শবে কদর কি | শবে কদরের ফজিলত
শবে কদর বা ‘লাইলাতুল কদর’ হচ্ছে মুসলমানদের মহিমান্বিত রাত। রাতটি সবার কাছে সম্মান ও মর্যাদার। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এ রাত উম্মতে মুহাম্মদির জন্য শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। যা অন্য কোনো নবির উম্মতদের দেওয়া হয়নি। হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এ রাত। এ রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে বান্দা নিজেকে ক্ষমা প্রার্থনা করার সুযোগ পেতে পারে।
পোস্ট সূচিপত্রঃগুনাহ থেকে মাফ পেয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টিও অর্জন করতে সক্ষম। তবে এ রাতের রয়েছে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় কাজ। আজ আমরা শবে কদর কী এবং শবে কদরের ফজিলত গুলো জেনে নেবো।
শবে কদর কি | শবে কদর অর্থ কি
শবে কদর কি কিংবা শবে কদর অর্থ কি তা কি জানা আছে আপনার? শবে কদর কি এবং শবে কদর অর্থ কি আজ জেনে নিন।
আরও পড়ুনঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে কি হয়
শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, গুণাগুণ, সম্ভাবনা, ভাগ্য ইত্যাদি। তাই এই রাতটি মুসলমানদের জন্য ভাগ্য রজনী হিসেবে সম্মানিত।
শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদাপূর্ণ রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। লাইলাতুল কদরের রাত হচ্ছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম রাত।
শবে কদরের ফজিলত
শবে কদর অর্থ কি তা জেনে নিয়েছি। শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে কি জানা আছে আপনার? শবে কদরের ফজিলত গুলো জেনে নিন।
আরও পড়ুনঃ স্বপ্নে বরই গাছ দেখলে কি হয়
শবে কদর কুরআন নাযিলের রাত। এ রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কা মুকাররমার হেরা পর্বতের গুহায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে ফেরেশতাদের সরদার হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে রাহমতুল্লিল আলামিন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করেন।
এ কারণে আল্লাহ তায়ালা এ রাতের মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ রাতে মহান আল্লাহ উম্মতে মুহাম্মাদিকে হাজার মাসের ইবাদত-বন্দেগি ও আমলের সমান সাওয়াব দান করে। কুরআনুল কারিমের অন্য স্থানে এ রাতটিকে বরকতময় রাত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শবে কদরের রাতের দোয়া
শবে কদর কি জেনে নিয়েছি তবে শবে কদরের রাতের দোয়া কি জানা আছে? শবে কদরের রাতের দোয়া জেনে নিন।
আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন
শবে কদর নামাজের নিয়ম
শবে কদর কি কেবল সেটা জানলেই চলবে না। জানতে হিবে শবে কদরের নামাজের নিয়ম। তবে শবে কদরের বিশেষ কোনো নামাজের নিয়ম বা পদ্ধতি নেই। লাইলাতুল কদরের রাতে দুই রাকাত করে নফল নামাজ যত সুন্দর ও মনোযোগসহকারে পড়া যায় ততই ভালো।
আরও পড়ুনঃ বেতের নামাজের ফজিলত
দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করবেন, দোয়া পড়বেন, ইস্তেগফার পড়বেন ও তওবা করবেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।
শবে কদর নামাজের নিয়ত
শবে কদর নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয় জানেন কি? শবে কদর কি জানার পাশাপাশি এর নামাজের নিয়ম এবং শবে কদর নামাজের নিয়ত জেনে নিতে হবে।
নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল লাইলাতিল কাদ্রি নফ্লে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর।’
অর্থ: আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবে কদরের দুই রাকআত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবর।
শবে কদর ২০২৩ কত তারিখে
শবে কদর ২০২৩ কত তারিখে ছিলো জেনে নিন। ২০২৩ এর ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাত ছিল শবে কদরের রাত। কদর পালিত হয় ১৯ এপ্রিল বুধবার।
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত জানেন কি? শবে কদর কি বা শবে কদরের ফজিলত যেমন জানবো সাথে শবে কদরের নামাজ কত রাকাত জানতে হবে।
শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের নামাজের কোন নির্দিষ্ট রাকাত নেই। তাই শবে কদরের জন্য যত ইচ্ছা তত নফল নামাজ আদায় করতে পারেন, তবে শবে কদরের নামাজ গুলো দুই রাকাত করে নফল নামাজ আদায় করতে হবে এবং এই নামাজ গুলো যত সুন্দর করে পড়া যায় তত বেশি সওয়াব লাভ করা যায়।
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, শবে কদরে হজরত জিবরাইল (আ.) ফেরেশতাদের বিরাট এক দল নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং যত নারী-পুরুষ নামাজরত অথবা জিকিরে মশগুল থাকে, তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন। (তাফসিরে মাজহারি)।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যদি কেউ লাইলাতুল কদর খুঁজতে চায় তবে সে যেন তা রমজনের শেষ দশ রাত্রিতে খোঁজ করে। (মুসলিম, হাদিস নং : ৮২৩)। তাই ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ রমজানের রাতগুলোকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
কোরআন হাদিসের আলোকে শবে কদর
মহান আল্লাহর তায়া'লা কদরের রাতকে সম্মানিত করেছেন পবিত্র কুরআন মাজীদ নাজিলের মাধ্যমে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়া'লা 'কদর' নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরাই নাজিল করেছেন। মহান আল্লাহ তায়া'লা বলেন
“নিশ্চয় আমরা কুরআন নাযিল করেছি 'লাইলাতুল-কদরে'; আর আপনাকে কিসে জানাবে 'লাইলাতুল কদর' কী? 'লাইলাতুল- কদর' হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফিরিশ্তাগণ ও রূহ নাজিল হয় তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে। শান্তিময় সে রাত, ফজরের আবির্ভাব পর্যন্ত।" [সূরা আল- কদর]
আমাদের শেষ কথাঃ শবে কদর কি | শবে কদরের ফজিলত
ইসলামে এ রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তাই পবিত্র এ রাতে আল্লাহর নৈকট্য ও রহমত লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআন নাজিল হয়েছিল রমজান মাসের লাইলাতুল কদরে। এ রাতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url