বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন
বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। শসা হলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং চাহিদা সম্পন্ন একটি সবজি। আপনি যদি বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? এ বিষয় নিয়ে চিন্তিত হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলে বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আপনি যদি বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? না জেনে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন
- বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন
- হাইব্রিড শসার চাষ পদ্ধতি
- শসার বীজ লাগানোর নিয়ম
- বারোমাসি শসার জাত সমূহ
- বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেনঃ শেষ কথা
বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন
আমরা জানি যে শসা সাধারণত গরমের সময় পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে সকল সবজি কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাওয়া যায় না এখন সারা বছর এ সকল সবজি বাজারে পাওয়া যায়। যেমন টমেটো হল শীতকালের সবজি কিন্তু টমেটো এখন সারা বছর পাওয়া যায়। সাধারণত এগুলো সারা বছরই চাষ করা হয়ে থাকে তাই আপনি যদি বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? এ বিষয়ে চিন্তিত হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্য।
আরো পড়ুনঃ মসুর ডালের ১০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেনঃ
জমি তৈরিঃ বারো মাসী শসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলো দোআঁশ এবং এঁটেল দোআঁশ মাটি। সাধারণত এই মাটিতে শসার খলন ভালো হয়ে থাকে। মই দিয়ে ভালোভাবে জমির মাটিগুলোকে জোর করে করে নিতে হবে এবং আগাছা থাকলে সম্পূর্ন ভালোভাবে পরিষ্কার করে জমি তৈরি করতে হবে। জমিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা যেন উন্নত মানের থাকে এই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মাঁদা তৈরিঃ আপনি যদি শসার ভালো ফলন পেতে চান তাহলে আপনাকে মাদা ভালোভাবে তৈরি করতে হবে। ৫০-৮০ সেন্টিমিটার চওড়া এবং গভীর গর্ত করে তৈরি করতে হবে। সাধারণত এটি তৈরি করার সময় একটা থেকে আরেকটা দূরত্ব হতে হবে ২ সেন্টিমিটার মত।
বীজ বপনের সময় এবং পরিমাপঃ উপযুক্ত সময় আমাদেরকে বীজ বপন করতে হবে এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আপনি যদি চান তাহলে বছরের যে কোন সময় এই বীজ বপন করতে পারবেন। তবে যখন অতিরিক্ত শীত থাকবে তখন শসার বীজ বপন করা থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে। সাধারণত ১ একর জমিতে ২০০-৩৫০ গ্রাম বীজ গোপন করা যাবে।
সার ব্যবস্থাপনাঃ যে কোন ফসলের ভালো ফলন পেতে হলে আমাদেরকে সারব্যবস্থাপনা সঠিক রাখতে হবে। এরপর প্রতি গোবর সার দিতে হবে দুই টন, খৈল দিতে হবে ১১৩ কেজি, টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে ৬০ কেজি, এমপি সার প্রয়োগ করতে হবে ৪০ কেজি, ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে প্রায় 40 কেজি। বীজ বপন করার ৬-৭ দিনের মধ্যেই সার প্রয়োগ করতে হবে।
পোকামাকড় দমনঃ বিভিন্ন ধরনের রোগ শসা গাছের আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে আপনাকে এই বিষয়গুলোর প্রতি ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। সাধারণত গান্ধী পোকা এবং বিটল পোকা গাছের পাতা খেয়ে ফেলে এছাড়া ফুলের রসগুলোকে চুষে খেয়ে ফেলে এবং এগুলোকে দুর্বল করে দেয় সাধারণত এখান থেকে গাছগুলোকে বাঁচাতে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।
হাইব্রিড শসার চাষ পদ্ধতি
আশা করি আপনারা বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? এ বিষয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। আপনাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা হাইব্রিড শসা চাষ করতে চাই। আপনি যেই শসা চাষ করুন না কেন যদি এর সঠিক পদ্ধতি জানা থাকে তাহলে খুব সহজেই চাষ করতে পারবেন এবং ভালো ফলন পেয়ে যাবেন। হাইব্রিড শসার চাষ পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হলো।
জলবায়ু এবং মাটিঃ সাধারণত যে অঞ্চলে তাপমাত্রা খুবই কম থাকে বিশেষ করে শীতের সময় সাধারণত সেখানে শসা চাষ করা মারাত্মক ক্ষতি করে। আপনি যদি শসা চাষ করতে চান তাহলে আপনাকে একটি উপযুক্ত তাপমাত্রার মধ্যে চাষ করতে হবে। সাধারণত যেখানে দিনের বেলায় তাপমাত্রা থাকে ২৫-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবং হাইব্রিড শসা চাষ করার জন্য আপনাকে দোআঁশ এবং এঁটেল দোআঁশ মাটি নির্বাচন করতে হবে।
