ডাবের পানির উপকারিতা

ডাব খাওয়ার উপকারিতা আসলে অনেক। ডাবের পানি শরীরের দুর্বলতা দূর করে এনার্জি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ডাবের পানির উপকারিতা অপরিসীম। ত্বকের যত্নে ডাবের পানির ভূমিকা থেকে অনেক বেশি। আমার আজকের পোস্ট এর আলোচ্য বিষয় হল ডাবের পানির উপকারিতা।

প্রচণ্ড এই গরমের মধ্যে একটু স্বস্তি পেতে বা শরীরকে একটু ঠান্ডা রাখতে ডাবের পানি খেতে অনেকেই পছন্দ করেন। তাই জানা প্রয়োজন ডাবের পানির উপকারিতা কি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ডাবের পানির উপকারিতা

ডাব খাওয়ার উপকারিতা

ডাব খাওয়ার উপকারিতা অনেক তবে কিছু আমরা জানি অধিকাংশ গুলো আমরা জানতে পারিনা। না জেনে শরীর সুস্থ রাখার জন্য অসুস্থ হলে ডাব খেয়ে থাকি। তবে ডাব খাওয়ার উপকারিতা যথেষ্ট পরিমাণ রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ গরমে শরীর ঠান্ডা রাখে যেসব খাবার

ডাব খাওয়া মানে ডাবের পানি পান করা। আমরা সবাই জানি ডাবের পানির উপকারিতা অনেক বেশি। আপনি যদি নিয়মিত ডাবের পানি পান করেন তাহলে আপনার গ্যাসট্রিকের সমস্যা কমে যাবে অন্যদিকে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

এটি ইউরিনারি ট্র্যাক্টে যে সকল ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয় তাদের প্রতিরোধ করে। তবে যেকোন খাবার নিয়মিত খাওয়ার পূর্বে শরীরের অবস্থা বুঝে নেওয়া উচিত প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। ডাবের পানির উপকারিতা যেমন আছে অতিরিক্ত খেতে হলে শরীরের বর্তমান অবস্থায় বোঝা উচিত।

ডাবের পানির উপকারিতা

ডাবের পানির উপকারিতা অনেক বেশি। বিশেষ করে এই গরমে ডাবের পানির উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। তাই ডাবের পানির উপকারিতা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধেঃ

প্রচণ্ড গরমে চারিদিকে হিটস্ট্রোকের সংখ্যা বেড়ে যায়। ফলে মানুষ প্রচন্ড বিপাকে পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ডাবের পানির উপকারিতা এত বেশি যে এই গরমে ডাবের পানি পান করলে আপনার শরীর ঠান্ডা থাকবে সেইসাথে হিটস্ট্রোকের সংখ্যা হ্রাস পাবে। তাই প্রচন্ড গরমে ডাবের পানি পান করতে পারেন।

লবণ ও পানির ঘাটতি পূরণেঃ

ডাবের পানি মূলত প্রাকৃতিক স্যালাইন  হিসেবে কাজ করে থাকে এই গরমে যারা রোদের ভিতর কাজ করেন তারা দিনে দুই থেকে তিনটি ডাবের পানি খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরের লবণ পানির ঘাটতি পূরণ হবে। এছাড়াও ডাবের পানির উপকারিতা এত বেশি যে এটি বেশি সহায়তা করে।

পটাশিয়াম ও সোডিয়াম পূরণ করতেঃ

ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম থাকে যা আমাদের দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। তাই আমাদের শরীরের পটাশিয়াম এবং সোডিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য নিয়মিত ডাবের পানি পান করতে পারেন।

দুর্বলতা প্রতিরোধেঃ

ডাবের পানির উপকারিতা এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে শারীরিক পরিশ্রম করার পর ডাবের পানি আপনার শরীরের ঘাটতি যাওয়ার শক্তি ফিরিয়ে আনতে পারে। সেই সাথে ডাবের পানি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে।

