চুল পড়ার কারণ কি - অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
দীঘল ঘন কালো চুল প্রতিটি নারীর স্বপ্ন। সৌন্দর্যের অনেকখানি নির্ভর করে চুলের ওপর। পুরুষের ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই, তাই চুলের টাক দূর করার ওষুধের দোকান খুলে বস্লেই পুরুষরা যেনো ঝাপিয়ে পড়ে যাচাই বাছাই ছাড়াই। কারণে অকারণে চুল পড়ে যাওয়ার কারণ কী?অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধানই বা কী আমরা এসব নিয়ে নিজেরা কখনো জানতে চেষ্টা করেছি কী?
চুলের সৌন্দর্য রক্ষায় সেলুন কিংবা পার্লারে না ঘুরলে নিজেরা একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু জেনে যেতে পারি চুল পড়ার কারণ অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান।চলুন আজ নাহয় জেনে নেয়া যাক চুল পড়ার কারণ এবং অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
পোস্ট সূচিপত্রঃ চুল পড়ার কারণ কি - অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
চুল পড়ার কারণ | চুল পড়ার কারণ কি
চুল আমার সকলেরই খুব যত্নের জিনিস,কিন্তু বহু চেষ্টা করেও চুল পড়া যখন বন্ধ হয় না তখন মন টা ভার হয়ে থাকে।চুল পড়ার কারণ কী আসলে?এই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধানই বা কী!চুল পড়ার কারণ আসলে একটু দুটি তো নয় অসংখ্য রয়েছে। ক্যান্সার পেশেন্ট দের কেমোথেরাপি দেয়ার পর যেমন চুল পড়ে যায় সাইড ইফেক্ট হিসেবে।
কিন্তু এ তো জানা বিষয়, কিন্তু নিত্যদিনই সুস্থ মানুষের চুল পড়ার কারণ কী সেটা আমাদের জানা দরকার। চুল পড়ার কারণ জানলে তবেই না অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান বের করা সম্ভব অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন চুল পড়ার কারণগুলোর একটি। যাদের শরীরে এই হরমোনের প্রভাব বেশি, তাদেরই বেশি করে চুল পড়ে। ছত্রাক সংক্রমণ বা খুশকি হলো চুল পড়ার অন্যতম কারণ।
শরীরের পুষ্টির ওপর চুলের স্বাস্থ্য নির্ভর করে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় আমিষ, শর্করা, চর্বি, খনিজ ও ভিটামিন পরিমিত পরিমাণে না থাকলে চুল পড়ে যায়। এ ছাড়া শরীরে দীর্ঘদিন কোনো একটি উপাদানের অভাবে চুল পড়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ কিভাবে ব্রণ দূর করা যায় | দ্রুত ব্রণ দূর করার উপায়
দুশ্চিন্তায় ভুগলে বা মানসিক সমস্যা থাকলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চুল পড়তে পারে। তবে এ চুল পড়া সাময়িক এবং পুনরায় চুল গজায়। তবে দীর্ঘদিন মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকলে বা দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠতে না পারলে অনেক বেশি চুল পড়ে যেতে পারে।
হরমোনের কমবেশি হওয়ার কারণে চুল উঠে যেতে পারে। যেমন: থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা কম বা বেশি হলে, গর্ভবতী অবস্থায় এবং বাচ্চার জন্মের পর হরমোনাল ভারসাম্য পরিবর্তিত হয় বলে তখন চুল বেশি পড়ে।
চুলের বিশেষ কোনো স্টাইলের জন্য যদি দীর্ঘদিন খুব টেনে চুল বাঁধা হয় বা টাইট করে খোঁপা বা ব্যান্ড করা হয়, তবে এ ধরনের চুল পড়া শুরু হয়। দীর্ঘদিন এক রকম চুল বাঁধার কারণে চুল পড়া পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে যায় না। ফলে টেনে বাঁধার কারণে এ চুল পড়া স্থায়ীভাবে চুল পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। খুব বেশি পরিমাণে চুল রঙিন করার প্রসাধন, চুল সোজা করা বা ক্রমাগত রিবন্ডিং করলে চুল পড়ার হার বেড়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ ময়েশ্চারাইজার বানানোর নিয়ম