জমি নির্বাচন এবং মাটি তৈরিঃ আমরা ইতিমধ্যেই বলেছি যে হাইব্রিড শসা চাষ করার জন্য প্রয়োজন দোআঁশ এবং এঁটেল দোআঁশ মাটি। এবং জমি নির্বাচন করার সময় আপনাকে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন শেষ এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো থাকে। আপনি ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে আরো জমিতে এসে পড়ে। এরপরে আপনাকে মাটি তৈরি করার জন্য ভালোভাবে মই দিয়ে মাটি গুলোকে ঝড়ঝড়া করতে হবে। কোন ধরনের আগাছা জমিতে রাখা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ লেবু খাওয়ার ৩০ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
বীজ বপণের সময়ঃ আপনি যদি চান তাহলে হাইব্রিড শসা সারা বছর চাষ করতে পারবেন এটি কোন সমস্যা নেই। তবে আপনাকে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যে যখন বাংলাদেশে অতিরিক্ত পরিমাণে শীত পড়ে তখন শসা চাষ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। কারণ এই সময় ফলন খুবই কম হয়ে থাকে তাই আপনি লোকসানের মুখে পড়তে পারেন।
মাদা তৈরিঃ যদি আপনি শসার ভালো ফলন পেতে চান তাহলে আপনাকে আগে থেকেই মাদা তৈরি করে রাখতে হবে। সাধারণত এর ব্যাস হবে ৫০ সেন্টিমিটার এবং গভীরতা হবে একই সমান। এটি তৈরি করার সময় একটি থেকে আরেকটি দূরত্ব হবে ২ সেন্টিমিটার।
শসার বীজ লাগানোর নিয়ম
শসার ভালো ফলন পেতে হলে আমাদেরকে শসার বীজ লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ এই নিয়ম জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই শসা লাগাতে পারব এবং এখান থেকে ভালো ফলন পেতে পারবো। আমরা ইতিমধ্যেই শসা চাষের উপযুক্ত সময় এবং বীজ লাগানোর উপযুক্ত সময় সম্পর্কে জেনেছি। তবুও চলুন আরেকবার এ বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
অনেকেই বীজ বপনের উপযুক্ত সময় খুঁজে থাকে তাদেরকে বলে রাখি যে আপনি সারা বছর শসার বীজ লাগাতে পারবেন এতে কোন সমস্যা নেই। তবে বাংলাদেশে যখন অতিরিক্ত শীতকাল পরে সাধারণত তখন শসার বীজ লাগানো থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এই সময় অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে সূর্যের আলো ভালো মতো মাটিতে পৌঁছায় না যার ফলে সরকার ভালো ফলন হয় না।
বীজ লাগানোর সময় আপনি এক হেক্টর জমিতে ২০০-৩০০ শসার বীজ বপন করতে পারবেন। শসার বীজ লাগানোর পূর্বে আপনাকে ২৪ ঘন্টা পানিতে শসার বীজগুলোকে ভিজিয়ে রাখতে হবে যেন অঙ্কুরোদন ভালো হয় এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি আপনি ভালো ফল পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে শসার বীজ বপন করার সময় মাদা তৈরি করে গোপন করতে হবে।
বারোমাসি শসার জাত সমূহ
আমরা ইতিমধ্যেই বারোমাসি শসা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করেছি। যারা শসা চাষ করে থাকে অথবা যারা নতুন শসা চাষ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে এসে তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শসার বেশ কিছু জাত রয়েছে চলুন শসার জাত সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
শসার জাত গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ডেইজি, নভেলা, সুইটি সাধারণত এগুলোকে উন্নত জাতের শসা বলা হয়ে থাকে। বারো মাসে শসার মধ্যে দুইটি জাত রয়েছে সাধারণত এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পটিয়া জয়েন্ট। আশা করি আপনারা শসা চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন।
বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেনঃ শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে বারো মাসী শসা কিভাবে চাষ করবেন? হাইব্রিড শসার চাষ পদ্ধতি, শসার বীজ লাগানোর নিয়ম, বারোমাসি শসার জাত সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু শসা আমাদের কাছে অতি পরিচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান তাই এটি চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আশা করি আপনারা যারা শসা চাষ করতে চান তারা এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আরো পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২৫৪২৭
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url