা, অবশ বোধ করা এছাড়াও হতে পারে ত্বকের নানা সমস্যা।

এদিকে অতিরিক্ত আম খেলে হতে পারে হজমের সমস্যা। নিয়মিত বেশি বেশি আম খেলে তাই হতে পারে হজমের সমস্যা। কাজেই নিয়ম করে বেশি পরিমাণে আম খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবেনা।

আবার আম খাবার সময় একটু অসচেতনতা ডেকে আনতে পারে ত্বকের জন্য বিশাল ক্ষতির কারণ। আম খাওয়ার সময় আমের আঠা মুখে লেগে থাকলে চুলকানি হতে পারে।

বাতের ব্যথায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য আম এড়িয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তাদের জন্য আম খাওয়ায় বিষয়টি নিয়ন্ত্রে রাখাই ভালো। কারণ এদের আম খেকে চোখ জ্বলা, হাঁচি, পেটে ব্যথা, ঠাণ্ডা লাগা সহ অনেক সমস্যা হতে পারে।

আশা করছি আম খেলে কি উপকার হয় আর আম খেলে কি ক্ষতি হয় এই বিষয় নিয়ে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন।


আম খেলে কি ওজন বাড়ে | আম খেলে কি মোটা হয়

আম খেলে কি ওজন বাড়ে বা আম খেলে কি মোটা হয় এই নিয়ে আপনাদের অনেকের মাঝেই জিজ্ঞাসার শেষ নেই। কৌতুহল বসত আমরা অনেকেই জানতে চাই আম খেলে কি ওজন বাড়ে আবার আম খেলে কি মোটা হয়। তবে এই সকল বিষয় জেনে রাখা ভালো।

আম খেলে কি ওজন বাড়ে

আমে যথেষ্ট পরিমানে শর্করা আছে তাই যারা ডায়াবেটিস এর রোগী তাদের জন্য আম খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরী।

মূলত আমের মধ্যে ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই ওজন বাড়াতে না চাইলে আপনি যে পরিমাণ আমের মাধ্যমে ক্যালরি গ্রহণ করবেন অন্য তালিকা থেকে সেই পরিমান ক্যালরি বর্জন করুন। তাহলে ওজন বাড়ার সম্ভবনা কম থাকবে।

আরও পড়ুনঃ টুইটার কি - কিভাবে টুইটার ব্যবহার করতে হয়

মূলত বিষেষজ্ঞদের দাবি আমের সরবত, আইসক্রিম,  চাটনি ইত্যাদি খেলে ওজন বাড়ে। এক্ষেত্রে তাজা আম খেলে এই সম্ভবনা কম।

আম খেলে কি মোটা হয়

আমের মধ্যে দেখা গেছে ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম আবার ক্লোরেস্টেরলও থাকে সামান্য পরিমানে তাই আম খেলে মোটা হওয়ার সম্ভবনাও অনেক কম।

তবে অবশ্যই পরিমিত আম খেলে আপনি মোটিয়ে যাবার হাত থেকে রক্ষা পাবেন।


আম খেলে ঘুম আসে কেন | পাকা আম খেলে ঘুম আসে কেন

আম খেলে ঘুম আসে কেন বা পাকা আম খেলে ঘুম আসে কেন এই বিষয়ে জানা যাক পোস্টের এই পর্যায়ে। পাকা আমে থাকে প্রচুর পরিমানে ট্রিপটোফ্যান। মূলত এটিই আম খেলে ঘুমের প্রধান কারণ। এছাড়াও আমে থাকা কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল থাকে আমে তাই আম শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর সেই ইনসুলিন ট্রিপটোফ্যানকে মস্তিষ্কে পাঠাতে সাহায্য করে। ফলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপাদান সেরোটোনিন পায় মস্তিষ্ক। আর মাথা ঠান্ডা থাকায় শরীরও নিস্তেজ হয়ে পরে তাই ঘুম বেশি পায়। কাজেই যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে তারা রাতে আম খেতে পারেন।


আম খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে | আম খেলে কি গ্যাস হয়

আম খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে বা আম খেলে কি গ্যাস হয়। এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় হ্যা আম খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে। কাজেই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরিমানমত আম খাওয়া যেতে পারে। তবে এই আম রাতে না খেয়ে সকালে বা দুপুরে খাওয়া ভালো তাহলে এর ক্যালরি দিনের পরিশ্রমের সাথে সাথে শেষ হয়ে যাবে।

এছাড়াও আমে থাকে প্রচুর পরিমানে আশ থাকে। একারণে আম বিভিন্ন ডাইজেস্টিভ রোগ যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি, গ্যাস্টিক ইত্যাদি রোগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আমাদের শেষ কথা

আম খেলে কি উপকার হয় বা আম খেলে কি ক্ষতি হয় এই বিষয় নিয়ে আমরা উপরে আলোচনা করেছি। আম খেলে কি উপকার হয় তা যেমন জেনেছি সেই সাথে আম খেলে কি ক্ষতি হয় তাও জেনেছি। কাজেই নিয়ম মেনে পরিমিত আম খেলে শরীর ও মন দুই ই ভালো থাকবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url