কিসমিস খেলে কি হয় - কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা
কিসমিস হলো শুকনো আঙ্গুর। এটিকে ইংরেজিতে রেইসিনও বলা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এই কিসমিস উৎপাদন করা হয়। কিসমিসের বিভিন্ন গুনাগুনের ফলে এটি দিয়ে অনেক খাদ্য তৈরী করা হয় যা অনেক সুস্বাদু হয়। কিসমিস সরাসরিও খাওয়া যায় কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
অনেকেই কৌতুহল নিয়ে জানতে চান।কেননা কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন। কিছু কিছু খাবার সুস্বাদু হওয়ার পেছনে কিসমিসের ভূমিকা থাকে বেশি। কিসমিস টক আবার মিষ্টি হয়ে থাকে সেটা ফল অনুযায়ী হয়। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সকলেরি জানা উচিৎ কেননা এটা অনেক উপকার করে। এটি ক্যালরির চমৎকার উৎস হিসেবে কাজ করে আসছে আদিম কাল থেকে। সাধারণত ইরান, ইরাক, পাকিস্তান ও ভারতে জন্মে থাকে।
কিসমিস মূলত তৈরী করা হয় রোদে শুকিয়ে কিংবা ওভেনে। তাপে ফ্রুক্টোজগুলো জমাট বেঁধে তৈরী হয় কিসমিস। মহিলারা বেশিরভাগ রক্তস্বল্পতায় ভোগেন। ডাক্তার তাদেরকে পরামর্শ দেন কিসমিস খাওয়ার জন্য। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তাদেরকে ডাক্তার অবগত করেন। কেননা এই খাবারটিতে রয়েছে হার্ট ভালো রাখার উপাদান, রয়েছে আয়রন এবং কার্বোহাইড্রেট। শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল বের করায় কিসমিসের ভূমিকা অনেক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কিসমিস খেলে কি হয় - কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা
- কিসমিস খেলে কি হয়
- কিসমিস কিভাবে তৈরি হয়
- কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
- বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
- কিসমিস খেলে কি ফর্সা হওয়া যায়
- শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
- প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
- কিসমিস ভিজিয়ে রাখার নিয়ম
- কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা
- আমাদের শেষ কথা
কিসমিস খেলে কি হয়?
কিসমিস খেলে কি হয়?নিয়মিত কিসমিস খেলে রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমান বেড়ে যায়। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে যারা জানতে চান তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য। কিসমিস খেলে কি হয় এই প্রশ্নের আরো উত্তম একটি তথ্য হলো রক্তের লাল কনিকা গুলো তৈরী করে। হজম শক্তিতে সাহায্য করে এই কিসমিস। তাই কিসমিসের উপকারিতা অনেক।
কিসমিস কিভাবে তৈরি হয়?
আঙ্গুর ফল শুকিয়ে করা হয় কিসমিস। রোদে শুকিয়ে কিংবা ওভেনে কিসমিস তৈরি করা যায়। কিসমিস কিভাবে তৈরি করা হয় এ বিষয়েও কৌতুহল অনেকের থাকে। রোদের তাপে বা ওভেনের তাপে আঙ্গুর ফলের ফ্রুক্টোজগুলো শুকিয়ে জমাট বেঁধে তৈরী হয় কিসমিস। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে যারা জানতে চান তাদের জন্য হয়তো বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে। কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় এটাও শেখা হলো।
আরও পড়ুনঃ টক দই এর উপকারিতা - গর্ভাবস্থায় টক দই খেলে কি হয়
যেহেতু ঘরে বসেই তৈরি করা যায় কিসমিস, তবে কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় তার কিছু বিষয় নিচে দেওয়া হলো:
উপকরণ গুলো হলোঃ
- নিজের ইচ্ছে মতো নেওয়া আঙ্গুর ফল।
- ভালো পানি।
- পানি ঝরানোর মতো একটি পাত্র।
- একটা সুতি কাপড়।
