পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয় নিয়ে অনেকের ই জানা নেই। পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় নিয়ে তাই আজকের পোস্ট। তবে জানা যাক পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় কি?
পোস্ট সূচিপত্রঃ
- পিরিয়ডের ব্যথা কেন হয় | পিরিয়ডের ব্যথা কেমন
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষদের নাম
পিরিয়ডের ব্যথা কেন হয় | পিরিয়ডের ব্যথা কেমন
পিরিয়ডের ব্যথা কেন হয় বা পিরিয়ডের ব্যথা কেমন এই বিষয়ে বিষেশ করে ছেলেদের কোন ধারণাই থাকেনা। যার কারণে সাধারণত পিরিয়ডের ব্যথা কেন হয় এই বিষয় নিয়ে বা পিরিয়ডের ব্যথা কেমন এই কথা জানলে আপনি আপনার সঙ্গীনির সাথে আর কঠিন ব্যবহার না করে তার প্রতি কেয়ারিং হবেন কিছুটা হলেও।
তাহলে জানা যাক পিরিয়ডের ব্যথা কেন হয় বা পিরিয়ডের ব্যথা কেমন। সাধারণত মাসিকের সময় প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক একটি হরমোন দ্বারা জরায়ু সংকোচিত হয়ে যায়। যাদের দেহে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এর মাত্রা বেশি থাকে তাদের সাধারণত তলপেটে তীব্র ব্যথা হয়ে থাকে। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে কোন কারণ ছাড়াও প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ ইসলামিক অর্থনীতি - ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং
তবে অভিজ্ঞদের মতে পিরিয়ডের এই তীব্র ব্যথা শরীরের অন্তর্নিহিত কোন অসুখের লক্ষণ ও হতে পারে। কাজেই হ্যালা না করে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে চিকিৎসা নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এছাড়া পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় মেনেও কিছুটা ব্যথা কমানো যায়।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায়
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামি উপায় আমাদের অনেকেরই জানা নেই। পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর অনেক উপায় থাকলেও পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামি উপায় অনেকেই বেছে নেন।
একজন সাহাবী নবী করীম (স:) এর কাছে জানতে চাইলেন তার প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হচ্ছে এর থেকে শিফা পাওয়ার কোন দোয়া আছে কিনা। তখন নবী করীম (স:) জানালেন হ্যা আছে। তুমি তোমার ব্যথার জায়গায় হাত রেখে তিনবার বিসমিল্লাহ বলে সাতবার এই দোয়াটি পড় দেখবে ব্যথা কমিয়ে দিয়েছেন আল্লাহ। কাজেই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় হিসেবে এই কাজ আপনি করতে পারেন।
দোয়াটি হলো: " আউযুবি ইজ্জাতিল্লাহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শারবি মা আজিদু ওয়া উহাজিরু"। অর্থ হলো আল্লাহর মর্যাদা ও তার কুদরতের উসিলায় আমি যা অনুভব করছি তা থেকে মুক্তি চাচ্ছি।
এছাড়াও নবী (স:) বলেছেন তোমাদের মাঝে যদি কেউ কোন রকম অসুস্থ্যতা অনুভব করে তখন সে জেন এই দোয়াটি পড়ে।
দোয়াটি হলো: রাব্বুনাল্লহুল লাজি ফিস সামা-ই তাকাদ্দসা ইসমুক, আরুকা ফিস-সামা-ই ওয়াল আরাদ্ব, কামা রাহমাতিকা ফিস সামা-ই, ফাজায়াল রাহমাতিকা ফিল আরদ্ব, ইগফির লানা হুবানা ওয়া-খাতা য়া-লা আনতা রাব্বু তাইয়িবিন, আনফিল রাহমাতাম মিন রাহমাতিক, ওয়া শিফাউম মিন শিফা-ইকা আলা হাজাল ওয়াজ-ই। পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় এর মধ্যে এটিও একটি।
আরও পড়ুনঃ পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম কয়টি - পবিত্রতা অর্জনের গুরুত্ব
এছাড়াও সুরা ফাতেহা কে বলা হয় সকল রোগের শিফা। আপনি সুরা ফাতেহা পড়ে ফু দিলেও আল্লাহ সকল রোগ সারিয়ে দিবেন ইনশাল্লাহ। কাজেই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ইসলামিক উপায় হিসেবে সুরা ফাতেহা আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার হিসেবে অনেক কিছুই রয়েছে। পিরিয়ডের সময় একজন নারীর উচিৎ দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা পরিহার করে যেসকল খাবার পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার হিসেবে বেশ উপকারি সেই সকল খাবার খাওয়া। যেমন
বেশি পানি পান করুনঃ
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার হিসেবে প্রথমেই আপনি বেশি বেশি পানি পান করতে পারেন। এতে করে পেটের ব্যথা অনেকটাই কম লাগবে। তাই যেসকল খাবারে পানির পরিমাণ বেশি আছে খাদ্য তালিকায় সেই সকল খাবার যুক্ত করুন। যেমন তরমুজ, বেরি, শসা, লেটুস ইত্যাদি।
