ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

ক্যান্সার হলো একটি মারাত্বক রোগ হিসেবে পরিচিত ব্যধি, যা আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। ফলে নানা বয়সের মানুশের মাঝে এই ক্যান্সার দেখা দিয়েছে। জানা যায় প্রায় ২০০ এর বেশি রকমের ক্যান্সার রয়েছে। এর মধ্যে আমরা সামান্য কিছু ক্যান্সার সম্পর্কে জানতে পারি। 

আমাদের আজকের পোস্টের বিষয় হলো ক্যান্সার কেন হয় বা কেন্সার কিভাবে হয়। ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় কি হতে পারে। আবার ক্যান্সার রোগীর খাবার তালকা কেমন হওয়া জরুরী ইত্যাদি বিষোয় নিয়।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

ক্যান্সার কিভাবে হয় | ক্যান্সার কেন হয়

ক্যান্সার কেন হয় বা ক্যান্সার কিভাবে হয় এ বিষয়টি জানান জরুরী। আমি যদি জেনে রাখি ক্যান্সার কিভাবে হয় এবং ক্যান্সার কেন হয় তাহলে সেই সকল বিষয়গুলোর প্রতি আমরা নজর রাখতে পারব।

আরও পড়ুনঃ কিডনি রোগের কারণ - কিডনি রোগ থেকে মুক্তির উপায়

মানুষের শরীরে অনেক কষ দ্বারা গঠিত এবং এই কোষগুলো প্রতিনিয়ত বিভাজিত হতে থাকে। এবং এর ওপর মানব শরীর নিয়ন্ত্রণ রাখেন। কোন কারনে যদিও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায় তখন বিশেষ কোন অঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে কোষগুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন তাকে ক্যান্সার বলা হয়।

ক্যান্সার মূলত জিনের পরিবর্তনের ফলে হয়ে থাকে। জেনেটিক পরিবর্তন স্বাভাবিকভাবে হয় আবার অতিরিক্ত ধূমপান বা মাদকাসক্ত হাওয়া, অতি বেগুনি রশ্মি ইত্যাদি কারণে হতে পারে।

ক্যান্সার এর লক্ষণ | ক্যান্সার রোগের লক্ষণ

ক্যান্সার কিভাবে হয় বা ক্যান্সার কেন হয় এ বিষয়ে একটা প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি। এবার জানা প্রয়োজন ক্যান্সার এর লক্ষণ বা ক্যান্সার রোগের লক্ষণ গুলো কি কি হতে পারে। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

  1. অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা
  2. স্বাভাবিকের চেয়ে ক্ষুধা কমে যাওয়া
  3. শরীরের কোন কোন জায়গায় দলা বা  চাকা দেখা যাওয়া
  4. দীর্ঘ সময় ধরে কাশি বা গলা ব্যথা থাকলে
  5. স্বাভাবিকের চেয়ে মলত্যাগে পরিবর্তন আসলে
  6. জ্বর হওয়া কিংবা রাতে ঠান্ডা লাগা বা ঘেমে যাওয়া
  7. ত্বকে অনেক রকমের পরিবর্তন দেখা যাবে
  8. রক্তপাত অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়া
  9. হঠাৎ করে ওজন কমতে থাকা
  10. দীর্ঘদিন কোন জায়গায় ব্যথা থাকলে

এছাড়াও আরও অনেক কারণ রয়েছে যেগুলো ফলে বোঝা যায় ক্যান্সার হচ্ছে। এরমধ্যে পা ফুলে যাওয়া বা শরীরের আকৃতি হঠাৎ করে পরিবর্তন হয়ে যাওয়া। এছাড়াও আরও অনেক কারণ থাকে যেগুলো আসলে বোঝা যায় না। ক্যান্সার রোগের লক্ষণ অনেকক্ষেত্রেই বোঝা যায় না।

ক্যান্সার কি বংশগত রোগ

ক্যান্সার বংশগতভাবে হতে পারে। সাধারণত ক্যান্সার জেনেটিক কারন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পিতা-মাতার জেনেটিক থেকে কিছুটা সম্ভাবনা থেকে যায় যদি ওই পিতা-মাতার কারো ক্যান্সার থাকে। ক্যান্সার কি বংশগত রোগ যদি ধরে নেন ক্যান্সার বংশগত রোগ তাহলে আপনার ভুল হবে। ক্যান্সার যেকোনো সময় যেকোনো বয়সে হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ - ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়

এক্ষেত্রে যদি পূর্বপুরুষের ক্যান্সার থেকে থাকে তাহলে তার ক্যানসারের ঝুঁকির উচ্চমাত্রা থাকে। তবে উত্তরাধিকার থেকে প্রাপ্ত ক্যান্সার হওয়ার সংখ্যা বা সম্ভাবনা 5 থেকে 10 শতাংশ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বাভাবিকভাবেই এই ক্যান্সার রোগ হয়ে থাকে।

ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে

একজন মানুষ কতদিন বাঁচবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আল্লাহর ইচ্ছার উপর উপর। এখানে মানুষের কোন হাত থাকেনা। তবে ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। আবার অনেকে বলে থাকেন কোন স্টেজে আছে। আসলে কতদিন বাঁচে এই বিষয় নিয়ে কোন কিছু বলা সম্ভব না। ক্যান্সার কোথায় হয়েছে এর উপর নির্ভর করে রোগীর কি অবস্থা হবে।

