মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো
আপনি যখন এই পোস্টটি পড়ছেন তখন হয়ত আপনার মোবাইল ফোনেরি পড়ছেন। অথবা আপনার পাশেই হয়ত আছে পছন্দের মোবাইল ফোনটি। এই মোবাইল ফোন যেমন আমাদের অনেক উপকারে আসে ঠিক তেমনিভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো একটু একটু করে অনেক আগেই মাথা নাড়া দিয়ে উঠেছে।
আজকের পোস্টে আপনি জানিতে পারবেন মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো এবং মোবাইল সম্পর্কে অনেক জানা অজানা খবর।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ( মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো )
- মোবাইল ফোন কি?
- মোবাইল ফোনের প্রকারভেদ
- মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপকারিতা
- মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপকারিতা
- ঘুমানোর সময় মোবাইল পাশে রাখলে কি হয়
- মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার
- মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো
- মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
মোবাইল ফোন কি?
মোবাইল ফোন কি? এখন এমন প্রশ্ন আপনি আপনার বাসার ছোট শিশুকে জিজ্ঞাসা করলেও সে উত্তর দিয়ে দিতে পারে। মোবাইল ফোন হল একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যার মাধ্যমে আমরা আমাদের যোগাযোগের পথকে করেছি অনেক সহজ। যতদূরেই থাকিনা কেন সবার সাথেই যোগাযোগ করার সুযোগ থাকে যদি আপনার হাতে একটি মোবাইল ফোন থাকে। তবে বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে সবাই কমবেশি উদ্বিগ্ন।
মোবাইল ফোনের প্রকারভেদ
বর্তমানে বাজারে মোবাইল ফোনের প্রকারভেদ অনেক। কোন কোম্পানি কার উপরে ফিচার আনবে সেই নিয়ে রিতিমত চলছে প্রতিযোগিতা। তবে সাধারণত মোবাইল ফোনের প্রকারভেদ করতে আমরা দুইভাগে বিভাজন করে থাকি।যথা
সাধারণ মোবাইলঃ
সাধারণ মোবাইল বলতেই আমরা এনালগ বা বাটন ফোনের কথাই বুঝি। যেখানে আমরা কথা বলতে পারি, SMS করতে পারি, Mp3 এর গান শুনতে পারি। আবার Mp4 ফরমেটে ভিডিও দেখতে পারি। এছাড়াও সময় দেখা থেকে শুরু করে এলার্ম দেওয়া এই কাজ গুলো করতে পারি। একটা বিষয় লক্ষনীয় যে সআধারন মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো অনেকাংশে কম ছিল।
স্মার্টফোনঃ
বর্তমান সময়ের গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আপনাকে স্মার্ট হতে হবে। আর এর জন্য আপনার হাতে একটি স্মার্টফোন থাকলে আপনি অনেকটাই এগিয়ে থাকলেন। এই সময়ে এসে প্রায় সকলের হাতেই আপনি একটি করে স্মার্টফোন দেখতে পাবেন।
আরও পড়ুনঃ ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম | ইসলামিক প্রেম
এই স্মার্টফোন এসে আমাদের জগৎ যেন একদম ছোট হয়ে গেছে। এই ফোনের মাধ্যমেই ভিডিও দেখা, কথা বলা, ভিডিও কলে দেখা, গান শোনা, ছবি তোলা, কল রেকর্ড করা, ভিডিও গ্রাফি করা, গ্রাফিক্স এর কাজ করা, মেইল করা, ছবি বা ভিডিও এডিট করা, গেম খেলা, এছাড়াও নানা প্রয়োজনীয় এপস ব্যবহার করার সূযোগ আপনার নিজের হাতেই রয়েছে।
তবে এই স্মার্টফোন আসায় বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো অনেক বেড়ে গেছে। কারণ স্মার্টফোন ব্যবহারের কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী যা আমরা করিনা।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপকারিতা
আজকে আমাদের পোস্টের আলোচ্য বিষয় হলো মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো। এখন জানব মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপকারিতা
- সহজে কথা বলা যায়। যেকোন প্রান্ত থেকে আমরা নিজেদের মাঝে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি।
- কাউকে কিছু লিখে পাঠাতে চাইলে মূহুর্তেই পাঠানো যায়।
- নিরাপদে আমরা কথা বলতে পারি। আমাদের গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়
- মোবাইল ফোনকে ব্যবহার করে অনেক ভাবেই আমরা অর্থ উপার্জন করে থাকি।
- যেকোন বিপদে সবাইকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠাতে পারি।
- যেকোন জরুরী সেবায় তথ্যকেন্দ্রে ফোন করার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে পারি।
- দেশের বাইরে যারা থাকেন তারা তাদের স্বজনদের সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে পারেন।
- মোবাইলের মাধ্যমে ডাক্তারের সেবা থেকে কৃষি সেবা পেয়ে থাকি
এছাড়াও মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপকারিতা আরও রয়েছে যা আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে চলেছি। কিন্তু এই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো বর্তমানে অনেকটা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপকারিতা
মোবাইল ফোন ব্যবহারের অপকারিতা আসলে অনেক। আমরা জেনে না জেনে প্রতিনিয়ত কত ক্ষতির মুখে পরছি হয়ত জানিও না।
- সাইবার ক্রাইম অনেক বেড়ে গেছে সকলের হাতে মোবাইল ফোন থাকায়
- ছোট শিশুরা এখন মোবাইলে আসক্ত হয়ে গেছে। যার ফলে ভবিষ্যতে অনেক সাফার করতে হচ্ছে।
- খেলার মাঠ ছেড়ে সবাই বিভিন্ন রকমের মোবাইল গেমে নিজেদের আসক্ত করে তুলেছে
- অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে অল্প বয়সেই অনেকের চোখের সমস্যা হচ্ছে।
- মোবাইলের তেজষ্ক্রিয় রশ্মি শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
- একদল দুষ্টুচক্রের দ্বারা মানুষের গোপন ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল করার ঘটনা বেড়েছে বহুগুণ।
- পর্নোগ্রাফি বা এমন খারাপ ভিডিও একসেস সকলের হাতের মুঠোয় আসায় অনেকের চরিত্র ঠিক থাকছেনা।
ঘুমানোর সময় মোবাইল পাশে রাখলে কি হয়
আমরা মোবাইলের উপর এত বেশি আসক্ত হয়ে পরেছি যে ঘুমানোর সময় মোবাইল পাশে রাখলে কি হয় এটা জেনা না জেনে মোবাইল পাশে নিয়েই ঘুমিয়ে পরি।
আরও পড়ুনঃ আম খেলে কি উপকার হয় | আম খেলে কি ক্ষতি হয়
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো জানলে আমরা হয়ত আর মোবাইল পাশে নিয়ে ঘুমাবো না। বলা হয় ঘুমানোর সময় নিজের থেকে অন্তত ৬ ফুট দূরে ফোন রাখতে হবে। ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে যেকোন ডিজিটাল পর্দা থেকে আমাদের দূরে থাকতে হয় তাহলে ঘুমের ব্যঘাত ঘটে।
অনেকে আবার মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো না জেনে ঘুমানোর পালিশের নিচে মোবাইল ফোন রেখে দেই। বা গান শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাই। এগুলো যেকোন সময় যেমন বিপদ ডেকে আনতে পারে তেমনি মস্তিষ্কের অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করেই রিং বেজে উঠলে ঘুমের প্রচন্ড ব্যঘাত হতে পারে। কাজেই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার করা আমাদের অত্যন্ত জরুরী।
মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার
- দীর্ঘ আলাপ এড়িয়ে চলুন
- ফোনের স্পিকার বা হেডফোন ব্যবহার করুন
- প্রয়োজন না থাকলে ফোনের ডাটা বা ওয়াইফাই বন্ধ রাখুন
- যেখানে মোবাইলের সিগন্যাল কম সেই সব এলাকা এড়িয়ে চলুন
- সম্ভব হলে কল কম করে মেসেজ বেশি দিন
- ল্যান্ডফোন ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো
- শিশুদের অবশ্যই মোবাইল থেকে দূরে রাখুন
- নিরাপদ চার্জিং নিশ্চিত করু
- মোবাইল এপস এর ডেস্কটপ ভার্সন বেশি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো
আমরা আসলে মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে গেছি। যার কারণে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো জেনেও আমরা মানতে পারিনা বা হয়ত জানিও না সবাই। তাই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আপনাদের জানাবো এই অংশে।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে লম্বা হওয়া যায় - মেয়েদের লম্বা হওয়ার উপায়
মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে শরীরের যে সমস্যা গুলো হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে আছে চোখে জ্বালা করা, মাথা ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, কানে কম শোনা, অতিরিক্ত ক্লান্তি, চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া, চিন্তা শক্তি কমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে থাকা, পর্ণ আসক্তি হওয়া, শ্রবন শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি।
মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়
একটি মোবাইল আপনি যত বেশি ব্যবহার করবেন তত বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো আপনাকে আক্রমণ করবে। মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে আপনাকে মোবাইল থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব তৈরী করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ভাবে মোবাইল ব্যবহার করা যাবেনা।
শরীরের থেকে যতটা সম্বভ দূরে রাখুন ফোন। দীর্ঘ সময় নিয়ে ফোনে কথা বলা পরিহার করুন। রাতে ঘুমানোর আগে ফোন ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন, শিশুদের হাতে ফোন না দেওয়াই ভালো, মুভি বা নাটক দেখতে মোবাইল ব্যবহার না করে কম্পিউটার বা অন্য স্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।
মোট কথা দিনে যতটা সময় আপনি ফোনের পিছনে সময় অতিবাহিত করেন সেই সময় যত কমিয়ে আনতে পারবেন মওবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে ততো বেঁচে থাকবেন ইনশাল্লাহ।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url