অ্যানিমিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস ইত্যাদি অসুখে চুল পড়ে যেতে পারে। অনেক সময় অসুখ ভালো হওয়ার পরও চুল আর আগের অবস্থায় ফিরে যায় না।
কোনো কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল পড়তে পারে, যেমন: জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি, প্রেসারের ওষুধ, রক্ত তরলীকরণের ওষুধ, হরমোন, মানসিক অসুস্থতার ওষুধ ইত্যাদি।
তবে ওপরের চুল পড়ার কারণগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই প্রতিরোধযোগ্য। সঠিক উপায়গুলো জানা থাকলে আমরা সহজেই চুল পড়া রোধ করতে পারি।
অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ
অনেকের খুব অল্প বয়স থেকে চুল পড়ে যেতে থাকে। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। আমরা হয়তো ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক হিসেবেই নেই। কিন্তু অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ কী সেটা না জানলে অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধানই বা কিভাবে বের করবেন! অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান আমরা সবাই চাই কিন্তু চুল পড়ার কারণ গুলো খুঁজতে চাই নাই। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ অনেকরকম হয়ে থাকে,কারণ গুলো একবার জেনে নেয়া যাক
- অল্প বয়সে চুল উঠে যাওয়া এবং টাক পড়ার একটা বড় কারণ হতে পারে অতিরিক্ত স্ট্রেস।
- চুলের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারণেও তা উঠে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত ব্লিচিং, ডাই করার কারণেও চুল উঠে যেতে পারে।
- কম বয়সে চুল উঠে যাওয়ার অন্যতম কারণ অস্বাস্থ্যকর ডায়েট।
- টক্সিন এবং অতিরিক্ত দূষণ চুলের গোড়া দুর্বল করে দেয়। এর ফলে চুল আঁচড়াতে গেলেই তা উঠে যেতে থাকে।
- হরমোনের পরিবর্তন, থাইরয়েড এবং বিভিন্ন রোগের কারণেও চুল উঠতে পারে।
মেয়েদের চুল পড়ার কারণ কি
চুল মেয়েদের ভীষণ প্রিয়,চুলের কোনো সমস্যায় নারীর চোখের ঘুম কিন্তু হারাম হয়ে যায়। মেয়েরা চুলের ঝড়ে পড়া নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় থাকে। কিন্তু মেয়েদের চুল পড়ার কারণ কি আসলে
মেয়েরা চুলের কাটিং কিংবা স্টাইল নিয়ে সচেতন থাকে বটে কিন্তু মেয়েদের চুল পড়ার কারণ কি সেটা নিয়ে তারা সচেতন নয়। মেয়েদের চুল পড়ার কারণ জানলে তবেই তাদের অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান হিসেবে কী করতে হবে সেটা বুঝতে পারবে। কারণ সবার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান কিন্তু এক ভাবে হয় না।
চলুন মেয়েদের চুল পড়ার কারণ গুলো কি জেনে নেই
- নারীর মেনোপজের সময় ও পরে অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন আনুপাতিক হারে বেড়ে যায়। তখন হঠাৎ চুল বেশি করে পড়তে শুরু করে।
- শারীরিক অসুস্থতা। যে কোনো অস্ত্রোপচারের পর, রক্তস্বল্পতা, ওজন কমে যাওয়া, হজমের সমস্যা
- মানসিক চাপ, অতিরিক্ত কর্মব্যস্ততা
- থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যা
- পলিসিসটিক ওভারি,মূত্রনালির প্রদাহ
- গর্ভাবস্থা, পরিবার পরিকল্পনার জন্য পিল খাওয়া
- ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া
- অতিমাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ গ্রহণ, উচ্চরক্তচাপের ওষুধ গ্রহণ
- মেয়েদের চুল পড়ার কারণ হিসেবে এগুলোকেই নির্দেশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ছেলেদের চুল পড়ার কারণ কি