অনেক রোগী আছেন যারা ক্যান্সার আক্রান্ত হবার পরেও চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ জীবন যাপন করছেন। আবার অনেকে আছেন আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ক্যান্সার একটি মারাত্মক ব্যাধি এই রোগ হলে অধিকাংশ জন বিভিন্ন কারণে শারীরিকভাবে সক্ষমতা হারিয়ে মৃত্যুর দিকে চলে যায়।

বিশেষ করে মুখে ক্যান্সার হলে খাবার খেতে না পেরে কিংবা পায়ুপথে ক্যান্সার হলে পায়খানা বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারে। ক্যান্সার হলে চিকিৎসার কোনো বিকল্প নেই। সঠিক চিকিৎসা রোগীকে অনেকদিন সুস্থ রাখতে পারে।

আসলে ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে এই বিষয়ে কোন কিছুই বলা সম্ভব না। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে রোগীর শারীরিক অবস্থা কেমন আছে। কোন জায়গায় ক্যান্সার হয়েছে মহান আল্লাহ কি করবেন তার ওপর। তবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে ওজন কমে যাওয়া, খাবার খেতে না পারা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, এরকম বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়ে নোকিয়া আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।

ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা

ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা একটু ভিন্নভাবে তৈরি করতে হয়। যখন একজন রোগী ক্যান্সার আক্রান্ত হন তখন তার শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই যে সকল খাবারে প্রোটিন বেশি থাকে সেই সকল খাবার খেতে দিতে হয়। বিশ্বাস করে মাছ, মুরগির মাংস, ডিম এ জাতীয় খাবারে অনেক বেশি প্রোটিন থাকে। তাই খাদ্যতালিকায় গুলো রাখতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ হিট স্ট্রোক এর কারণ - হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়

অন্যদিকে আপনি যদি নিরামিষভোজী  হন তাহলে খাবার তালিকায় মসুর ডাল এবং মটরশুঁটির রাখতে পারেনা এতে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে। পনির বা দুধ জাতীয় খাবার রাখতে পারেন খাদ্য তালিকা এই খাবারেও প্রোটিন পাবেন।

তাই ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা একটু জেনে বুঝে সচেতনতার সঙ্গে সাজাতে হবে। যেন নিত্যদিনের খাবারের মাঝেই তিনি অধিক প্রোটিন পেতে পারেন। এতে করে তার প্রোটিনের চাহিদা পূর্ণ হবে রোগী ভালো থাকবেন।

ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে গিয়ে যে বিষয় গুলো পাওয়া যায় সেগুলো হলো

  • ধূমপান পরিহার করা। কারণ ধূমপান থেকেই প্রায় 90% ক্যান্সার রোগের সৃষ্টি হয়
  • সূর্যের তাপের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে স্কিন ক্যান্সার হতে পারে। সূর্যের তার থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন
  • অনিয়মিত খাদ্যাভাস ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি এবং সিজনাল ফল খেতে পারেন
  • অনিয়ন্ত্রিত ও অবাঞ্ছিত যৌন সম্পর্ক ক্যান্সার ছড়াতে সহায়ক হতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত যৌন সম্পর্ক বজায় রাখুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। তাই সময় করে অন্তত 30 মিনিট ব্যায়াম করুন।
  • খাবার রান্নার ক্ষেত্রে কম আছে খাবার রান্না করুন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
  • পরিবারের পূর্বপুরুষদের কারো ক্যান্সার থাকলে নিজে সচেতন হোন সেই সাথে ডাক্তারের ফলোআপে থাকুন।

ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ

ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ হিসেবে যেসকল কারণগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। অর্থাৎ ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন রোগীর ভিতর এই ধরনের উপসর্গ থাকলে বুঝে নিতে হয় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। সেই লক্ষণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো

  1. কণ্ঠনালীর মধ্য দিয়ে গরগর করে শব্দ হওয়া
  2. চোখে ঝাপসা দেখা
  3. মাঝেমধ্যে চোখের পাতা বন্ধ করতে না পারা
  4. রোগীর মাথা সামনের দিকে কিছুটা নিয়ে আসা
  5. মানুষ হাঁসার সময় নাক থেকে ঠোঁটের দুই কোন পর্যন্ত যে দাগ পরে অনেক ভাজা পড়া
  6. কথা বলার সময় মুখ ও জিহবা সঠিকভাবে কাজ না করা
  7. আলোর কমবেশি তে চোখের পিউলির কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া না করা
  8. রক্তক্ষরণ হওয়

ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ বা ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর অবস্থার অবনতি হচ্ছে কখন বুঝবেন। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো যখন একজন রোগীর মধ্যে দেখতে পাবেন তখন বুঝে নেবেন রোগীর অবস্থা খুব বেশি ভালো নাই।

আমাদের শেষ কথাঃ ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগ হলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই আমাদের উচিত ক্যান্সার কেন হয় বা ক্যান্সার কিভাবে হয়। ক্যান্সারের লক্ষণ, ক্যান্সার রোগের লক্ষণ, ক্যান্সার রোগীর খাবার তালিকা, ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় ইত্যাদি বিষয়ে জেনে রাখা।

আমরা আমাদের আজকের পোস্ট এ খুব স্বাভাবিক এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। আশা করছি বিষয় গুলো পড়ে আপনি উপকৃত হবেন। আমাদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url