জাম খেলে কি উপকার হয়

জাম একটি মৌসুমী ফল দেখতে খুবই ছোট কিন্তু জাম খেলে কি উপকার হয় সে বিষয়গুলো যদি জানতে পারেন আপনি অবাক হবেন। মূলত সকল সিজনাল ফলেই বিভিন্ন রকমের উপকারিতা থেকে থেকে কে থেকে বাদ পড়েনি জাম ফল।

জমে থাকা প্রচুর পরিমাণে উপাদান আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশী কার্যকর। আমার আজকের পোস্ট এর আলোচ্য বিষয় জাম খেলে কি উপকার হয়। তবে জানা যায় জাপানের লুকিয়ে থাকা কিছু পুষ্টিগুণ।

পোস্ট সূচিপত্রঃ জাম খেলে কি উপকার হয়

জাম খেলে কি হয় | জাম খেলে কি উপকার হয়

জাম খেলে কি হয় বিষয়টি জানলে আপনি অবাক হবেন। জাম ফলটিতে রয়েছে অনেক রকমের পুষ্টিগুণ বিশ্বাস করে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং লোহা।

আরও পড়ুনঃ গরুর মাংস খেলে কি হয় - গরুর মাংস কতটুকু খাবেন

কাজেই আপনার বুঝতে বাকি নেই জাম খেলে কি উপকার হয়। জাম খেলে হাড়ের ক্ষয় রোধ হয় এবং হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। কাজেই যাদের হাড় ক্ষয় যাওয়ার সমস্যা রয়েছে কিংবা বাড়ির বয়স্কদের খাদ্য তালিকায় জাম রাখতে পারেন।

জাম খেলে কি উপকার হয়

জামাইকে মৌসুমি ফল হওয়ায় সারা বছর খুব বেশি দেখা মেলেনা এই ফলটির। জাম খেলে কি উপকার হয় বিষয়টি জানতে পারলে আপনি হয়তো খাদ্যতালিকায় বেশি বেশি জাম রাখার চেষ্টা করবেন। তাহলে জানা যাক জাম খেলে কি উপকার হয়।

হার্টের সুরক্ষায়ঃ

জামে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যার ফলে আপনার হার্ট অ্যাটাক হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারেন। এছাড়াও জামে রয়েছে বিভিন্ন রকমের অ্যাসিড যেমন এলজিনিক অ্যাসিড, অ্যান্থোসিয়ানিন এই ধরনের পুষ্টিগুণ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সহযোগিতা করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান মিনিমাল গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স রয়েছে জামে। জামের বীজ কাটি ডায়াবেটিক উপাদান হিসেবে কাজ করে এছাড়াও জাম ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী এবং সম্ভাবনা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। কাজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনি জাম ফল খেতে পারে।

ইনফেকশন দূর করতেঃ

জামে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে এছাড়াও রয়েছে গ্যালিক এসিড অক্সালিক অ্যাসিড ম্যালিক এসিড এই ধরনের যৌগ। যার ফলে জাম শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং ইনফেকশন দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

জন্ডিস অ্যানিমিয়া দূর করেঃ

জাম খেলে কি উপকার হয় এরমধ্যে বিশেষ একটি বিষয় হল জাবের কিছু ঔষধি গুন। জাম খেলে জন্ডিস এবং এনিমিয়া দূর হয়।

আরও পড়ুনঃ বিড়ালের খাবারের দাম - বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর খাবার

জাম একটি উপকারী ফল জাম খেলে জন্ডিস দূর হয় সেইসাথে অ্যানিমিয়া সারাতে জামের জুড়ী নেই। জ্যামের মধ্যে থাকা আয়রন শরীরের এনিমে দূর করতে সাহায্য করে এবং যাদের রক্তস্বল্পতা আছে তাদের জন্য জাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাম জন্ডিস রোগ সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

ইমিউনিটি বৃদ্ধি করেঃ

জাম এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ই এবং বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানুষের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বুষ্টঅ্যাপ করে। এছাড়াও সিজনাল ফ্লুতে কে রক্ষা করতে জামিরজুরী নেই। জাম খেলে কি উপকার হয় এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যাদের ইমিউনিটি কম নিয়মিত জাম খেলে তাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বৃদ্ধি পায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ

জাম খেলে কি উপকার হয় এর মধ্যে অন্যতম হলো জ্যাম ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক হিসেবে কাজ করেন। গবেষণায় দেখা গেছে জামের মধ্যে কেমা প্রটেক্টিভ উপাদান রয়েছে যার ফলে নিয়মিত জাম খেলে ক্যানসারের কোষ প্রতিরোধ করতে জাম সহায়তা করে।

হাড়ের শক্তিঃ

জাম খেলে কি উপকার হয় এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শরীরে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। কাজেই যাদের হাড় ক্ষয় গিয়েছে বা হাড় ক্ষয় জনিত সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত খাদ্যতালিকায় জাম ফলটি রাখতে পারেন। এটা করে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পাবে হাড় মজবুত হবে এবং ক্ষয় রোধ হবে।

