কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচা মরিচ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কারণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়লে তা আমাদের অনেক রকম অসুখের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। দিন অন্তত দু'টি করে কাঁচা মরিচ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

কারণ কাঁচা মরিচে আছে প্রচুর ভিটামিন-সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিটা ক্যারোটিন। কাঁচা মরিচ আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে তোলে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কাঁচা মরিচ এর ইংরেজি কি

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে আমরা জানব। শুরুতে জানব কাঁচা মরিচ এর ইংরেজি কি। কাঁচা মরিচ এর ইংরেজি  green chillies.

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ 

কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুন সম্পর্কে জানা কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাঁচা মরিচে আছে বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এন্ডোরফিনের মতো উপকারী পুষ্টিগুণ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। কাঁচা মরিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ক্যান্সার নিরাময় ও মানসিক অবসাদ কমাতেও শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কাঁচা মরিচ কি ভিটামিন 

কাঁচা মরিচ খাবেন আর কাচা মরিচ কি ভিটামিন জানবেন না তা কি করে হয়। তাই কাচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার এ পর্যায়ে আমরা জানব কাচা মরিচ কি ভিটামিন। কাঁচা মরিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। 

কাঁচা মরিচ ঝাল কেন হয়

কাঁচা মরিচ মানেই ঝাল, কাচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার এ পর্যায়ে আমরা জানব কাচা মরিচ ঝান কেন হয়। 

“ঝালের অনুভূতি তৈরি করে ক্যাপসাইসিন”- ব্যাখ্যা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের ফ্লেভার সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক ড. কিয়ান ইয়াং।মরিচ বিভিন্ন প্রজাতির হয়, বিভিন্ন আকারের হয়। একেক ধরনের মরিচের বৈশিষ্ট্য আলাদা হলেও যেটি প্রায় সব মরিচের মধ্যেই থাকে - সেটা হলো ঝাল।

মরিচ গাছের ভেতরে ‘ক্যাপসাইসিন’ নামে এক ধরনের রাসায়নিক উৎপন্ন হয়। মরিচ ঝাল লাগার কারণ হলো ক্যাপসাইসিনের উপস্থিতি।

আরও পড়ুনঃ কচু শাক খাওয়ার উপকারিতা

আমরা যখন ঝাল কোনও খাবার খাই, তখন মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন আমাদের মুখে থাকা ‘পলিমোডাল’ স্নায়ুকে (পলিমোডাল নসিসেপ্টর নার্ভস) উত্তেজিত করে তোলে।

এই পলিমোডাল স্নায়ুর কাজ হলো ব্যথা, তাপমাত্রা ও ঝাল শনাক্ত করা। এছাড়া এগুলো কত তীব্র সেই ধারণা সম্পর্কেও আমাদের মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় এই স্নায়ু।

ঝাল জাতীয় কিছু খাওয়ার সময় পলিমোডাল স্নায়ু উত্তেজিত হয় এবং দেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুর (সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম) মাধ্যমে মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায়। আমাদের মস্তিষ্ক সেই সংকেত বিশ্লেষণ করে সেটা কোন ধরনের অনুভূতি, তা আমাদের জানিয়ে দেয়।

মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন যখন স্নায়ুকে উত্তেজিত করে তোলে, তখন মস্তিষ্ক ঝালের মাধ্যমে সৃষ্ট ‘বার্নিং সেনসেশন’ বা ‘পুড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি’ চিহ্নিত করে।

আরও পড়ুনঃ মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার উপকারিতা

যখন খাবারের মাধ্যমে আমরা ক্যাপসাইসিন গ্রহণ করি, তখন সেটা আমাদের জিহ্বায় পেইন রিসেপ্টরগুলোর সাথে যুক্ত হয় , নির্দিষ্টভাবে বলা যায় টিআরপিভি ওয়ান রিসেপ্টরের সঙ্গে যুক্ত হয়। আর এটাই সেই জ্বলন্ত অনুভূতি তৈরি করে।

অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, মরিচের সবচেয়ে ঝাল অংশ হলো এর বীজ। প্রকৃতপক্ষে, মরিচের আগা থেকে নিচের দিকে বর্ধিত সাদা স্পঞ্জি স্তর বা প্ল্যাসেন্টাতেই উৎপন্ন হয় ক্যাপসাইসিন, আর এটা খেয়েই ঝাল লাগে।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার নিয়ম

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে জানুন কাচা মরিচ খাওয়ার নিয়ম। চলুন জানি - 