চুল পড়ে গেলে একটা সময় ছেলেদের মাথায় টাক হয়ে যায়। ছেলেদের জন্য টাক মাথা যে কী ভয়াবহ যন্ত্রণার সেটা কেবল টাক মাথার ছেলেরাই জানে। কিন্তু ছেলেরা কী জানে ছেলেদের চুল পড়ার কারণ কি? ছেলেদের চুল পড়ার কারণ কি তা জেনে সহজেই কিন্তু অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান জেনে নিতে পারে। এতে মাথায় টাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে আসবে।
অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন যেমন টেস্টোস্টেরন, অ্যান্ড্রোস্ট্রেনডিয়ন, ডিএইচটি হরমোনগুলো সাধারণত পুরুষের বেশি থাকে। এ হরমোনগুলো হেয়ার ফলিকলের ওপর কাজ করে ও চুল পড়া ত্বরান্বিত করে। সে কারণে পুরুষের চুল বেশি পড়ে।
আরও পড়ুনঃ রূপচর্চায় তুলসী পাতার উপকারিতা
- দুশ্চিন্তায় ভুগলে বা মানসিক সমস্যা থাকলে, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে চুল পড়তে পারে। বিক।
- বংশে আপনজনদের কারো এই সমস্যা থাকলে উত্তরাধিকার সূত্রে এই সমস্যা পেয়ে যান অনেকে। অনেকের বংশগত কারণে মাথায় টাক পড়ে।
- প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাবেও চুল পড়তে পারে। অনেকসময় দূরারোগ্য কিছু রোগে আক্রান্ত হলেও প্রচুর চুল পড়ে।
- চুল পড়ার প্রত্যক্ষ কারণের একটি খুশকি। অ্যালার্জি বা চর্মরোগ থাকলে এটা আরো বেশি হয়।
- অ্যালকোহল, ড্রাগস এসবের আসক্তি মাথার মূল্যবাণ চুলগুলোকে অসময়ে কেড়ে নিতে পারে।
অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা করলাম এখন এই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান জানতে হবে তো?কেবল চুল পড়ার কারণ জেনে
বসে থাকলেই তো চুল পড়া কমবে না,অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ বের করে সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।চলুন অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান জেনে নেই
চুল পড়া বন্ধ করার জন্য কি কি খেতে হবে
চুল পড়া বন্ধের জন্য নানা রকম কারসাজি করি আমরা,কিন্তু আমাদের খাদ্যাভ্যাসে কিছু জিনিস রাখলেই কিন্তু চুল পড়ার একটা দারুণ সমাধান হিসেবে কাজ করবে। চুল পড়ার কারণ আমরা জেনেছি এখন অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান নিয়ে আলোচনা করছি।
অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান কিন্তু খাবারের অভ্যাস বদলেও সম্ভব। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য কি কি খেতে হবে সেটা আগে জানা দরকার।আমরা অনেকেই জানি না চুল পড়া বন্ধ করার জন্য কি কি খেতে হবে।চলুন চুল পড়া বন্ধ করার জন্য কি কি খাবার খেতে হবে সেটা জেনে নেই।
প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে দুই ধরনের প্রোটিন আছে যেমন- প্রাণিজ ও উদ্ভিজ প্রোটিন। ১ম শ্রেণির প্রোটিন যেমন ডিম, দুধ, মাছ প্রতিদিন খাবেন এবং মাংস সপ্তাহে দুদিন খাবেন। ২য় শ্রেণির প্রোটিনের মধ্যে আছে ডাল, কোনো লিজিউম জাতীয় খাবার যা চুল গজাতে সাহায্য করবে। দুধ যেহেতু আদর্শ খাবার তাই প্রতিদিন দুধ পান করবেন।
আরও পড়ুনঃ রূপচর্চায় নিম পাতার ব্যবহার
বায়োটিনযুক্ত খাবার চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। বায়োটিন সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আছে কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, টমেটো ও পালং শাকে। বায়োটিন যুক্ত খাবার চুলকে করে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল, ঘন ও মসৃণ।
সামুদিক মাছ, কাঠবাদাম, আখরোট, ডিম, অলিভ ওয়েল ইত্যাদিতে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ যুক্ত ফ্যাটি এসিড আছে যা চুলের হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক রাখে, চুল পড়া রোধ করে এবং ফাংগাল ইনফেকশন থেকে চুলের স্কাল্পকে রক্ষা করে।
