ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম | ইসলামিক প্রেম

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম ভালোবাসা নিয়ে অনেকেই জানতে চান। আসলে আমরা মানুষ প্রতিনিয়ত কারও না কারও প্রেমে পরি। সাধারণত বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি আমাদের একটি ভালোলাগা ও আকর্ষণ কাজ করে। এ থেকেই আমারা প্রেমে পড়ি। তাই আমাদের জানা জরুরী ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম ভালোবাসা কিভাবে দেখা হয়েছে।


পোস্ট সূচিপত্রঃ

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম | ইসলামিক প্রেম

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম ভালোবাসা বা ইসলামি প্রেম হলো একটি বিষেশ নিয়ামত। সৃষ্টিগতভাবেই মানুষের মাঝে ভালোবাসা রয়েছে। আল্লাহ মানুষকে তার সঙ্গি দিয়েই সৃষ্টি করেছেন যেন তাদের একে অপরের আকর্ষণ থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। কুরআনে আছে আল্লাহর এক বিষেশ নিদর্শন হলো তিনি আমাদের মাঝেই আমাদের স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন। যাতে আমরা তাদের কাছে শান্তি পাই এবং পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি হয়। নিশ্চয়ই এর মাঝে নিদর্শন আছে তাদের যারা চিন্তাভাবনা করে। ( সুরা রুম )

আরও পড়ুনঃ মৃত ব্যক্তির দাফনের নিয়ম

কাজেই একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করাই স্বাভাবিক।  তবে সেই ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের বিষয়টা মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। কেননা আল্লাহর জন্য গড়ে তোলা ভালোবাসা স্থায়ী হয়। এটাই প্রকৃত ভালোবাসা। এখানে পবিত্রতা ও স্বর্গীয় সুখ থাকে৷ এই ভালোবাসা পরিপূর্ণরুপে পাওয়া যায় আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ভালোবাসায়। মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান, ও অন্য আত্নীয়স্বজন ও মুমিন ব্যক্তিদের ভালোবাসায়। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম ভালোবাসা বা ইসলামিক প্রেম আসলে এটাই।

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম করা কি জায়েজ

ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম করা কি জায়েজ এই বিষয়ে লিখতে গিয়ে জানা যায় ইসলামে প্রেম করা জায়েজ। তবে সেই প্রেম হতে হবে ইসলামিক প্রেম।

যাদের সাথে আমাদের বৈধ সম্পর্ক আছে তাঁদের সাথেই ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম করা কি জায়েজ?  হ্যা অবশ্যই তাদের সাথে প্রেম করাই জায়েজ।

তবে আমাদের চারিদিকে কথিত যে প্রেম ভালোবাসার নামে অবৈধ ও অনৈতিক সম্পর্কের ছড়াছড়ি আমরা দেখি এগুলো ইসলামে কোনভাবেই জায়েজ নয়। অপরদিকে শুধু যে ভালোবাসায় থাকে আবেগ আর কুপ্রবৃত্তির চাহিদা মেটানো সেই ভালোবাসা বা প্রেম কোনভাবেই ইসলাম বা সমাজে জায়েজ নয়। আর এই ভালোবাসায় কখনও স্নিগ্ধতা, পরিত্রতা বা সুখ কিছুই থাকেনা। তাই এই ভালোবাসা হয় ক্ষণস্থায়ী।

বিয়ে করার উদ্দেশ্যে প্রেম করা যাবে?

বিয়ে করার উদ্দেশ্যে প্রেম করা যাবে কি এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় না। আগে বিয়ে করে তার পরে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। কেননা ইসলামে পরপুরুষ বা পরনারীর সাথে কোন প্রকার সম্পর্কে জড়ানো জায়েজ করেনি। কাজেই যদি আপনি ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বিয়ে করার উদ্দেশ্যে প্রেন করা যাবে না। সেক্ষেত্রে আপনার কাউকে ভালো লাগলে সরাসরি বিয়ে করে তার পরে প্রেম করতেই পারেন।