কলাঃ
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার হিসেবে আপনি খাদ্য তালিকায় কলা যুক্ত করুন। কারণ এতে থাকা ভিটামিন বি৬ ও পটাসিয়াম পিরিয়ডের সময় হওয়া যন্ত্রণা এবং পেটের ফোলা ভাব কমায়। তাই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার হিসেবে কলা খান।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ
বিভিন্ন গবেষণায় জানা যায় যে পিরিয়ডের সময় ব্যথা কমাতে ক্যালসিয়াম বেশি আছে এমন খাবার খুব উপকারি। এসময় প্রচুর মুড সুইং, অবসাদ, ক্লান্তি, ইত্যাদি দূর করে এই জাতীয় খাবার। যেমন দুধ, দই, পনির, চিজ, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
ওটসঃ
পিরিয়ডের সময় ওটস খেলে আপনার হজম ক্ষমতা ভালো রাখার পাশাপাশি পেটের ব্যথা কমাতেও ভালো কাজ করে।
লেবুঃ
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার হিসেবে লেবুর সুনাম অনেক বেশি। কারণ অল্প দামে হাতেই কাছেই আমরা লেবু পেয়ে থাকি। লেবু খাবার থেকে আয়রন শোষণ করার জন্য শরীরকে সহযোগীতা করে থাকে। আর লেবুর অধিক পরিমাণ ফাইবার পেশির খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ স্নিগ্ধা নামের অর্থ কি - স্নিগ্ধা নামের বাংলা অর্থ কি
এছাড়াও পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর খাবার তালিখা থেকে কিছু খাবার পরিহার করা জরুরি। পিরিয়ডের সময় যেসকল খাবার খাবেননা জেনে নেওয়া যাক।
- চা ও কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
- সকল ধরণের ফাস্টফুড খাবেননা
- খাবারে এডেড লবণ পরিহার করুন
- দুধ পান থেকে বিরত থাকা ভালো
- সকল কিছুতে অতিরিক্ত চিনি পরিহার করুন
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় হিসেবে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম অনেক বেশি কার্যকরী। কাজেই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে সচেতন থাকলে ঘড়ে বসেই আপনার ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ব্যায়াম এর মধ্যে রয়েছে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং, খেলাধুলা এরোবিক ব্যায়াম এর মাধ্যমে ডিসমেনোরিয়ার উপসর্গ কমে। মাসিকের সময় অনেকের তলপেটে যে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব হয় তাকে ডিসমেনোরিয়া বলা হয়।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় জানলে আপনি বাসায় থেকেই নিজে নিজে পেটের ব্যথা কমাতে পারেন। তাহলে জানা যাক পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া কিছু উপায়।
গরম পানির সেঁকঃ
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে অন্যতম হলো গরম পানির সেঁক দেওয়া। হট ব্যাগের মধ্যে গরম পানি নিয়ে সেঁক হতে পারে ব্যথা কমানোর উপযোগী একটা মাধ্যম
আদাঃ
এই সময় ব্যথা কমাতে আদা বেশ উপকারি। চায়ের সাথে আদা খেতে পারেন এই সময়।
পেঁপেঃ
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে আরেকটি হলো কাঁচা পেঁপে খাওয়া।
ল্যাভেন্ডার অয়েলঃ
এই সময় পেটে কয়েক ফোটা ল্যাভেন্ডার অয়েল দিয়ে মালিশ করুন। দ্রুতই ব্যথা কমে যাবে।
পানি ও পানীয় জাতীয় খাবারঃ
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে বেশ পরিচিত ও ব্যবহৃত হলো খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি পানি ও পানি বেশি এমন খাবার রাখা।
হালকা ব্যায়ামঃ
কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। যা আমরা উপরের অনুচ্ছেদে আলোচনা করেছি।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষদের নাম
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষদের নাম আমাদের মাঝে অনেকেই জানি। কিন্তু পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঔষদের নাম জানা থাকলেই নিজে নিজে মন গড়াভাবে ঔষধ খেতে ডাক্তাররা বরাবরি নিষেধ করেন।
এক্ষেত্রে ব্যথা সহ্য করার মত হলো কোন ঔষধ না খাওয়াই সবচেয়ে উত্তম। যদি প্রাইমারি ডিসম্যানোরিয়ার ব্যথা বেড়ে যায় সে ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল বা ন্যাপ্রোসিন এই জাতীয় ঔষধ ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন। কিন্তু না বুঝে বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ না করে ঔষধ খেলে অনেক বড় ঝুঁকি থেকে যায়।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url