সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ ১টি আন্তর্জাতিক সংস্হা।জাতিসমূহের সংঘ বা লীগ অব নেশন্স । ১ম বিশ্বযুদ্ধ এর পরবর্তী  সময়ে এটি গঠন করা হয় বৈশ্বিক দেশ গুলোর মধ্যে শান্তি রক্ষার জন্য। পৃথিবীতে বৈশ্বিক শান্তি রক্ষার জন্য সর্বপ্রথম এই সংস্হা টি গঠন করা হয়। এর সদর দপ্তর জেনেভা, সুইজারল্যান্ড প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব ছিলেন এরিক ড্রামন্ড।

আজকে আমরা জানার চেষ্টা করেছি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে সেই সাথে এটি কেন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সেই সকল বিষয় নিয়ে ।

পোস্ট সূচিপত্রঃ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ কবে গঠিত হয়

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জানতে অনেকেরই ইচ্ছা হয়। প্রশ্ন জাগে  সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ কবে গঠিত হয়।

১৯২০সালের ১০ইজানুয়ারি প্যারিসে বৈশ্বিক শান্তি রক্ষার জন্য ১টি আলোচনা সভা করা হয়, তার ই ফলশ্রুতিতে এই সংস্হাটি গঠন করা হয়।

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জানি চলুন। 

সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তিপত্র  অনুযায়ী এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য

  1. সম্মিলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অসামরিকীকরণের মাধ্যমে যুদ্ধ এড়ানো। 
  2. সমঝোতা ও সালিশের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দ্বন্দ্বের নিরসন করা।

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য

কি ছিল সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

আরও পড়ুনঃ এমিলিয়ানো মার্টিনেজ কোন ক্লাব খেলে?

প্রধান উদ্দেশ্যঃ

  1. আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা।
  2. বিশ্বের সমস্ত জাতিকে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সম অধিকারের দাবিকে স্বীকৃতি দান করা।
  3. বিশ্বের অর্থনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সম্প্রসারণ করা।
  4. উপরিউক্ত উদ্দেশ্য গুলো রূপায়িত করার জন্য জাতিপুঞ্জ  একটি প্রধান কেন্দ্র হিসাবে কাজ করবে।

প্রস্তাবনার মধ্যে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের মূল লক্ষ্যগুলি সম্পর্কে আলােচনা করা হয়েছে । এগুলি হল—

  • ভাবীকালের যুদ্ধের নিগ্রহ থেকে আমাদের বংশধরদের রক্ষা করা ।
  • মৌলিক মানবাধিকার , প্রতিটি মানুষের মর্যাদা ও উৎকর্য এবং নারীপুরুষ ও ক্ষুদ্ৰবৃহৎ জাতি - নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকারের প্রতি পুনরায় গভীর আস্থা স্থাপন করা ।
  • আন্তর্জাতিক চুক্তি ও আন্তর্জাতিক আইনের দ্বারা উদ্ভূত বাধ্যবাধকতার প্রতি সুবিচার ও সম্মান প্রদর্শনের উপযােগী পরিবেশ সৃষ্টি করা ।
  • সামাজিক প্রগতি ও ব্যাপকতর স্বাধীন পরিবেশের মধ্যে থেকে জীবনযাত্রার মানােন্নয়ন ত্বরান্বিত করা ।

এইসব লক্ষ্য পূরণের জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলি  সহনশীলতার নীতি অনুসরণ ও সুপ্রতিবেশীসুলভ মনােভাব নিয়ে পরস্পর শান্তিতে বসবাস করবে ; 2 আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য নিজেদের শক্তি সুসংহত করবে । ৩ যৌথ স্বার্থরক্ষার প্রয়ােজন ছাড়া অন্য কোনাে কারণে সামরিক শক্তি প্রয়ােগ করবে না এবং 8 

আরও পড়ুনঃ কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সব মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির জন্য আন্তর্জাতিক সংগঠনকে কাজে লাগাবে । প্রস্তাবনায় একথাও বলা হয়েছে যে , সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সদস্য রাষ্ট্রগুলি পূর্বোক্ত লক্ষ্যসমূহের বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচেষ্টা চালাবে ।