জামের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম আয়রন পটাশিয়াম ভিটামিন সি মানবদেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এর মধ্যে ক্যালসিয়াম এবং আয়রন হারে বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে কাজ করেন।

জামের বিচি খেলে কি হয় | জাম খেলে কি উপকার হয়

জাম খেলে যেমন অনেক রকমের উপকার হয় তেমনি জামের বিচির অনেক উপকারী। জাম খেলে কি উপকার হয় এর কিছু গুণাবলী আমরা জেনেছি ইতোমধ্যে। এবার জানা যাক জামের বিচি খেলে কি হয়। জামের বীজের থাকা জাম্বোলাইন এবং জাম্বোসাইন পদার্থগুলো রক্তের শর্করা কমাতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুনঃ সুদ কি? - সুদ সম্পর্কে ইসলামের বিধান

জামের বীজও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। জামের বিচি শুকিয়ে চূর্ণ করে পানি দিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে। কাজেই বুঝতেই পারছেন শুধু জাম খেলে নি জামের বিচি খেলে কি হয় সেই বিষয়টিও জানা থাকলে অনেক কাজে লাগবে।

গর্ভাবস্থায় জাম খেলে কি হয় | জাম খেলে কি উপকার হয়

গর্ভাবস্থায় জাম খেলে কি হয় এ বিষয়টি জানা থাকলে গর্ভাবস্থায় জাম খেতে পারবেন। আমরা জানি গর্ভাবস্থায় সবকিছু খাওয়া শরীরের জন্য ঠিক না কাজেই গর্ভাবস্থায় জাম খেলে কি হয় এবং জাম খেলে কি উপকার হয় সে বিষয়টি জানা থাকলে ঘরে বসেই আমরা অনেক কিছু করতে পারি।

  • জামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে যা গর্ভবতী মায়ের পেটে থাকা শিশুর দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
  • জাম এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। কাজি গর্ভাবস্থায় কেউ জাম খেলে দাঁত এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
  • জামে থাকা প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম অকাল প্রসব ঠেকাতে কাজ করবে সেই সাথে শিশুর বৃদ্ধি সঠিকভাবে করতে সহায়তা করবে।
  • একজন গর্ভবতী মহিলা নিয়মিত জাম খেলে তার ডায়রিয়া এবং আলসার থেকে রক্ষা পাবে।
  • গর্ভবতী মহিলার নিয়মিত জাম খেলে ইরিটেটবল বাওয়েল সিনড্রোম মোকাবেলা করতে পারবে।
  • জামে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেশি থাকে যার ফলে গর্ভবতী মায়ের শরীরে শক্তির যোগান হবে সেইসাথে উচ্চরক্তচাপের যে ঝুঁকি থাকে সেই ঝুঁকি কমে আসবে।
  • জামি থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আয়রন পটাশিয়াম ইত্যাদি খনিজ পদার্থ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। কাজেই নিয়মিত জাম খেলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে সেই সাথে হাড়ের ক্ষয় রোধ ও হাড় শক্ত হবে।

জাম পাতার উপকারিতা | জাম খেলে কি উপকার হয়

জাম খেলে কি উপকার হয় এ বিষয়টি সম্পর্কে কিছুটা ধারনা আপনার হয়েছে। তবে এবার জানা যাক জাম পাতার উপকারিতা।

প্রাচীনকাল থেকেই জামপাতা জ্বর প্রতিরোধের বা জ্বরের ঔষধ হিসেবে কাজ করতো। কাজেই আপনার জ্বর হলে জাম পাতার ব্যবহার করতে পারেন সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যদি মাত্রা অতিরিক্ত জ্বর হয় তাহলে ঘরোয়া উপায়ে চিকিৎসা না করে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

জাম গাছের ছালের উপকারিতা | জাম খেলে কি উপকার হয়

কি কিছুটা অবাক হচ্ছেন অবাক হওয়ার কিছু নেই জাম খেলে কি উপকার হয় সে বিষয়ে যেমন জেনেছেন তেমনি জামের পাতা এবং জাম গাছের ছালের অনেক উপকারিতা আছে। জাম গাছের ছালের উপকারিতা কি সেই বিষয়ে জানা যায়।

রক্ত পায়খানায় জাম গাছের ছালের উপকারিতা জুড়ি নেই। আপনার যদি রক্ত পায়খানা হয় বা পরিচিত কারো রক্ত পায়খানা হয় তাহলে জাম গাছের ছালের রস বা দুই চা-চামচ ছাগলের দুধের মধ্যে মিশিয়ে খাইয়ে দিলে খুব ভালো উপকার পাবেন।

মাড়ির ক্ষত দূর করতে গাছের ছালের জুড়ি নেই। আপনার যদি মাড়ির ক্ষত হয়ে থাকে তাহলে জাম গাছের ছালের গুঁড়ো দিয়ে প্রতিদিন দাঁত মাজতে পারেন এতে করে আপনি অনেক ভালো উপকার পাবেন সেক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো দাঁতে কিছুটা ছোপ পড়তে পারে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url