দোয়া কবুল হওয়ার সূরা - দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল

দোয়া কবুল হওয়ার সূরা - দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল এ সম্পর্কে আমাদের সকলেরি যানা উচিৎ। প্রত্যেক ধর্মের অনুসারি গণ তাদের আশা পূরণের জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করে থাকেন। সকল ধর্মের শ্রেষ্ঠ ধর্ম হল ইসলাম।

পোস্ট সূচিপত্রঃইসলাম ধর্মের অনুসারীগণ  আল্লাহ ও তার নবী রাসুলগনের নির্দেশিত পথে সব সময় চলার চেষ্টা করেন সব সময়। মানুষ হিসেবে কমবেশি সবাই দোয়া করে,এটা অনেকটা স্বভাব জাত বিষয়।তবে দোয়া করার সময় বেশ কয়েকটি বিষয়ের প্রতি গভীরভাবে  খেয়াল রাখা দরকার। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টিকর্তা। তিনি আমাদের দোয়া করার জন্য বিভিন্ন শর্তাবলি ও আদব নির্ধারিত করে দিয়েছেন। 

আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) এর সময় কাল থেকে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সময় কাল পর্যন্ত বিভিন্ন কিতাব এবং বানী নাজিল  হয়েছে। দোয়া কবুল হওয়ার সূরা - দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল এই বিষয় গুলো সম্পর্কে সকল মুসলিম অবগত আছেন। কেননা ছোটবেলা থেকেই ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন নীতি অনুস্মরণ করে চলার জন্য  বাধ্য করেন ইসলামিক পরিবার গুলো। সেই পন্থা গুলো মেনে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ কিতাব আল কোরআনকে অনুসরণ করে জীবন অতিবাহিত করে থাকেন মুসলিম পরিবারের সদস্যগণ। 

জীবন পরিচালনার জন্য আল্লাহর  শ্রেষ্ঠ কিতাবের ভূমিকা অতুলনীয় যা শুধু  ঈমানদার ব্যক্তিগণ অনুভব  করতে পারেন।

لا إلهَ إلاَّ اللَّه وحْدهُ لاَ شَرِيكَ لهُ، لَهُ المُلْكُ، ولَهُ الحمْدُ، وَهُو عَلَى كُلِّ شَيءٍ قَدِيرٌ – سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ للهِ وَلَا إلَهَ إلّا اللهُ، وَاللهُ أكْبَر – وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إلَّا بِالله

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার; ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।

অনুবাদ: আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। তার জন্যই সকল রাজত্ব ও তার জন্যই সব প্রশংসা এবং তিনিই সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী।

দোয়া কবুলের ইস্তেগফার

দোয়া কবুল হওয়ার সূরা - দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল এ বিষয়ে অবগত  রয়েছেন বিশিষ্ট মাওলানা ও মুসুললি গণ। দোয়া কবুলের ইস্তেগফার করলে আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। 

পাপের সাগরে ডুবে থেকে মাঝে মাঝে মানুষ ভুলে যায় যে একদিন তাকে আল্লাহতালার সামনে দাঁড়াতে হবে। স্বীকার করতে হবে জীবনের সব কৃতকর্ম। মানুষ এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বর্তমান যে নিজের পাপ আচারের দিকে ফিরে তাকিয়ে একবার `আস্তাগফিরুল্লাহ` বলার সময় নেই।

অথচ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ) দৈনিক ১০০ বার ইস্তেগফার পাঠ করতেন। যার জন্য জান্নাত অবধারিত, দুধের চেয়েও সাদা যার জীবনের পাতা সেই মহামানব যদি প্রতিদিন ১০০ বার ইস্তেগফার পাঠ করেন তাহলে আমরা কিসের আশায় হাত পা গুটিয়ে বসে আছি? 

