তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
তেজপাতা কমবেশি সবাই আমরা চিনি। অনেকেই জানে না তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা। সবাই এইটাই জানে যে তেজপাতা শুধু রান্নার কাজে ব্যবহার হয়।
পোস্ট সূচিপত্রঃতাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জানাবো তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা আশা করি শেষ পর্যন্ত থাকবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
তেজপাতা ইংরেজি | তেজপাতা english name
তেজপাতা ইংরেজি | তেজপাতা english name সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। তেজপাতা হল এক প্রকারের উদ্ভিদ। এটির পাতাকে আমরা সাধারণত মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকি।এটির একটি বৈজ্ঞানিক নামও আছে। সেটি হল Cinnamomum tamala। এটির ইংরেজিতে নাম হলো Bay leaf. এরই মাধ্যমে আমরা তেজপাতা ইংরেজি বা তেজপাতা english name সম্পর্কে জানলাম।
তেজপাতার ব্যবহার
তেজপাতার ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক সুগন্ধিযুক্ত পাতা হলো তেজপাতা। এটি একটি ঔষুধি পাতাও। এর উল্লেখ্যযোগ্য কিছু ব্যবহার রয়েছে। এইগুলো হল
- প্রাচীন গ্রিকে এটি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হত।
- রান্নার কাজে মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
- তেজপাতা হজমে সাহায্য করে।কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে স্বাভাবিক হজমশক্তি ফিরিয়ে আনতে তেজপাতা ব্যবহার করা হয়।
- তেজপাতায় থাকে রুটিন আর ক্যাফেক এসিড।এটি হার্টকে ভালো রাখে।
- তেজপাতায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও মাইক্রোব্যাকটেরিয়াল থাকে। তাই ক্ষত সারাতে ভালো কাজ করে তেজপাতা।
- গলাগল খুশখুশ ও কাশিতেও তেজপাতা ব্যবহার করা হয়।
- তেজপাতা বিভিন্ন ব্যথা যেমন-বাতব্যথা,মাথাব্যথা ইত্যাদি উপশমেও তেজপাতা ব্যবহার করা হয়।
- তেজপাতা ক্যান্সার বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা হয়।
- কিডনির পাথর এর চিকিৎসায় তেজপাতা ব্যবহার করা হয়।
- চুলের বৃদ্ধি ও খুশকি দূর করতেও তেজপাতা ব্যবহার করা হয়।
এরই মাধ্যমে আমরা তেজপাতায় ব্যবহার সম্পর্কে জানলাম।
তেজপাতার উপকারিতা কি
তেজপাতার ব্যবহার সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনেছি এবার চলুন তেজপাতার উপকারিতা কি সে সম্পর্কে জেনে আসি। তেজপাতার অনেক উপকারি দিক আছে। সেগুলো হলো
- তেজপাতা বুকে জমে থাকা কফ বের করতে সাহায্য করে।
- রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
- বদ হজমের এর সমস্যায়ও এটি উপকারি।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
- চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে।
- আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
- তেজপাতা জীবাণুনাশক হিসেবেও উপকারি।
এরই মাধ্যমে আমরা তেজপাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম।
তেজপাতা খাওয়ার নিয়ম
তেজপাতা খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে। সেগুলো সম্পর্কে আমাদের জানা থাকলে অনেক ভালো হয়।
- তেজপাতা একটু গরম জলে ফেলে ফুটিয়ে সেই জল ছেঁকে খাওয়া যায়।
- তরকারিতেও তেজপাতা দিয়ে খাওয়া যায়।
- আবার একটি পাত্রে জল ফুটতে দিয়ে তাতে কয়েকটা তেজপাতা দিতে হবে।ফুটন্ত জলের বাষ্প নাক মুখ দিয়ে নিলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
- তেজপাতার চা বানিয়েও খাওয়া যায়।
