বাতিঘর কি - বাতিঘর প্রকাশনী

বইপ্রেমী অথছ বাতিঘরের নাম জানা নেই এরকম মানুষ হাতেগনা দু চারজন হয়তো পাওয়া যেতে পার। বইপ্রেমী যারা আছেন তাদের প্রায় সকলেই বাতিঘর কি বা বাতিঘর প্রকাশনীর বিষয়ে মোটামুটি ধারণা রাখেন। আর যারা বাতিঘর কি বা বাতিঘর প্রকাশনী সম্পর্কে একেবারেই শূণ্যজ্ঞান তাদের জন্য আমরা আজকের আলোচনা সাজিয়েছি বাতিঘর কি- বাতিঘর প্রকাশনীই বা কি সেটা নিয়ে। 

যারা বাতিঘর বিষয় টিকে কেবল প্রকাশনী হিসেবেই চেনেন তারা কিন্তু নতুন কিছু জানতে যাচ্ছেন। চলুন তাহলে বাতিঘর কি বা বাতিঘর প্রকাশনী কি জেনে আসা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাতিঘর কি - বাতিঘর প্রকাশনী

বাতিঘর কি

বাতিঘর কথাটা বইপ্রেমী দের মুখ থেকে প্রায়ই শুনেছেন নিশ্চয়ই? শুনে মনে হয়েছে বাতিঘর কি জিনিস আসলে? বাতিঘর কি জানতে আগ্রহ হয়েছে নিশ্চয়ই? আজ জানাবো বাতিঘর কি- বাতিঘর প্রকাশনীই বা কি। বাতিঘর কি কেবলই একটি প্রকাশনি নাকি বাতিঘর হিসেবে অন্য কিছুর প্রচলিত নামকেই বেছে নিয়েছে বাতিঘর প্রকাশনী।

আরও পড়ুনঃ কিভাবে খেলে লেবু খাওয়ার উপকারিতা বেশি?

বাতিঘর হলো এমন এক ধরনের বিশালাকার মিনার আকৃতির দালান যা থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় আলো ফেলে সমুদ্রের জাহাজের নাবিককে দিক নির্দেশনা দেয়া হয় এবং সেই সাথে সমুদ্রের অগভীর অঞ্চল সম্পর্কে নাবিককে সতর্ক করা হয়। 

এছাড়া সমুদ্র সৈকতের যেসকল এলাকায় প্রচুর প্রবাল রয়েছে এবং যেসকল প্রবালের গঠন জাহাজের ক্ষতি সাধন করতে পারে এমন সব সৈকত চিহ্নিত করতে বাতিঘর ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ আমরা বলতেই পারি বাতিঘর নাবিকদের সম্মুখ পথ আলোকিত করার মাধ্যমে সঠিক পথ চেনায়!

প্রেরণার বাতিঘর

প্রেরণার বাতিঘর কথাটা শুনেছেন নিশ্চয়ই বহুবার? প্রেরণার বাতিঘর বিষয়টি কি জানেন? বাতিঘর কি - বাতিঘর প্রকাশনী সম্পর্কে যেহেতু জানছেন তাহলে জেনে রাখুন প্রেরণার বাতিঘর কি!

যুগে যুগে যে সমস্ত কালজয়ী মানুষ কিংবা প্রতিষ্টান আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছেন, নতুন ভাবে ভাবতে শিখিয়েছেন সমাজের অন্ধত্ব দূর করতে চেষ্টা করেছেন তাদেরই সম্মানার্থে নামের পাশে বিশেষ বিশেষণ হিসেবে যোগ করতে প্রেরণার বাতিঘর ব্যাবহার করা হয়।

বাতিঘর প্রকাশনী

বাতিঘর প্রকাশনী এখন এক নামে চেনা নাম। বাতিঘর প্রকাশনী শুরুর যাত্রাটা কেমন ছিলো? হুট করেই শুরু করেছিলো যাত্রা নাকি পেছনে কোনো গল্প আছে! বাতিঘর কি তো জেনেছি এবার নাহয় বাতিঘর প্রকাশনী নিয়ে গল্প চলুক।

১৯ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠান বাতিঘর কিন্তু শুরুতে প্রকাশনী ছিলো না। বাতিঘরের শুরুটা ছিলো চট্রগ্রামে। মাত্র ১০০ বর্গফুটের ছোট্ট বইয়ের দোকানটির জন্ম সাল ২০০৫। এরপর ঢাকার বাংলামোটরে বিশাল দোকান। বই তো বহু দোকান বিক্রি করে কিন্তু বাতিঘরের নাম এতো চাওর হলো কেন! বাতিঘরের অনন্যতা হলো এটি বই বিক্রির জন্য পাঠকে দেয় একটা দারুণ পরিবেশ।

আরও পড়ুনঃ অতিরিক্ত চিনি খেলে কি হয়

বসে নেড়েচেড়ে বই দেখার মতো করে বানানো বাতিঘর। এখানে রয়েছে লেখক কর্ণার যেখানে প্রায় প্রতিটি লেখকের নামে আলাদা আলাদা কর্ণার সেই সাথে তাদের প্রকাশিত প্রায় সমস্ত বই রাখার চেষ্টা করা হয়েছে,ইংরেজি সাহিত্যের জন্য আলাদা কর্ণার। বিষয়ভিত্তিক আলাদা কর্ণার করে সাজানো থাকে বই। বই কিনতে এসে পাঠকরা যদি আলাদা সময় কাটাতেন চান সেজন্য মিনি ক্যাফের ব্যাবস্থাও রয়েছে বাতিঘর।