- পরিচ্ছন্ন একটা রান্না ঘর যদি ওভেনে তৈরি করা হয়। তা না হলে,
- একটি বড় পরিষ্কার ডালা। রোদে শুকানোর জন্য।
মাত্র এই কয়েকটি উপকরণ হাতের কাছে থাকলেই তৈরি করা যাবে কিসমিস। যারা কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় জানতে চায় আশা করা যায় তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
- একটা বড় পাতিলে পনি ফুটানোর জন্য দিতে হবে।
- ফুটন্ত পানিতে আঙ্গুর ঢেলে দিতে হবে।
- ফুটন্ত পানির পরিমান এমন হতে হবে যেনো আঙ্গুর গুলো পাতিলের চার পাশে ঘুরতে পারে।
- এক সময় আঙ্গুর গুলো সিদ্ধ হয়ে যাবে।
- আঙ্গুর ফলের একপাশ ফেটে গেলে বুঝতে হবে তা সিদ্ধ হয়ে গেছে।
- ঝুড়িতে নামিয়ে পানি ছেকে নিতে হবে।
- কোন একটা ঝাঁজরি তে সুতি কাপড়ের উপর পাতলা করে ছড়িয়ে দিতে হবে।
- ২-৩ দিন শুকানোর পরে তৈরি হয়ে যাবে কিসমিস।
তবে একটা বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যে, বেশিদিন রোদে শুকানো যাবে না।একটু ভেজা ভাব থাকলে ফ্যানের নিচে ছড়িয়ে রাখলেই হবে।
কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
কিসমিস খাওয়ার সঠিক বা নির্ধারিত কোন নিয়ম নেই। কিসমিস খাওয়ার নিয়ম নিয়ে অনেকের আগ্রহের শেষ নেই। তবে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়া যায়। কিসমিস অবশ্যই ধুয়ে খেতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ডার্ক চকলেট খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়েও অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে। কোন কিছুই বেশি ভালো নয় ২-৩ বার খাওয়া যাবে দিনে। তবে পরিমানের বাইরে নয়। কিসমিস খাওয়ার নিয়ম যতটা না জরুরি তার চেয়ে বেশি জরুরি হলো কিসমিসের সঠিক ব্যবহার। যা এই বিষয়টিতে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে।
বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার নিয়ম নিয়ে অনেক মায়েরা খুব চিন্তিত থাকেন। জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত একটি শিশুর প্রধান খাদ্য হলো তার মায়ের বুকের দুধ। ৬ মাসের পর থেকে শিশুকে বেশি নরম ও কম শক্ত খাবার খাওয়ানো হয়ে থাকে। বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে ডাক্তার রা বলেন ৮ মাসের পর থেকে তার খাদ্য তালিকায় এই কিসমিস রাখা যেতে পারে। রস, পিউরি, পুডিং ও ম্যাশিং ইত্যাদি খাবারের সাথে শিশুকে খাওয়াতে হবে নইলে গলায় আটকে যেতে পারে। বাচ্চাদের কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে খাওয়াতে হবে। তবে এক সাথে বেশি খাওয়ানো যাবে না।
কিসমিস খেলে কি ফর্সা হওয়া যায়?
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এর পাশাপাশি অনেকের চিন্তিত বিষয় হলো কিসমিস খেলে কি ফর্সা হওয়া যায়? কিসমিস পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কম আছেন। বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারে কিসমিসের ভূমিকা অতুলনীয়।
কিসমিস এ রয়েছে ভিটামিন এ এর উৎস যা ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে। কিসমিসে আছে রেসভেরাট্রোল নামক উপাদান।
কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে প্রশ্ন করার মানুষ খুব কম। তবে কিসমিস খেলে কি ফর্সা হওয়া যায় এটা অনেক সৌন্দর্য প্রিয় মানুষের প্রশ্ন থাকে। কিসমিসে আছে পটাশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান। এর ফলে অক্সিজেন প্রবাহ ভালো হয় তাই ত্বক উজ্জ্বল থাকে।
শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়?