ভালোবাসা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

ভালোবাসা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? ভালোবাসা সম্পর্কে ইসলাম সবসময় সহনশীল আছে। আল্লাহ নিজেই ভালোবাসতে পছন্দ করেন। তবে সেই প্রেম ভালোবাসা যদি ইসলামের যে সকল বিধি নিষেধ আছে সেইগুলো মেনে হয় তাহলেই।  আল্লাহ মানুষকে ভালোবাসার জন্যই জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন।

আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের প্রতি ভালোবাসা থাকা আমাদের জন্য আবশ্যক। কাজেই ভালোবাসা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা প্রকাশ হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ইসলামিক অর্থনীতি

কিন্তু ইসলামের বিধিনিষেধ অমান্য করে আমাদের সমাজে যেসকল প্রেম ভালোবাসা রয়েছে তা ইসলাম পছন্দ করেনা বা মেনেও নেয়না। ভালোবাসা সম্পর্কে ইসলাম সবসময় ইতিবাচক তবে অবশ্যই সেই ভালোবাসা হতে হবে বৈধ ভালোবাসা। যেমন বাবা মার সাথে ভালোবাসা, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা, সন্তানের,  আত্নীয়ের, মুমিনদের প্রতি ভালোবাসা আল্লাহ বেশি পছন্দ করেন।

হারাম সম্পর্কে থাকা অবস্থায় ইবাদত ও দোয়া কবুল হবে কি?

হারাম সম্পর্কে থাকা অবস্থায় ইবাদত ও দোয়া কবুল হবে কি? এই বিষয়ে অনেকেই জানতে চান। তাহলে জানা যাক ইসলাম এ বিষয়ে কি বলে। আল্লাহ অবশ্যই হালাল সম্পর্ক এর মাধ্যমে বৈধভাবে বিয়ের মাধ্যমে নিজেদের ভালোবাসা প্রকাশ ও জৈবিক চাহিদা মেটানোর সুযোগ করে দিয়েছেন।

তবে একটি বিষয় জানতে হবে আমরা হারাম সম্পর্কে থাকা এটা গুনাহের কাজ তবু এই অবস্থাতেও আমরা যদি আল্লাহর ইবাদত করি। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, কুরআন তিলাওয়াত, দান সদগা ইত্যাদি ইবাদাতের জন্য বরাদ্য সওয়াব দিবেন। কাজেই হারাম সম্পর্কে থাকা অবস্থায় ইবাদত ও দোয়া কবুল হবে কি এই বিষয়ে বুঝতে পেরেছেন হ্যা কবুল হবে। তবে সেই হারাপ সম্পর্কের পাপ ও ঠিক হতেই থাকবে। তাই আমাদের উচিৎ হারাম সম্পর্ক থেকে বেচে থাকা।

হারাম রিলেশন থেকে বাচার উপায়

আমরা অনেকেই হারাম রিলেশন থেকে বাচার উপায় খুজে পাইনা বা জানিনা। কিন্তু ইসলামে সবকিছুই সহজ করে দেওয়া আছে। শুধু আমাদের জানতে হবে এবং সেইভাবে কাজ করতে হবে। চলুন জানা যাক হারাম রিলেশন থেকে বাচার উপায়।

আরও পড়ুনঃ রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা

আমাদের সকল পাপাচার থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহ তাওবায়ে নাসূহা করার কথা বলেছেন। তাওবায়ে নাসূহা করার অর্থ হলো খাঁটি ও নির্ভেজাল মনে একনিষ্ঠতা ও আন্তরিকতার সাথে তাওবা করা এবং সেই ধরণের পাপ আর কখনও জেনে বুঝে না করার অঙ্গিকার করা।

কুরআন-সুন্নাহর সঠিক দিকনির্দেশনা হলো মুসলিম নারীপুরুষ উভয়ে সকল প্রকার অবৈধ সংস্পর্শ, কিথাবার্তা, দেখাশুনা আসক্তি ও সাজ সজ্জা থেকে বেঁচে থাকা। নিজের দ্বীন ও সম্মান রক্ষা করা।

আমাদের শেষ কথা

ইসলাম ধর্ম কখনই কোন পাপাচার বা অবৈধ কোন কিছুই সমর্থন করেনা। কাজেই ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম ভালোবাসা বা ইসলামি প্রেম কি এই বিষয়ে আপনি উপরের পোস্টে জেনেছেন। আশা রাখছি এই সকল তথ্য আপনার কাজে আসবে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url