সুস্থ থাকতে প্রতিদিন নিয়ম করে ১টা থেকে ২টা কাঁচা মরিচ খাওয়া উচিৎ। সংখ্যাটি ন্যুনতম, এর মানে এই নয় যে কেবল ১-২ টিই খাবেন। তবে সংখ্যা অত্যাধিক ও হওয়া যাবে না। 

কাঁচা মরিচ বেশি খেলে কি হয়

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার এ পর্যায়ে আমরা জানব কাচা মরিচ বেশি খেলে কি হয়। সবুজ মরিচ বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে পাকস্থলী, লিভার এবং কিডনির ক্ষতি হতে পারে । এটি মস্তিষ্কের বিষাক্ততার দিকেও যেতে পারে।

কাঁচা মরিচ সংরক্ষণের উপায়

কাচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারী সম্পর্কে জানার এ পর্যায়ে আমরা জানব কাচা মরিচ সংরক্ষণের উপায়। 

কাঁচা মরিচ অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে রাখলে সহজে পচে না। যেভাবে অ্যালুমিনিয়ামের ফয়েলে টিফিন প্যাক করেন, সেভাবেই ফয়েল পেপারে বোঁটা ছাড়ানো মরিচ রাখতে হবে। দুই প্রান্ত ভালো করে মুড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দিলে দীর্ঘ সময় কাঁচা মরিচ ভালো রাখা সম্ভব।

ফ্রিজে কাঁচা মরিচ রাখার আগে প্রথমেই কিছু বিষয় মেনে চলুন। যেমন ঃ

  1. বাজার থেকে কেনা কাঁচা মরিচ প্রথমে ভালো পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে সেটা ভালোভাবে শুকানোর জন্য বাতাসে ছড়িয়ে দিন।
  2. এবার মরিচের বোঁটা ছিঁড়ে রাখুন। এতে কাঁচা মরিচ সহজে পচবে না। বোঁটাসহ মরিচ রাখলে ফ্রিজে তা পচে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
  3. বাইরে থেকে বাতাস ঢুকতে পারে না এমন কোনো বক্সে কাঁচা মরিচগুলো ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। এতে কাঁচামরিচ দীর্ঘদিন সতেজ থাকবে।
  4. অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলেও দীর্ঘদিন কাঁচা মরিচ ভালো থাকে। তাই দীর্ঘ সময় কাঁচা মরিচ সতেজ রাখতে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলেও মুড়িয়ে রাখতে পারেন।
  5. দীর্ঘ সময় ভালো রাখতে ফ্রিজে কখনো ভুলেও পলিথিনের ব্যাগে কাঁচা মরিচ রাখবেন না। এতে মরিচ দ্রুত নষ্ট হওয়ার সুযোগ পায়। সবুজ রংও মরিচ থেকে হারিয়ে যায়।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

এখন জানব আসল কথা কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা - 

  1. কাঁচা মরিচে আছে বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এন্ডোরফিনের মতো উপকারী পুষ্টিগুণ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। 
  2. কাঁচা মরিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ক্যান্সার নিরাময় ও মানসিক অবসাদ কমাতেও শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 
  3. কাঁচা মরিচের মধ্যে থাকা উপাদান রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। আর তাই কাঁচা মরিচ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সমানভাবে উপকারী। হৃদ্যন্ত্রও ভালো রাখে কাঁচা মরিচ। গবেষকরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমিয়ে দেয় সপ্তাহে চারবার কাঁচা মরিচ খেলে।

আরও পড়ুনঃ ডুমুর ফল এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ইতালিয়ান একাডেমির গবেষকরা বিষয়টি নিয়ে আট বছরের দীর্ঘ গবেষণা চালান। প্রায় ২৩ হাজার মানুষের খাবারের তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ করে তারা দেখেছেন, প্রতি সপ্তাহে যারা চারবার কাঁচা মরিচ খেয়েছিলেন, তাদের অকালমৃত্যু ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম থাকে।

কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক জানা হল। আরও কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে তা জানার চেষ্টা করুন।

আমাদের শেষ কথাঃ কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

আশা করি কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বুঝতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আমাদের দেশে সাধারনত কাঁচা মরিচের দাম খুব বেশি হত না । তবে বর্তমানে হুট হাট করেই অনেক দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

তাই আমাদের সবার উচিৎ আমাদের ছাদ বাগানে এই গাছ লাগানোর মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা পূরণ করা। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url