কলমের ইতিহাস - কলম কোন ভাষার শব্দ
"লেখাপড়া করে যে গাড়িঘোড়া চড়ে সে" শিশুকালে এই প্রবাদ শুনে শুনেই আমাদের বড় হওয়া। প্রবাদটি বুঝিয়েই দিচ্ছে জীবনে বড় হতে হলে লেখা পড়া জানতে হবে! লেখা বিষয়টির সাথে সরাসরি সংযোগ যে জিনিসটির সেটি হলো কলম। কলম ছাড়া কিন্তু এক বর্ণও লিখতে পারা যাবে না! আপনি কি কলমের ইতিহাস সম্পর্কে জানেন?
কলম কোন ভাষার শব্দ সেটা জানেন? কলমের ইতিহাস, কিভাবে কলম এলো,কলম কোন ভাষার শব্দ থেকে নামকরণ হলো এ সমস্ত নিয়েই আজ জানবো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কলমের ইতিহাস - কলম কোন ভাষার শব্দ
- কলমের ইতিহাস
- কলম কোন ভাষার শব্দ
- কলম কে আবিষ্কার করেন
- আমার একটি কলম আছে translation
- বাঁশের কঞ্চির কলম
- খাগের কলমের ইতিহাস
- পাইলট কলমের ইতিহাস
- জাপানি পাইলট কলম
- নলখাগড়ার কলম
- আমাদের শেষ কথা
কলমের ইতিহাস
এইযে কলম দিয়ে দিস্তার পর দিস্তা লিখে ফেলছেন,কলমের ইতিহাস কী জানেন আপনি? সমস্ত কিছু সৃষ্টির পেছোনোই তো একটা ইতিহাস থাকে! আর ইতিহাস লিখে সংরক্ষণের প্রধান মাধ্যম কলম সৃষ্টির ইতিহাসই জানা থাকবে না তা কী করে হয়!চলুন জেনে আসি কলমের ইতিহাস।
প্রাচীন মিসরীয়রা সর্বপ্রথম কলম আবিষ্কার করে বলে ধারণা করা হয়। তারা একটি কাঠির ডগায় তামার নিবের মত বা ধাতব কিছু একটা পড়িয়ে লেখা শুরু করে। প্রায় ৪’হাজার বছর আগে রীতিমতো লেখালেখি শুরু করে দিয়েছিল গ্রীকরা। তারা কলম তৈরি করত হাতির দাঁত বা এ জাতীয় কিছু দিয়ে। যার নাম ছিল স্টাইলাস।
আরও পড়ুনঃ লেবুর পুষ্টিগুণ - লেবুতে কি ভিটামিন থাকে
সেজন্য এখনো লেখার ধরনকে স্টাইল নামে অভিহিত করা হয়। এদিকে মধ্যযুগের পর যখন কাগজ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি হল তখন পাখির পালক এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়।
এরপর কালক্রমে নানা ধরনের কলম আসতে থাকে লেখার প্রয়োজনে। বর্তমানে এ সব কলমেরই বিবর্তিত রুপ হিসেবে আমরা ব্যবহার করছি বলপেন।
কলম কোন ভাষার শব্দ
কলমের ইতিহাস তো জানলেন, কিন্তু কলম কোন ভাষার শব্দ তা জানেন কি? বাংলার ওপর দক্ষতা যাদের আছে তারা হয়তো জানেন তবে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না কলম কোন ভাষার শব্দ। চলুন জেনে আসি কল্মের ইতিহাসের পর - কলম কোন ভাষার শব্দ।
কলম শব্দটি মূলত আরবি কলামুন থেকে উৎপত্তি হয়ে বাংলায় কলম হয়েছে। এটিকে আরবি শব্দ হিসেবেই ধরা হয়।
কলম কে আবিষ্কার করেন
অভিভাবকরা যখন পড়ার সময় বেশি বেশি লিখতে বলে তখন নিশ্চিয়ই মনে হয় এই কলম কে আবিষ্কার করেন! সে কলম বিষয়টি না বানালেই আজ লিখতে হতো না! কিন্তু কে তিনি যিনি এই যুগান্তকারী সৃষ্টিটি করেছেন, কলম কে আবিষ্কার করেন জানতে চান? কলমের ইতিহাস - কলম কোন ভাষার শব্দ তো জেনেছে। কলম কে আবিষ্কার করেন জেনে নেই এবার।
আরও পড়ুনঃ পান্তা ভাতের উপকারিতা ও অপকারিতা
লেখালেখির শুরুতে যে ধরণের কলম ব্যবহৃত হতো সেগুলার জন্য একক আবিস্কারক হিসেবে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে আমরা যে বলপেন ব্যাবহার করি সেটির আবিষ্কারক সম্পর্কে জানা গেছে।
সর্বপ্রথম বলপেন আবিষ্কার হয় ১৮৮৮ সালের ৩০ অক্টোবর। 'জন লাউড' নামক একজন মার্কিনি চামড়া ব্যবসায়ী ব্যবসার জন্য চামড়ার ওপর লেখার জন্য বলপেন আবিষ্কার করেন।
আমার একটি কলম আছে Translation
আমার একটি কলম আছে Translation জানেন তো এর? আমার একটি কলম আছে Translation হলো I have a pen.