চুল পড়া বন্ধ করতে কোন ভিটামিন খেতে হবে
অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান হিসেবে আমরা অনেক কিছু চেষ্টা করি,কিন্তু বিভিন্ন ভিটামিনের অভাবে যে চুল পড়ার কারণ সেটার কোনো সমাধান আমরা করি না।চুল পড়া বন্ধ করতে কোন ভিটামিন খেতে হবে সেটা জেনে নেবো।
যেকোনো মাছের তেলে ভিটামিন ‘ই’ থাকে। ভিটামিন-‘ই’ চুলের হরমোনাল বৃদ্ধি করে। ভেজিটেবল ওয়েল যেমন অলিভ ওয়েল, সরিষার তেল, সূর্যমুখীর তেল ইত্যাদিতে ভিটামিন-ই আছে। যেকোনো বাদামে ভিটামিন-ই আছে। ভিটামিন ‘ই’ যুক্ত খাবার চুলকে করে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল, ঘন ও মসৃণ।
সূর্যের আলো চুলের জন্য অনেক উপকারী। বিশেষ করে চুলে যখন সরাসরি রোদ পড়ে চুলের স্কাল্প সহজেই তখন ভিটামিন-ডি পায় এবং এতে চুল পড়া বন্ধ হয়। তাই প্রতিদিন প্রায় ৫-৮ মিনিট সকালের রোদে দাঁড়িয়ে থাকবেন। এছাড়াও টকদই, পনির, ছানা, দুধ, কাঠবাদাম, পালং শাক, সামুদ্রিক মাছ, শুঁটকি মাছ ইত্যাদিতে ভিটামিন-ডি আছে। ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে চুল পড়া বন্ধ হয়।
আরও পড়ুনঃ মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
ভিটামিন সি চুলের জন্য উপকারী। আমলকীতে আছে ১০০% ভিটামিন সি আছে। প্রতিদিন সকালে একটি করে আমলকী খাবেন এতে করে চুলের ফাংগাল ইনফেকশন হওয়া থেকে রোধ পাওয়া যাবে, চুল সুন্দর ও মসৃণ হবে। চুলের পুষ্টি অ্যাবসরবেশনের জন্য ভিটামিন সি এর প্রয়োজন আছে যেমন লেবু, কাঁচামরিচ, কাঁচা আম, লিচু, পেয়ারা, বাতাবী লেবু, তেঁতুল, যেকোনো টক জাতীয় ফল ইত্যাদি।
ভিটামিন-‘এ’ চুলের জন্য ভালো। ভিটামিন-‘এ’র মধ্যে মিষ্টিআলু, গাজর ইত্যাদি চুলের জন্য উপকারী। এতে থাকা বিটা ক্যারোটিন চুলকে সুন্দর ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। যেকোনো শাক এবং ভিটামিন-এ যুক্ত সবজি তেলের সাথে রান্না করলে সহজেই শোষিত হয় এবং চুল পড়া রোধ করে নতুন করে চুল গজাতে সাহায্য করে।
চুল পড়া কমানোর ওষুধ
অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান হিসেবে আমরা চুল পড়া কমানোর ওষুধ খুঁজে থাকি। চুল পড়া কমানোর ওষুধ হিসেবে যেগুলো আমরা ব্যাবহার করি সেগুলো কী আসলেই কার্যকরী?
চুল পড়ার চিকিৎসার জন্য এখন মাত্র দুটি ওষুধ প্রচলিত আছে। একটি হচ্ছে মিনোক্সিডিল - যা পুরুষ ও মহিলা সবাই ব্যবহার করতে পারেন, আর অন্যটি হচ্ছে ফিনাস্টেরাইড - যা শুধু পুরুষের জন্য।
তবে এ দুটি ওষুধের প্রতিটিরই কিছু না কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, এবং সবার ক্ষেত্রে এগুলো সমান কার্যকর হয় না ।
চুল পড়া বন্ধ করার তেল
চুল পড়ার কারণ নিয়ে আমরা যতটা দুশ্চিন্তায় থাকি তেমনি উৎকন্ঠায় থাকি অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান করবো কিভাবে তা নিয়ে। চুল পড়া বন্ধের নানান টোটকা রয়েছে।চুল পড়া বন্ধ করার তেল খুঁজে বেড়াই আমরা।আজ চুল পড়া বন্ধ করার তেল সম্পর্কেও জানিয়ে দেবো আপনাদের।
রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল রক্তনালী প্রসারিত করে এবং কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে চুল গজাতে সাহায্য করে। এটি স্কাল্পে অক্সিজেন সরবরাহ করে পুষ্টি যোগায়। এটি চুল ঘন করে। নারকেল তেলের সঙ্গে ৫-৬ ফোঁটা রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে স্কাল্পে লাগাতে হবে। এটি ১০-১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