এছাড়া লক্ষ্য গুলো হলো

  1. শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করন
  2. মাদক ও মানব প্রাচার রোধ।
  3. আদিবাসীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ।
  4. বৈশ্বিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ।
  5. অস্ত্র কেনাবেচা রোধ 
  6. ইউরোপের সংখ্যালঘু ও যুদ্ধবন্দীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ। 
  7. বৈশ্বিক শান্তি রক্ষা নিশ্চিত করন।

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কটি সংস্থা আছে

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জানার পথে চলুন জানি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সংস্থা সম্পর্কে। 

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সংস্থা ছিল আদতে মোট ৫৮টি। 

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য

প্রধান উদ্দেশ্য:

  1. আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা।
  2. বিশ্বের সমস্ত জাতিকে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সম অধিকারের দাবিকে স্বীকৃতি দান করা।
  3. বিশ্বের অর্থনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সম্প্রসারণ করা।
  4. উপরিউক্ত উদ্দেশ্য গুলো রূপায়িত করার জন্য জাতিপুঞ্জ  একটি প্রধান কেন্দ্র হিসাবে কাজ করবে।

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কার্যাবলী আলোচনা কর

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জানতে গিয়ে প্রশ্ন জাগে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের কার্যাবলী আলোচনা কর - এবার জানব তার উত্তর। 

জাতিপুঞ্জের এক এবং প্রধান কার্যাবলী ছিলো বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। বহু বছরের কূটনৈতিক শৃঙ্খল ভেঙে সম্পূর্ণ নতুন ও মৌলিক কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা হয় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ এর মাধ্যমে। সংস্থাটির কোন নিজস্ব সৈন্যবাহিনী ছিল না। বিভিন্ন কার্যাবলী যেমন  সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সংশোধন ও সংস্কার, অন্য দেশের ওপর অর্থনৈতিক শাস্তি আরোপ বা প্রয়োজনবোধে শক্তি প্রয়োগের বেলায় সংস্থাটি পুরোপুরি বৃহৎ শক্তিবর্গের ওপর নির্ভরশীল থাকত। 

অবশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে বৃহৎ শক্তিবর্গও বিভিন্ন প্রয়োজনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়। শাস্তিপ্রয়োগ বা অবরোধ আরোপ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আহত করতে পারে ভেবে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকে সংস্থাটি। ইতালো-আলবিসিনিয়া(বর্তমানে ইথিওপিয়া) যুদ্ধের সময় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ অভিযোগ করে যে ইতালীয় সৈন্যরা রেড ক্রসের মেডিকেল তাঁবুগুলোতে আক্রমণ চালিয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ টাইটানিক জাহাজ কেন ডুবেছিল

প্রত্যুত্তরে বেনিতো মুসোলেনিন বলেছিলেন "চড়ুই যখন চিৎকার-চেঁচামেচি করে তখন জাতিপুঞ্জ সরব হয়, কিন্তু ঈগল আহত হলে চুপ করে বসে থাকে।" সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ এর আর ও কিছু ব্যার্থতার জন্য এটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

অল্প কিছু সাফল্য ও শুরুর দিকে ব্যাপক ব্যার্থতার অন্যতম উদাহরণ ছিলো পুনরায় ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়া। স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ,জাপান সিনো যুদ্ধের মতো ৩টি ভয়াবহ যুদ্ধ থামাতে জাতিপুঞ্জ ব্যার্থ্য হয়। যার ফলে ১৯৪৭ সালে এটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। সর্বমোট ২৭বছর এই সংস্হাটি টিকে ছিলো।

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সংবিধান এর নাম কি

সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জানার পথে এবার আমরা জানব সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সংবিধান এর নাম কি। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সংবিধান এর নাম - দ্যা কোভেন্যান্ট যা ২৬টি নিবন্ধ নিয়ে গঠিত হয়।

আমাদের শেষ কথাঃ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য

এই সংস্হাটি মাত্র ২৭বছর টিকে ছিলো, বৈশ্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যার্থ এটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। বিভিন্ন উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে আগানোর সংবিধান থাকলেও এক সময় প্রতিষ্ঠান টি মুখ থুবড়ে পড়ে। তবে পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বৈশ্বিক শান্তি রক্ষাকারী কোন প্রতিষ্ঠান।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য কি, এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url