এভাবে নানাভাবে খাওয়া যায় তেজপাতা। এরই মাধ্যমে আমরা তেজপাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানলাম।
তেজপাতা কিভাবে খেলে কি হয়
তেজপাতা কিভাবে খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। মূলত তেজপাতা চা খাওয়াই বেশি উপকারি। একটি প্যানে ৩ থেকে ৪ টি তেজপাতা দিয়ে তাতে ১ বা ২ কাপ জল দিতে হবে।আর ৫ মিনিট পর্যন্ত ফুটাতে হবে। এবার তা নামিয়ে হাল্কা গরম অবস্থায় বা ঠান্ডা অবস্থায় দুই ভাবেই খাওয়া যাবে।
আরও পড়ুনঃ লাউ এর উপকারিতা ও অপকারিতা
এভাবে তেজপাতার চা খেলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।গলা খুশখুশ করলে এটি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। হজম ক্ষমতাও ভালো হবে। কোলেস্টেরল দূর করতেও সাহায্য করবে। আবার তেজপাতা সিগারেট এর মতো পুড়িয়ে ধোয়া ভেতরে নিলে ঠান্ডা কাশির থেকে রেহাই মেলে। এর মাধ্যমে তেজপাতা কিভাবে খেলে কি হয় কি সম্পর্কে জানলাম।
চুলের জন্য তেজপাতার উপকারিতা
চুলের জন্য তেজপাতার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। চুলের যত্নেও তেজপাতার উপকারিতা আছে। সেগুলো হলো
- মাথার খুশকি দূর করতে এটি সহায়ক।
- প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবেও তেজপাতা ভালো কাজ করে।
- চুল পড়া বন্ধ করতে তেজপাতা ব্যবহার করা যায়।
- মাথায় চুলকানি থাকলে তেজপাতা ব্যবহার করলে তা কমে যায়।
- উকুন এর সমস্যা দূর করতে তেজপাতা সহায়ক।
এরই মাধ্যমে চুলের জন্য তেজপাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম।
তেজপাতার বিড়ির উপকারিতা
তেজপাতার বিড়ির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। তেজপাতার তৈরি বিড়ি হলো একটি ঘরোয়া টোটকা। এটি মূলত কাশি কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে না।তেজপাতা খুব সহজেই রেস্পিরেটরি সিস্টেমকে পরিষ্কার করে। তেজপাতার বিড়ির ক্ষেত্রে প্রথমে ২টি তেজপাতা নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
একটিকে আরেক টির উপর রাখতে হবে।এবার দুইটিকে আস্তে আস্তে সরু করে মুড়িয়ে ফেলতে হবে। এবার সুতা দিয়ে বেধে ফেলতে হবে। রোল করা তেজপাতার মাথায় আগুন লাগিয়ে নিভিয়ে দিতে হবে। এরপর পিছন দিকে মুখ লাগিয়ে আস্তে আস্তে ধোয়া নিতে হবে। এটির কাশির কমাতে দ্রুত কাজ করে। এরই মাধ্যমে তেজপাতার বিড়ির উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম।
তেজপাতার অপকারিতা
তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটাই আছে। তেজপাতার তেমন অপকারিতা নেই। তবে কিছু কিছু অপকারিতা আছে। তেজপাতা বেশি খেলে বেশি ঘুম আসতে পারে।যা স্বাস্থ্য এর জন্য ভালো না। আবার শ্বাস-প্রশ্বাস ধীর হতে পারে।তাছাড়াও গর্ভাবস্থায় তেজাপাতা না খাওয়া ভালো।কেননা তেজপাতা শরীর গরম করে।
যা মা ও শিশুর জন্য ভালো না।মূল কথা হল কোন কিছু অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না। অতিরিক্ত খেলেই এর ক্ষতিকর দিক এর সম্মুখীন হতে হবে। এরই মাধ্যমিক তেজপাতার অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম।
আমাদের শেষ কথা
ইতিমধ্যে আমরা তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসলাম। আপনাদের কাছে এই টপিকটি নতুন হতে পারে তবে এই টপিকটি জেনে রাখা অত্যন্ত দরকার। এমনই আরো নতুন নতুন টপিক পেতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখুন ও আমাদের আর্টিকেলগুলো পড়ুন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url