কলমের ইতিহাস কিংবা কলম কোন ভাষার শব্দ সবই তো জানলাম। এবার বিভিন্ন ধরনের কলম সম্পর্কে একটু জেনে আসা যাক।
বাঁশের কঞ্চির কলম
কলমের ইতিহাসের সাথে বিভিন্ন ধরনের কলম সম্পর্কে জানতে চাই আমরা। আমরা বর্তমানে যে সমস্ত কলম ব্যবহার করি শুরুর দিকে কিন্তু এ ধরনের কলম ছিলো না। বাঁশের কঞ্চির কলমের নাম শুনেছেন?
কলমের বিবর্তন ইতিহাসে এমন একটি সময় ছিল যখন বাঁশের কঞ্চির কলমও তৈরি করা হত। বাঁশের কঞ্চিকে ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে এর এক প্রান্ত তীক্ষ্ণভাবে সূচালো করা হত। কঞ্চির মাঝখানের ফাঁকা অংশে খালি ভরে লেখালেখি করা হত। কালি শেষ হয়ে গেলে পুনরায় কালি ভরে নেয়া হত।
খাগের কলমের ইতিহাস
খাগের কলমের ইতিহাস জানা আছে? খাগের কলমের ব্যাবহারও কিন্তু ছিলো। খাগের কলমের ইতিহাস জেনে নেই।
খাগড়া একধরনের ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ। এটিকে অনেক সময় নলখাগড়া বলা হয়ে থাকে। এই খাগড়ার একদিকে সরু করে কেটে এই কলম তৈরি করা হতো। এই কলমের দৈর্ঘ্য সাধারণত ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি হতো। এর মাঝে ফাঁকা অংশ রাখা হতো কালি ভরার জন্য। একবার কালি ভরলে বেশ কয়েক পৃষ্টা অনায়াসেই লেখা যেত। সে সময় খাগের কলমেরও বিভিন্ন রকম প্রকার ছিল।
পাইলট কলমের ইতিহাস
পাইলট কলমের নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই? কলমের ইতিহাস জানবেন আর পাইলট কলমের ইতিহাস জানবেন না তা হয় কী করে! পাইলট কিন্তু আসলে কলমের একটি কোম্পানি। এটার বিস্তারিত জানি চলুন নিচের ধাপে।
জাপানি পাইলট কলম
কলমের প্রতি যাদের আগ্রহ জাপানি পাইলট কল সম্পর্কে তাদের জানা আছে নিশ্চয়ই। জাপানি পাইলট কলম তো বেশ বিখ্যাত। চলুন জেনে নেই এর সম্পর্কে।
পাইলট পেন কোম্পানির সূচনা ১৯১৮ সালের প্রাথমিক। এই প্রতিষ্ঠানটির মূল নাম "নামিকি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি" ছিল, যার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে র্যোসুকে নামিকি বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। নামিকি ম্যানুফ্যাকচারিং সংগঠনটি একটি ছোট্ট কারখানা হিসেবে শুরু হয়, যার লক্ষ্য ছিল উন্নতমানের কলমসহ লেখার যন্ত্রপাতি তৈরি করা।
আরও পড়ুনঃ কখন কিভাবে খেলে লেবু খাওয়ার উপকারিতা বেশি?
পাইলট পেন ব্র্যান্ড নামের পরিচিতি পান বছর ১৯৩৮ সালে। ব্র্যান্ডটি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং জাপানে উৎকৃষ্ট লেখার যন্ত্রপাতির সমার্থক হিসেবে পরিচিত হয়। সংস্থাটি সমস্যায় পড়ে সম্পদের অভাবে।পাইলট বেঁচে থাকতে সক্ষম হয় এবং যুদ্ধের পরে উৎপাদন পুনরায় শুরু করে।
যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে, পাইলট অবতরণ এবং নতুন প্রযুক্তি সংযুক্ত করে বিভিন্ন কলম মডেল পেশ করে। ১৯৬৪ সালে, পাইলট নিয়ে আসে দুনিয়ার প্রথম রিট্রাক্টেবল ফাউন্টেন কলম "ক্যাপলেস"। পাইলটের কলম এর মান এবং নতুনত্বের জন্য ভীষণভানে চর্চিত এবং জনপ্রিয় ছিলো।
নলখাগড়ার কলম
কলমের ইতিহাস জানতে এসে কলমের নানান ধরন সম্পর্কে জানছেন। একই কলম আবার ভিন্ন ভিন্ন নামেও পরিচিত। নলখাগড়া কলম সম্পর্কে শুনেছেন? নলখাগড়ার কলম কিন্তু আসলে খাগেড় কলমই। নলখাগড়া ঘাস থেকে যার উৎপত্তি।
আমাদের শেষ কথাঃ কলমের ইতিহাস - কলম কোন ভাষার শব্দ
কালের বিবর্তনে বহু ধরনের কলম আমরা দেখেছি। বর্তমানে প্লাস্টিক বডির যে বলপেন ব্যাবহার করা হয় এগুলা দামে সস্তা হলেও পরিবেশ বান্ধব নয়। গত কিছুদিন ধরেই কাগজের তৈরী কলমের আভাস পাওয়া যাচ্ছে,কেউ কেউ ব্যবহারও শুরু করেছেন। এটি যদি কার্যকরী হয় তাহলে হয়তো পরিবেশ বান্ধব এবং একই সাথে সস্তা দারুণ একটি কম্বিনেশন পাওয়া যাবে।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url