আরও পড়ুনঃ ইসলামের দৃষ্টিতে প্রেম | ইসলামিক প্রেম

দোয়া কবুলের ইস্তেগফার করা প্রত্যেক মুমিনের আবশ্যক।দোয়া কবুল হওয়ার সূরা -দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল এ সকল ধারণা মুসলমানগণকে জান্নাতের দিকে ধাবিত করার কাজগুলোর প্রতি অনুপ্রেরণা যোগাবে। যার মাধ্যমে ধীরে ধীরে সকল অপকর্ম ছেরে খারাপ মানুষ হলেও ভালো পথে ফিরে আসতে বাধ্য  হবে। 

তাই প্রত্যেক  মুমিনগনের জন্য ইস্তেগফারের ভূমিকা অতুলনীয়। যারা এখনো এ বিষয়ে ধারণা অর্জন করেনি তাদের জেনে নেওয়া আবশ্যক। 

দোয়া কবুল হওয়ার সূরা

আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য নির্দিষ্ট করে কোন সূরা প্রদান করেন নি। কিন্তু মানুষ যদি কোরআনের যেকোনো জায়গা থেকে পাঠ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করে তাহলে আল্লহ তার দোয়া কবুল করবেন।

দোয়া কবুল হওয়ার সূরা -দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল  এই বিষয়ের উপর মন দিয়ে শিক্ষা অর্জন করার জন্য দোয়া কবুল হওয়ার সূরা   নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন। তবে মাত্র কিছু মানুষ জানেন, 

আল্লাহর কাছে কিছু নির্দিষ্ট সময়ে দোয়া করলে সে সময় আল্লাহ দোয়া কবুল করার সম্ভবনা বেশি থাকে। 

সে সময় গুলো হচ্ছে-

১➤. ভোর রাতে ফজরের নামাজ অথবা ফজরের নামাজের পর।

২➤যেকোনো নামাজের সিজদায় দোয়া।

৩➤রোজা রাখা অবস্থায় দোয়া করা।

৪➤রোজা রাখার মাধ্যমে ইফতারি করার আগ মুহূর্তে ইফতার সামনে রেখে দোয়া করা।

৫➤কোন জায়গায় সফর অবস্থায় দোয়া করা।

৬➤ইকামত এবং আজানের মাঝামাঝি সময় দোয়া করা।

৭➤জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিবের মাঝামাঝি সময়ে দোয়া করা।

দ্রুত দোয়া কবুলের আমল

দ্রুত দোয়া কবুলের আমল সম্পর্কে যানা প্রোয়জন। কেনোনা আমরা মুসলিম। মুসলমান হিসেবে আমরা কম বেশি সবাই দোয়া করি। এটা অনেকটা স্বভাব যাত বিষয়। দোয়া করার সময় বেশ কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হয়। এগুলোকে আলেমরা দোয়া কবুলের শর্ত ও আদব বলে অভিহিত করেছেন। 

নিচে কিছু শর্ত ও আদব সম্পর্কে তুলে ধরা হলো

পবিত্রতা অর্জনঃ 

পবিত্রতা অর্জনের পর দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা সেই দোয়া কবুল করবেন। বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করাঃ বিনয়ের সঙ্গে দুহাত তুলে দোয়া করা। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত,হযরত (রাঃ) বলেন,

আল্লাহ তাআলার নিকট হাত তুলে হাতের তালু সামনে রেখে দোয়া করো। হাত উল্টো করোনা দোয়ার শেষে উত্তলিত হাত মুখ মন্ডলে বুলিয়ে নাও। `-  আবু দাউদ

আরও পড়ুনঃ পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম কয়টি - পবিত্রতা অর্জনের গুরুত্ব

মিনতি ভরা কন্ঠে দোয়া করাঃ

মিনতি ও নম্রতার সঙ্গে দোয়া তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। দাসত্বের পরিচয় প্রদানই ইবাদতের উদ্দেশ্য। অর্থাৎ নিজের অক্ষমতা ও অসহায়ত্ব এবং আল্লাহর অপ্রতিহত ক্ষমতা, অপার মহিমা ও প্রতাপ অন্তরে স্থান পাওয়া আবশ্যক। বিনতা ও নম্রতা দোয়ার মধ্যে যত অধিক হবে ততই মঙ্গল। 

দু'হাত তুলে দোয়া করাঃ 

হাদিস শরিফে বর্নিত আছে, দুহাত তুলে দোয়া করে দোয়া শেষে হাত দুটি মুখোমন্ডলে মুছে নিবে। হাদিস শরিফে বর্নিত আছে, `যে হাত আল্লাহর দরবারে উত্তলিত হয়, তা একে বারে শূন্য অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জা বোধ করেন।' 

আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরিফ সহ দোয়া করাঃ 

হযরত আবু সুলাইমান দারানি (রহ‚) বলেন, `যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করে তার উচিত, প্রথমে দরুদ পড়া এবং দুরুদ পড়ে দোয়া শেষ করা। কেনোনা আল্লাহ উভয় দুরুদ কবুল করেন।' -কিমিয়ায়ে সাআদাত।

দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল

দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল সম্পর্কে অনেকের মনে প্রশ্ন যাগে, তবে  সুনির্দিষ্ট এমন কোন আমল নেই যা করলে আপনার দোয়া নিশ্চিত কবুল হবে। বরং দোয়া কবুলের কিছু শর্ত রয়েছে। 

দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল নিয়ে বিভিন্ন বিষয় উঠে আসলেও দোয়া কবুলের কিছু শর্ত রয়েছে। সেগুলো পালন করাহলে আশা করা যায় আল্লাহ পাক আপনার দোয়া কবুল করবেন। আবার কিছু দোয়া কবুল হবে,কিছু দোয়ার ফল পরোকালে পাওয়া যাবে। বড় কোনো বিপদের সংকা থাকলে দোয়ার মাধ্যমে তা কেটা যায়। এই সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হয়।

আরও পড়ুনঃ মৃত ব্যক্তির গোসলের নিয়ম - মৃত ব্যক্তির দাফনের নিয়ম

দোয়া কবুলের কিছু শর্ত নিচে দেয়া হলঃ

  1. আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে না ডাকা।
  2. দোয়াতে মনোযোগ থাকা। 
  3. দোয়ার ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া না করা। 
  4. দোয়ার মধ্যে পাপের কিছু না থাকা। 
  5. আল্লাহর প্রতি ভালো ধারণা নিয়ে দোয়া করা। 
  6. খাদ্য (হালাল) পবিত্র হওয়া। 
  7. দোয়ার ক্ষেত্রে কোন সীমা লঙ্ঘন না করা। 
  8. ফরজ আমল বাদ দিয়ে দোয়াতে মুশকুল না হওয়া। 

 দোয়া কবুলের লক্ষণ

মানুষ স্রষ্টার কাছে দোয়া প্রার্থনা করে সকল সমস্যা উদঘাটনের জন্য। দোয়ার মাধ্যমে মানুষ তার পাপকে বিমোচন করে। তবে দুয়ার সঠিক হয়েছে কিনা তা বুঝা যায় কিছু কিছু সময় মানুষের আমলনামা দেখে। দোয়া কবুল হওয়ার কিছু লক্ষণ মাঝে মাঝে দেখা যায়। 

দোয়া কবুল হওয়ার কিছু লক্ষণ নিচে দেওয়া হলঃ

  1. দেহের পশম দাঁড়িয়ে যাওয়া,শিহরিয়ে না   উঠা। 
  2. চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়া। 
  3. ভয় লাগা, ভীতিসঞ্চয় হওয়া, অন্তরে পরিবর্তন হওয়া, অসাধারণ অবস্থার  সৃষ্টি হওয়া। 
  4. অন্তরের পরিবর্তনের পর প্রফুল্লতা অনুভব করা, হৃদয় ও মনের ক্লান্তি কেটে যাওয়া, আনন্দ ও খুশির মনোভাব সৃষ্টি হওয়া, সবকিছু হালকা -পাতলা ও ঝরঝরে মনে হওয়া এবং নিজের উপর থেকে যেন বিপদ কেটে যাওয়া উপলব্ধি করা। 

আমরা অনেকেই আল্লাহর কাছে ইবাদত করি। কিন্তু সন্দেহের মধ্যে থাকি যে, আমার প্রার্থনা আল্লাহ কবুল হয়েছে কিনা। তাই কতিপয় নিয়ম উপরে দেয়া হলো। যা দেখে বোঝা যাবে আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করেছেন কিনা। 

আমাদের শেষ কথাঃ দোয়া কবুল হওয়ার সূরা - দোয়া কবুলের পরীক্ষিত আমল

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সৃষ্টি করার সাথে সাথে আমাদের রিজিক বন্টন করে দিয়েছেন। তবে হ্যা আল্লাহ আমাদেরকে শুধু আহার নিদ্রা দিয়েই সৃষ্টি করেন নি।আমাদের সৃষ্টি করেছেন আল্লাহর ইবাদতের জন্য। আল্লাহ আমাদের পথ চলার সকল নিয়ম, আদেশ, নিষেধ, হালাল, হারাম বুঝে  জীনব অতিবাহিত করার জন্য। আমাদের শেষ কথা ধর্ম মেনে চলাই উত্তম পন্থা।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url