ব্রণের সমস্যা দূর করতেঃ

আমাদের মাঝে অনেকেরই ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয় এই সমস্যা থেকে উত্তরণ পেতে ডাবের পানির উপকারিতা গ্রহণ করতে পারেন। ডাবের পানি পান করলে ত্বক আর্দ্র থাকে যার ফলে ব্রণ হয় কম।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করতেঃ

এদিকে ডাবের পানির উপকারিতা এই তালিকায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ডাবের পানি খেলে যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে হজমের সমস্যা দূর হবে। তাই শরীরের শক্তি যোগাতে সুস্থ ত্বক এবং সুস্থ পেট পেতে নিয়মিত ডাবের পানি সেবন করতে পারেন।

ডাবের শাঁসের উপকারিতা

ডাবের পানির মত ডাবের শাঁসের উপকারিতা কম নয়। ডাবের পানির উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি ডাবের শাঁসের উপকারিতা রয়েছে। জানা যাক ডাবের শাঁসের উপকারিতা কি কি

ডায়াবেটিস রোগের জন্যঃ

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য ডাবের শাঁস ওষুধ হিসেবে কাজ করে। ডাবের শাঁস খেলে ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় তাই ডাবের শাঁস খেলে ডায়াবেটিস রোগীরা ভালো থাকে।

দাঁতের যত্নেঃ

দাঁতের যত্নে ডাবের শাঁসের গুরুত্ব অপরিসীম। ডাবের শাঁসের উপকারিতা মধ্যে দাঁতের সুস্থতা একটি অন্যতম বিষয়। সুস্থ দাঁতের জন্য তাই ডাবের শাঁসের উপকারিতা গ্রহণ করতে পারেন।

হাড় শক্ত করতেঃ

হাড় শক্ত ও মজবুত করতে ডাবের শাঁসের উপকারিতা অনেক বেশি। ডাবের পানির উপকারিতা যেমনটি আছে তেমনি হাড় শক্ত ও মজবুত রাখতে ডাবের শাঁস খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত ডাবের শাঁস খেতে চাইলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া সবচেয়ে ভালো।

মানসিক সমস্যা দূর করতেঃ

যারা অনেক বেশি মানসিক সমস্যায় ভোগেন তাদের মানসিক সমস্যা দূর করতে ডাবের শাঁসের উপকারিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডাবের শাঁস খেলে মানসিক সমস্যা বা মানসিক চাপ কমে যায়। তাই মানসিক চাপ কমাতে ডাবের শাঁস খেতে পারেন।

কিডনির সুস্থতায়ঃ

বর্তমানে আমাদের দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি আপনার যদি কিডনির কোন রোগ থেকে থাকে তাহলে ডাবের শাঁসের উপকারিতা নিতে পারে। কেননা ডাবের শাঁস খেলে কিডনির রোগ কম হয় এবং কিডনি ভালো থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডাবের পানি খাওয়া।

খালি পেটে ডাব খেলে কি হয়

ডাবের যেমন অনেক গুণ রয়েছে ডাবের পানি হয়েছে তার চেয়ে বেশি গুন। তবে আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন কখন কিভাবে ডাব খাওয়া উচিত। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।

আরও পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে যেসব খাবার খাবেন

ডাবের পানির উপকারিতা সবাইকে মুগ্ধ করে তবে খালি পেটে ডাব খেলে কি হয় এ বিষয়টি আমরা অনেকেই জানিনা। চলুন এবার জানা যাক খালি পেটে ডাব খেলে কি হয়।

খালি পেটে ডাবের পানি খেলে উপকার পেতে পারেন। ডাবের পানিতে লরিক এসিড থাকে যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে আপনার রোগব্যাধি কম হবে।

নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তাই খালি পেটে ডাব খেলে কি হয় তা বুঝতে পেরেছেন। সেইসাথে জেনেছেন ডাবের পানির উপকারিতা কত। সুস্থ সুন্দর দেহের জন্য তাই ডাবের পানি নিয়মিত খেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় ডাব খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় ডাব খাওয়া যাবে কি এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। কেননা আপনি জেনে থাকবেন গর্ভাবস্থায় সব ধরনের খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়। তাই আমাদের মা-বোনদের জানা উচিত সেই সাথে অভিভাবকদের জানা উচিত গর্ভাবস্থায় ডাব খাওয়া যাবে কি।

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের পুষ্টির চাহিদা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় আর অতিরিক্ত পুষ্টির যোগান দিতে ডাবের পানির উপকারিতা অপরিসীম। ডাবের পানিতে রয়েছে অধিক পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ক্লোরাইড। এছাড়া ডাবের পানি পান করলে ইলেকটোলাইটস এবং তরল পদার্থ তৈরি হয়।

তাই বলা হয়ে থাকে গর্ভবতী মহিলাদের বয়স যখন তিন মাস তখন থেকে নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। এটা করে গর্ভবতী মহিলার এবং সন্তানের অনেক উপকার হয়।

ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে

অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন জাগে ডাব খেলে কি প্রেসার বাড়ে। তবে জানতে দোষ নেই জেনে রাখা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। হ্যা উচ্চরক্ত চাপ রয়েছে অর্থাৎ প্রেসার রয়েছে ডাবের পানি খেলে তাদের প্রেসার বাড়ে। ডাবের পানিতে থাকা সোডিয়াম প্রেসার বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুনঃ কি খেলে দ্রুত ফর্সা হওয়া যায় - কি খাবার খেলে ফর্সা হওয়া যায়

তাই আপনি যদি প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের রোগী হন তাহলে আপনার প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়া উচিত হবে না। তবে ডিহাইড্রেশন বা শরীরের দুর্বলতা জনিত কারণে ডাবের পানি পান করতে পারেন। ডাবের পানির উপকারিতা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমাদের আজকের পোস্ট এর আলোচ্য বিষয় ডাবের পানির উপকারিতা। তবে এখন আমরা একটু জানবো ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে।

প্রত্যেকটা জিনিসের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি কিছু অপকারিতা ও থেকে যায়। ডাবের পানির উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি কিছু অপকারিতা ও রয়েছে।

ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতা এর কিছু বিষয় উল্লেখ করা হলো।

উপকারিতাঃ

  1. গর্ভবতী মায়েদের জন্য ডাবের পানি অনেক ভালো
  2. দাঁতের যত্নে ডাবের পানির অনেক ভালো
  3. হজমের জন্য ডাব খেতে পারেন
  4. কিডনি রোগের জন্য ডাব ভালো
  5. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী
  6. ত্বকের যত্নে এর ভূমিকা অনেক
  7. দুর্বলতা কাটাতে ডাব অনেক ভালো
  8. হাড় মজবুত করতে ডাব এর জুড়ি নেই
  9. শরীরে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান পূরণে গুরুত্ব বেশি

এছাড়াও ডাবের অনেক রকম উপকারিতা রয়েছে। এবার আমরা জানবো ডাবের অপকারিতা

অপকারিতাঃ

  1. অতিরিক্ত ডাবের পানি পান করলে ডায়রিয়া হতে পারে
  2. কিডনি রোগের জন্য ডাবের পানি ঝুঁকির কারণ হতে পারে
  3. উচ্চ রক্তচাপ বা প্রেসার বাড়িয়ে দিতে পারে
  4. অতিরিক্ত খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে

আমাদের শেষ কথাঃ ডাবের পানির উপকারিতা

প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ম মেনে করলেন শরীর স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু যখন আমরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে কিছু অভ্যাস  গরে তুলি তখনই বিপদের সম্মুখীন হতে হয়।

তাই ডাবের পানির উপকারিতা আছে বলে নিজেদের মতো করে সব সময় ডাবের পানি খাওয়া উচিত হবে না। প্রতিদিন ডাবের পানি খেতে চাইলেন কতটুকু খাবেন কিভাবে খাবেন এ বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url