রেশম চাষ কোন জেলায় হয়
রেশম চাষ সম্পর্কে আমাদের অনেকেই অজানা। আপনি যদি রেশম চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন। একজন সফল উদ্যোক্তা কিভাবে হওয়া যায় রেশম চাষের পদ্ধতি, রেশম চাষের খরচ।
পোষ্ট সূচিপত্রঃকোন জেলায় রেশম চাষ ভালো হয়, রেশম চাষের ওপর বিজ্ঞান কি বলেছে এবং রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কি কি তা আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব।
রেশম চাষ পদ্ধতি
আপনারা যদি রেশম চাষ করতে চান তাহলে অবশ্যই রেশন চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। তাহলে চলুন রেশম চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানি-
প্রথমত তুত পাতা সংগ্রহ করাঃ
অনেকের বাসায় তুত গাছের বাগান থাকে সেইখান থেকেও আমরা সংগ্রহ করতে পারি। কারণ রেশম চাষের জন্য তুত পাতা প্রথমে দরকার। রেশম চাষের এটি একটি মূল উপাদান।
দ্বিতীয় তো রেশমের লার্ভা সংগ্রহ ও প্রতিপালনঃ
আমরা যদি ভালোমতো রেশম চাষ করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদের লার্ভা সংগ্রহ ও প্রতিপালন করার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। ভালো মানে লার্ভা সংগ্রহ করতে হবে তবেই ভালোভাবে পালন করা যাবে।
আরো কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল জীবাণমুক্ত বাসস্থান। যে জায়গায় লার্ভা পালন করা হবে সেই জায়গাটি অবশ্যই পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত হতে হবে। যে সকল জিনিসপত্র আমরা লার্ভার কাজে ব্যবহার করব সেগুলো অবশ্যই শুকিয়ে রাখতে হবে। তারপর ঘরে থাকা ফরমালিনযুক্ত পানি স্প্রে করতে হবে। একবার স্প্রে করার পর 24 ঘন্টা সেই ঘরটি বন্ধ রাখতে হবে।
তৃতীয়ত হল ভালোভাবে ডিম ফুটানোঃ
আমরা যদি ভালো ডিম সংগ্রহ করতে পারি তবে আমাদের লার্ভাটি ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই বের হয়ে যাবে। তারপরে ডিমের তাপমাত্রা সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে। তাপমাত্রাটি ৮০% হতে হবে। তবে সেগুলো ভালো থাকবে। তারপরে ফরমালিনযুক্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে ডিম গুলোকে।
সবকিছু ঠিকমত থাকলে ডিম গুলোর উপর কালো সিট পড়তে কমপক্ষে ৮ থেকে ৯ দিন সময় লাগবে। সেই সময় অবশ্যই দিনগুলোকে ঢেকে রাখতে হবে। তারপর ডিম থেকে লার্ভা বের হয়ে যাবে।
রেশম চাষ কোন জেলায় হয়
রেশম চাষ কোন জেলায় হয় তা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানবো। আমরা সকলেই জানি রেশম চাষ করার জন্য রাজশাহী জেলাটি বিখ্যাত। তবে সব রকম জেলায় রেশম চাষ করা হয়। এর মধ্যে অনেক জেলায় রেশম চাষ করা হয়েছে সেই জেলাগুলো হল চাঁপাইনবাবগঞ্জ ,পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও গাজীপুর।
তবে রাজশাহীতে রেশম চাষের অনেক সুবিধা রয়েছে। তাই বলা হয় রাজশাহী রেশম চাষ করার জন্য বিখ্যাত। কারণ একমাত্র রাজশাহীতেই রেশমের কারখানায় যত কাপড় তৈরি করা হয়। এটি অনেকদিন যাবত বন্ধ ছিল কিন্তু ২০১৮ সালে নতুন ভাবে আবারো চালু করা হয়।
রাজশাহীতে রেশন কারখানার অনেক প্রচলন রয়েছে। এখানে বিভিন্ন ধরনের কাপড় পাওয়া যায় । সাধারণত বিভিন্ন উৎসব ঈদ পুজো এসবে ভরপুর ভাবে তৈরি করা হয়। কারণ আমাদের বাঙালি জাতির উৎসব দিন দিন বেড়েই চলেছে সেক্ষেত্রে কাপড়ের পরিমান টা একটু বেশি প্রয়োজন হয়। আশাকরি রেশম চাষ কোন জেলায় হয় সে সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত দিতে পেরেছি।
রেশম চাষ বিজ্ঞান
বর্তমানে রেশম চাষ এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। রেশম চাষে বিজ্ঞানের অবদানও দেখা যায়।কিভাবে রেশম চাষ করলে ভালো সুতা লাভ করা যাবে এসব তো বিজ্ঞান এর গবেষণা এর মাধ্যমে জানা যায়। আবার রেশম পোকার কোন রোগ হলে ওটা থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায় সেটিও বিজ্ঞানে এর মাধ্যমেই জানা সম্ভব।
এছাড়াও বিজ্ঞানের এর গবেষণার এর মাধ্যমেই জানা সম্ভব হয়েছে যে কিভাবে উন্নত ভাবে রেশম এর চাষ করা যাবে। আবার কিভাবে অধিক পরিমানে সুতা লাভ সম্ভব এসব বিজ্ঞান এর গবেষণা এর ফল।
রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব
রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ অনেক বেশি। সঠিকভাবে রেশম চাষের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দারিদ্রতা দূর করতে পারি। অধিকাংশ গ্রাম বাংলার জনগোষ্ঠীর জন্য নিজস্ব একটি আয়ের ব্যবস্থা করে দিতে পারে। আমরা যদি রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করি তাহলে আমাদের সামনে অনেক কিছুই তুলে ধরা লাগবে।
আমরা অল্প কিছু পুজির মাধ্যমে এই রেশম চাষের ব্যবসাটি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আমাদের জনগোষ্ঠী ও সমাজের জন্য অনেক কল্যাণকর হয়ে উঠতে পারে। আমরা যদি আমাদের সমাজটাকে নিজেরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি তাহলে অনেক কিছু করা সম্ভব যেমন ১ থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে যদি আমরা এই রেশম চাষের কাজটি শুরু করতে পারি তাহলে পরবর্তী সময়ে আরো বেশি টাকা দিয়ে আমরা আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
তারপরে আরো কিছু টাকা ইনভেস্ট করার মাধ্যমে একটি কারখানা গড়ে উঠতে সক্ষম হবে। তাই আমাদের সমাজকে আমাদের নিজেদেরই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যদি আমরা নিজে থেকে আমাদের সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই তাহলে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব দিক দিয়ে মান টা আরো বেড়ে যাবে।
আমাদের শেষ কথা
ইতিমধ্যে আমরা রেশম চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনেছি। রেশম চাষ কোন জেলায় হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের কাজে লাগবে।
আপনারা যদি রেশম চাষ নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে চান তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ুন। ইনশাআল্লাহ আপনাদের সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টা করেছি। নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url