লেমনগ্রাস এসেনশিয়াল অয়েল খুশকি কম করতে সাহায্য করে। চুল পড়ার অন্যতম কারণ হল খুশকি। লেমনগ্রাসের সুগন্ধ অত্যন্ত প্রশান্তিদায়ক এবং এটি ড্রাই স্কাল্পের সমস্যা দূর করে। নিয়মিত যে শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার করা হয় তার সঙ্গে ৩-৪ ফোঁটা লেমনগ্রাস এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে যেসব খাবার খাবেন
বার্গামট এসেনশিয়াল অয়েল অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান সম্পন্ন এবং একটি স্বাস্থ্যকর স্কাল্পের জন্য উপযোগী তেল। এটির প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য স্কাল্প ঠাণ্ডা রাখে, ফোঁড়া বা অতিরিক্ত ঘামের মতো সমস্যা কম করে। প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশনও চুল পড়ার জন্য দায়ী হতে পারে। নারকেল তেলের সঙ্গে ৩-৪ ফোঁটা বার্গামট মিশিয়ে স্কাল্পে লাগাতে হবে। তার পরে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
ভবিষ্যতে চুল পড়া রোধে সাইডার উড তেল ব্যবহার করা হয়! এই অপরিহার্য তেল স্কাল্পে তেল উৎপাদনকারী গ্রন্থিগুলির ভারসাম্য বজায় রাখে, চুলের জন্য দরকারি ব্যাকটেরিয়াকে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেয়। এই তেলে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে যা খুশকি এবং শুষ্ক এবং ফ্ল্যাকি স্কাল্পের সমস্যা দূর করে। এই তেলটি স্কাল্পের স্বাস্থ্য বজায় রেখে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। নারকেল বা ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে ৩ ফোঁটা সাইডারউড এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে স্কাল্পে লাগাতে হবে।
চুল পড়া রোধ করতে বেশ কার্যকর আমলকীর তেল। চুল পড়া প্রতিরোধে এই তেলটি ব্যবহার করতে পারেন। খুব সহজে মাত্র দুটি উপাদান দিয়ে এই তেলটি তৈরি করা সম্ভব।এক কাপ নারকেল তেল ৪-৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে এর সাথে শুকনো আমলকী দিয়ে দিতে হবে। আমলকীসহ এই তেল জ্বাল দিয়ে বাদামী রং হয়ে আসলে চুলা থেকে এটি নামিয়ে ফেলতে হবে। এরপর তেলটি ছেঁকে আমলকী থেকে আলাদা করে নিয়ে তেলটি মাথায় কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করতে
চুল পড়ার ইসলামিক চিকিৎসা
ইসলামে আমাদের জীবন ব্যাবস্থার যাবতীয় কিছু তুলে ধরা হয়েছে। সেকারণে চুল পড়ার ইসলামিক চিকিৎসার কথাও বলা হয়েছে, অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান হিসেবে চুল পড়া ইসলামিক চিকিৎসাও কিন্তু নিতে পারি আমরা।
কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা চুল পড়া রোধে ইসলামিক সমাধান আছে।
সূরা বাকারাহ ৭১ নাম্বার আয়াত
মুসাল্লামাতুল্ লা-শিয়াতা ফীহা
আয়াতটি পড়ার আগে দুরুদ শরীফ ও আউযুবিল্লাহ হিমিনাশ শাইত্বনের রজীম। বিসমিল্লাহ হির রহমানের রহীম পড়ে শুরু করতে হবে । এরপর আয়াতটি পড়তে হবে। আয়াত পড়ার পর আবার দুরুদ শরীফ পড়তে হবে। পড়ে তেলে ফু দিয়ে ওইটা মাথায় লাগাতে হবে। অবশ্যই অযূ অবস্থায় থাকতে হবে।
এই আয়াতের মাধ্যমে ব্রন, মুখের দাগ, আচিল, চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে
আমাদের শেষ কথাঃ চুল পড়ার কারণ কি - অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
চুল আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। চুল পড়তে শুরু করলে আমরা প্রত্যেকেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। যেকারণে চুলের যত্ন নেয়া জরুরী। চুল পড়ে গেলে তার প্রতিকার না করে প্রতিরোধ করতে পারলে সেটি বেশি উপযোগী হবে।
fasttechit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url