এরুপ বাতিঘর শুধুই বই বিপণনেই থেমে থাকেনি বই প্রকাশও শুরু করেছে । প্রকাশনীর নাম বাতিঘর পাবলিকেশন্স।  কবিতা, গল্প-উপন্যাস, প্রবন্ধ জীবনী-স্মৃতিকথা, ইতিহাস, চারুকলা, সাক্ষাৎকার ও জার্নাল মিলে এরই মধ্যে ৫৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে। আরো ৩০টি বইয়ের কাজ চলছে। মেলায়ও আসছে তাদের বই।

বাতিঘরের স্লোগান- 'লেখকের জনপ্রিয়তা নয়, সাহিত্যের গুণগত মান।’

বাতিঘর ঢাকা dhaka

বাতিঘরের যে শৈল্পিক রুপ এটি একে অসাধারণ করে তুলেছে। বাতিঘরের যেকোন শাখাতেই আপনি যান না কেন এটি আপনাকে মুগ্ধ করবে। বাতিঘর কি - বাতিঘর প্রকাশনী কি এ সমস্ত কিছু জানার পরও বাকি রয়ে যায়। বাতিঘরটি দেখতে কেমন! চলুন জেনে নেই।

আরও পড়ুনঃ চিনি খেলে কি হয় - চিনি কি দিয়ে তৈরি হয়

বাতিঘর ঢাকা মূলত ঢাকার বাংলামোটরে জায়গা পেয়েছে। মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস ও স্থাপত্যশিল্প নানা কারুকার্যে উঠে এসেছে বাতিঘরে। নকশা করেছেন শিল্পী শাহীনূর রহমান। স্টেজ পরিবিবির মাজারের মতো আর দেওয়ানি আমের আদলে হয়েছে কাউন্টারটি। বই কিনতে গিয়ে এ এক দারুণ প্রশান্তি।

বাতিঘর চট্টগ্রাম

বাতিঘর চট্টগ্রামকে বাতিঘর প্রকাশনীর মাতৃ প্রতিষ্ঠান বললে ভুল হবে না। তবে বাতিঘর চট্টগ্রাম আর সেই ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটি নেই কিন্তু। দু হাজার  বর্গফুটের জায়গা নিয়ে বিশাকার জাহাজের আদলে তৈরি হয়েছে বাতিঘর চট্টগ্রাম।

মেঝেতে কাঠের পাটাতন,জাহাজের মতো বৃত্তাকার জানালা সমস্ত যেন মনে করাবে কোনো স্বপ্নপুরীর উদ্দেশ্যে পারি দিচ্ছে বিরাট কোনো জাহাজে। চট্রগ্রাম প্রেসক্লাবের নিচতলাতেই দেখা মিলবে এর,নকশা করেছেন শিল্পী শাহিনূর রহমান।

কুতুবদিয়া বাতিঘর

কুতুবদিয়া বাতিঘর, এ কিন্তু বাতিঘর প্রকাশনীর শাখা নয়। সেই যে শুরুতে বাতিঘর কি জানলাম! এটিই সেই আসল বাতিঘরের সবচেয়ে প্রাচীনতম  ঠিকানা। নাবিকদের পথ চেনাতে যে কটি বাতিঘর তৈরী করা হয়েছে সেগুলোর প্রথমটি স্থাপিত হয় কুতুবদিয়া দ্বীপে।

বাতিঘর সিলেট

 বাতিঘর কি - বাতিঘর প্রকাশনী কি, এর দুটি শাখার পরিচয় তো পেলাম। বাতিঘর কিন্তু ঢাকা আর চট্টগ্রামেই থেমে থাকেনি সিলেটেও  রয়েছে এর শাখা। বাতিঘর সিলেটো কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী নানা কিছুর আদল উঠে এসেছে বাতিঘর সিলেটে। ক্বীন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘরির রেপ্লিকা, চা পাতা তোলার ঝুড়ি এ সবেরই দেখা মিলবে বাতিঘর সিলেটে।

বাতিঘর রাজশাহী

বাতিঘর রাজশাহী কিন্তু সদ্যজাত। বাতিঘর কি - বাতিঘর প্রকাশনী কি এ সম্পর্কে জানার পর রাজশাহীবাসীদের বাতিঘর দেখা ভীষণ তেষ্টা পাবে সেই তেষ্টা নিবারণের জন্য এর ষষ্ঠ শাখা হিসেবে বাতিঘর রাজশাহীর উদ্বোধন হয় গত ২৪ জুন। রাজশাহীর সাহেব বাজারে এর অবস্থান।

আমাদের শেষ কথাঃ বাতিঘর কি - বাতিঘর প্রকাশনী

বাতিঘর কি- বাতিঘর প্রকাশনী কি এ নিয়ে বিস্তার  আলোচনা তো আমরা করলাম। বই কেনার এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশ,পাঠকের জন্য এতো অভিনবত্ব ফুটিয়ে বই বিক্রির চেষ্টা আর কোনো প্রতিষ্ঠান হয়তো করেনি। তাইতো বাতিঘর এতো আলোচিত। পাঠকে একটা অন্যভূবনে নিয়ে যায় বাতিঘর।

লেখক এবং পাঠদের মিলনমেলাও কিন্তু এই বাতিঘর বই কিনতে গিয়ে পছন্দের লেখদের আড্ডা দিতে পেয়ে যেতে পারেন বাতিঘরে। বাতিঘর আর অনন্যতার জন্য ভীষণভাবে প্রশংসার দাবি রাখে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url