শুকনো কিসমিস খেলে কি হয় এ কথার উত্তরে উঠে আসে অনেক খাবার ও পছন্দের কথা। তবে মূল কথা হলো শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়? কিসমিসের উপকারিতা অনেক এটা সকলেই জানে। শুকনো কিসমিস খেলে কি হয় এ কথাটি জানা জরুরি কেননা, প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে রয়েছে ২৯৯ কিলোক্যালরি শক্তি।
আরও পড়ুনঃ খেজুর খেলে কি হয় - খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
কার্বোহাইড্রেট ৭৯.১৮ গ্রাম, প্রোটিন ৩.০৭ গ্রাম, ফ্যাট ০.৪৬ গ্রাম, খাদ্যআঁশ ৩.০৭ গ্রাম, কোলেট ৫ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন ০.৭৬৬ মিলি গ্রাম, সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম . ৭৪৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১.৮৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস . ১০১ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২৯৯ মিলিগ্রাম। কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে যাদের এখনো চিন্তা নামক বিষয়টি ঘটে যাচ্ছে তারা কিসমিস খেলে কি হয় তা দেখতে পারেন। কিসমিস খেলে দেহের সকল চাহিদার ঘাটতি পূরণ হয়ে থাকে তা উপরিউক্ত তথ্যগুলো থেকেই বুঝা যায়।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত?
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত তা সঠিক সময়ে প্রয়োজনের তুলনায় বলা যেতে পারে তবুও সঠিক একটা মাত্রায় খেলে শরীর ভালো থাকে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। অতি মাত্রায় খাওয়া যাবে না।
শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি গুণ ঠিক রাখার জন্য দৈনিক ৮-১৫ টি কিসমিস খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত সেটা আপনার মানসিক স্থিতিশীলতার উপর অনেক সময় নির্ভর করবে।
কিসমিস ভিজিয়ে রাখার নিয়ম
এক কাপ পানিতে আট থেকে দশটি কিসমিস ভিজিয়ে রাখলে সারা রাতে এগুলো ভিজে গাঢ় হয়ে যাবে। গাঢ় যত হবে তার পুষ্টি গুণ ততই বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। সকালে খালি পেটে ঐ ভেজানো কিসমিস খেলে উপকার হবে অনেক। কিসমিস ভিজিয়ে রাখার নিয়ম ভালো করে জেনে নিলে সহজেই এর গুনাগুন পাওয়া যাবে।
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক কেননা কিসমিসের বিভিন্ন গুনাগুনের আরে বেশি ফল আসে ভিজিয়ে খেলে। কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়টি বুঝা যাবে খাওয়ার পর কেননা কিসমিস ভিজিয়ে খেলে তার উপকারিতা অনেক। রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। শরীরকে রাখে সতেজ। তাই কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা
কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে কিসমিস খাওয়া অতিব জরুরি। কিসমিসে যেমন রয়েছে উপকারিতা তেমনি রয়েছে কিছু অপকারিতা।
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা এর কিছু বিষয় নিচে তোলে ধরা হলো :
- দ্রুত দেহে শক্তি যোগায়
- রক্ত শূন্যতা দূর করে
- হজমে সহায়তা করে
- হাড়ের সুরক্ষা দেয়
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
- চোখের জন্য উপকারি
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- ইনফেকশন ঝুঁকি কমায়
- এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে
- কোলেস্টেরল হ্রাস করে
- ওজন বাড়াতে সাহায্য করে
কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা
- হজমে বিঘ্ন ঘটায়
- ওজন বাড়ায়
- ডায়াবেটিস বাড়ায়
- এলার্জি সমস্যার মাত্রা বাড়ায়
আমাদের শেষ কথাঃ কিসমিস খেলে কি হয় - কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের শেষ কথা হলো কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই আছে। শুধু যে কিসমিসে তা নয় সকল উপকারি খাবারেরও অপকারিতা রয়েছে যদি তা মাত্রার বাহিরে খাওয়া হয়ে থাকে। কিসমিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস যা
শরীরকে ভালো রাখার পাশাপাশি শরীরের সকল বিষয়ের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। তাই বলা যায় যে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই আছে তবে বুঝেশুনে খাওয়ার পেছনে নিজেকে আগে যাচাই করে খেতে হবে।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সকল ভালো জিনিস ভালো ফল দিয়ে থাকে। আমাদের শেষ কথা প্রয়োজন সকলের সচেতনতা।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url